সজিবের ঘুম রাতে অদ্ভুত অশ্লীল শব্দে ভেঙ্গে যায়! ঘুম থেকে উঠে কান পেতে শব্দের উৎস ও তা কি ধরনের শব্দ বুঝতে চেষ্টা করলো। শব্দটা সে পর্ণ ভিডিওতে শুনেছে! অতি হর্নি হলে এমন শব্দ করে! কিন্তু গ্রামে এই গভীর রাতে এমন শব্দ কে করছে তা তার বোধগম্য হলো না। সে বিছানা থেকে উঠে শব্দের উৎস খুঁজতে বের হলো।
তাদের ছোট গ্রাম। বাড়িগুলো তার থেকেও ছোট। মাত্র কয়েকঘর লোকের বাস! তার ডান পাশের ঘরে থাকে কুদ্দুস ভাই আর তার বউ নুছিয়া বেগম! ডান পাশে হালিম ভাই আর নৈলা ভাবি! পিছনের ঘরে জন্টু ভাই! জন্টু একা মানুষ! কুষ্টিয়া থেকে উঠে এসেছে! জন্টু ভাইর সাথে হালিম ভাইর বউর ভেজায় ভাব! তবে কি শব্দ সেখান থেকে আসছে!!
সজিব নিঃশব্দে বিড়ালের মতো হেঁটে হেঁটে হালিম ভাইর ঘরের সামনে এসে টিনের ঘরের ফাঁক দিয়ে অভাবনীয় গ্রাম্য লীলা দেখলো! নৈলা ভাবি অদ্ভুত সুন্দরী আর জন্টু শালা সেই কালা। এমন একটা অবৈধ কাজ ভাবী কিভাবে করতো পারলো তা তার মাথায় আসে না। আর এই ভাদাইম্মার এত সাহস হলো কি করে তাও তার মাথায় আসে না।
সে দ্রুত গ্রামের আবাল, বৃদ্ধ, বনিতাদের একত্রিত করলো হালিম ভাইর বাসার সামনে! গ্রামের চেয়ারম্যান হুজুর টাইপের মানুষ! ছিঃ ছিঃ করে দরজায় লাথি মেরে ভিতরে ঢুকলো। হাতে নাতে ধরা পড়লো দুইজনই! চেয়ারম্যানের আবার চোট্ লাগিলো দিলে!কামের লোভ বড় লোভ! গ্রামের মাওলানাকে নিকটে ডেকে নিয়ে একটা মাছালা শিখিয়ে দিলো!
মাওলানা বললো "এদের কে এখন দোররা মারা হবে। একজনকে ২০ টা করে দোররা! নতুবা হালিম একে তালাক দিবে দিয়ে অন্যএকজনকে বিয়ে করতে হবে। বিয়ের দশদিন পর সেই লোক পুনরায় তালাক দিলে হালিম যদি চায় তাহলে তার সাথে নৈলার পুনবিবাহ দেয়া হবে। জন্টুকে ২০ দোররা এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হইলো।"
জন্টু বলিলো "মাওলানা সাব! বিয়েটা যদি আমিই করি?
মাওলানা বলিলো "খামোশ! বেত্তমিজ! তুই পাপ করেছিস! যীনার মতো পাপ! তুই জাহান্নামী! তুই দোররা খেয়ে জরিমানা দিয়ে এ গ্রাম থেকে বিদায় হবি!"
জন্টু চুপ করিয়া গেল! এমন মহা অন্যায় করিয়া ধরা খাইয়া আবার কথা বলা তার উচিৎ হচ্ছে না।
কিন্তু তার তো কোন দোষ নেই! দীর্ঘ নয় মাসের পরকীয়া প্রেম নৈলার সাথে জন্টুর!তাছাড়া চেয়ারম্যান সাহেব ও এ ব্যপারে তাকে উৎসাহ দিয়েছে! নৈলাই তো জোর করলো! তার স্বামী মদ গাঁঞ্জা খেয়ে রাস্তা ঘাটে পড়ে থাকে! মেয়ে মানুষের কথায় কান দেয়া উচিৎ হয় নাই!
এইদিকে হালিম ভাই চেঁচিয়ে উঠে বললো " এই মাগিকে আমি জবাই করবো! একে আমি আর দেখতে চাই না।"চেয়ারম্যান তাকে বলে " ব্যাটা তুই তো বদমাশ! রাত বিরাতে জোয়ান বউ রাইখা কই থাকোস! নিজের বউ শামলাইতে পারছ না! এখন মাওলানা যেটা বলে সেটা করবি! নয়তো নাকে খড় দিয়ে গ্রাম থেকে বিদায় হবি! হালিম মাথা নাড়িয়া শায় দিলো!
জন্টুর শাস্তি সম্পূর্ণ হইলো! তাকে গালে চুনকালি মাখিয়া মাথা ন্যাড়া করিয়া গলায় জুতার মালা পড়াইয়া এলাকা থেকে বিদায় করা হইলো! কিন্তু নৈলাকে কেউ বিয়ে করতে রাজি হয় না! এই নষ্টাকে দেখে সবাই ছিঃ ছিঃ করলো! গ্রামের বউয়েরা তাদের স্বামীও পুত্রদের নিয়ে সে স্থান ত্যাগ করিলো!
তবে বিবাহ করতে রাজি হইলো চেয়ারম্যান! চেয়ারম্যান বলিলো "গ্রামের চেয়ারম্যান হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব আছে! আমি একা মানুষ! তাছাড়া তুমি বিপদে পড়ছো! তোমাকে উদ্ধার করার জন্যই রাজি হইলাম! আমাকে দোষারপ করিতে যাইস না আবার!
হালিম আর কিছু বলিলো না! গ্রামের কর্তা যখন চায় তখন আর কি বা করার আছে! বিয়ের কাজ সম্পন্ন হইলো! সজিব সবকিছু দেখিয়া অবাক হইলো! সবকিছু যেন নাটকীয়ভাবে সম্পাদন হইলো! চেয়ারম্যান একি চাল চালিলো! সাপ ও মরলো লাঠিও ভাংলো নাহ্!
আট দিনের মাথায় হালিম ভাইর লাশ একটা গাছে ঝুলানো অবস্থায় পাওয়া গেল! সবাই ভাবলো বউয়ের দুঃখে হালিম আত্মহত্যা করছে! কিন্তু চেয়ারম্যান যে হালিমকে হত্যা করেছে সেটা বুঝার বাকী সজীব কিংবা নৈলার বুঝার বাকী রইলো নাহ্!!
"পৃথিবীর প্রথম পাপ নারী ঘটিত সমস্যা নিয়া! এবং পৃথিবী ধ্বংস ও হবে নারী ঘটিত সমস্যা দ্বারা। -মাওলানা এটা বলিয়া হালিমের জানাযা সম্পন্ন করিলো! "
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৫৪