somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রুপার কাছে লেখা প্রথম চিঠি!

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রুপা,
অনেক রাত হয়েছে। ঠিক বুঝতে পারছিনা কয়টা বাজে। অবশ্য সময় দেখার কোন যন্ত্র আমার কাছে নেই। থাকলে হয়ত বলতে পারতাম। পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে লিখছি। সবকিছু কেমন ধোঁয়াশে ধোঁয়াশে লাগছে। মনে হচ্ছে নেশার ঘোরের মধ্যে আছি। এখন নিশ্চয়ই রাগ করেছ এই ভেবে যে, রাতে কেন খাইনি? আসলে পকেটে একদম টাকা নেই। যা আছে তা এই চিঠিটা পোস্ট করতে
লাগবে বলে রেখে দিয়েছি।

আজ সন্ধা থেকে অনেকক্ষণ বাইরে তাকিয়ে ছিলাম। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল একটা জোনাকি দেখার, জোনাকির সাথে গল্প করার। কিন্তু কপাল আমার! এত বড় শহরে কোথাও একটা জোনাকি নেই। অথচ গ্রামে কি সুন্দর করে জোনাকিরা উড়ে বেড়ায়। তুমি কি কখনও জোনাকির সাথে গল্প করেছ? হয়ত করেছ বা করনি। আমার সাথে তোমার বিয়ে হলে আমি তোমাকে গ্রামে নিয়ে যাব। সেখানে গিয়ে দুজন সারারাত জোনাকির সাথে গল্প করব। আর একদিন জোৎস্না রাতে দুজন নৌকায় করে সমুদ্রের বুকে ভেসে বেড়াব। আচ্ছা নৌকায় কি মাঝি থাকবে নাকি আমি চালাব? তুমি যা বলবে তাই হবে।

গতকাল কি হয়েছে শোন, প্রতিদিনের মত ঘুমাতে যাবার পূর্বে, রুমের সব আলো নিভিয়ে একটা মোমবাতি জ্বালিয়েছি। উদ্দেশ্য মোমের নিভু আলোয় তোমার চাঁদমুখ খানার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা। কিন্তু বুকপকেটে হাত দিয়েই দেখি তোমার একমাত্র ছবিটা ওখানে নেই। কি করব বুঝে উঠতে পারছিলামনা। পুরা রুমটা তন্নতন্ন করে খুঁজলাম কিন্তু কিছুতেই কিছু হলনা। মন খারাপ করে কপালে হাত দিয়ে মেঝেতে বসে পরলাম। এর মধ্যে মনে পরল যে, লন্ড্রিতে দেয়া পাঞ্জাবির পকেটে তোমার ছবিটা। বিন্দুমাত্রদেরী না করে সেই রাতেই চলে গেলাম লন্ড্রির দোকানে। দোকানিকে সব খুলে বলার পর তিনি বললেন ছবিটা যেন আমি
পরে নেই। আমি বললাম এখনই লাগবে। শেষমেশ দোকানির সাথে ঝগড়া করে তোমার ছবিটা নিলাম। দোকানি আমার উপর খুব ক্ষেপে আছে। সে বলেছে আমি যেন আর তার দোকানে না যাই। অবশেষে যখন ছবিটা নিয়ে বাসায় ফিরলাম তখন মুয়াজ্জিন
ফজরের আজান দিয়ে দিয়েছে। মাঝেমাঝে ইচ্ছে হয় তোমার আর একটা ছবি চাইব। কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয় দুটো ছবি থাকলে
যেকোন একটার উপর আমার ভালবাসা কমে যাবে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ছবি আর চাইব না।

লিখতে লিখতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছিলাম বুঝতেই পারিনি। স্বপ্ন দেখে জেগে উঠে আবার লিখছি। অবশ্য স্বপ্ন না দুঃস্বপ্ন
দেখেছি। দেখলাম যে, দৈত্যের মত একটা লোক এসে আমাকে বলল আমি যেন তোমাকে ভুলে যাই। তুমি নাকি আমাকে ভুলে গেছ। আমি বিশ্বাস করিনি। কেননা আমি তো জানি যে তুমি আমায় কতখানি ভালবাস। আচ্ছা "ভালবাসি ভালবাসি" গানটা কি
আবার একটু শোনাবে? তোমার মনে আছে সেদিন তোমায় প্রশ্ন করেছিলাম, "একফোঁটা চোখের পানি সমান কত ফোঁটা রক্ত?"
প্রশ্নটা শুনে তুমি খুব রাগ করেছিলে। কিন্তু এই একই প্রশ্ন যদি তুমি আমাকে করতে তাহলে আমি কি উত্তর দিতাম জানো? উত্তর
দিতাম, "তোমার একফোঁটা চোখের পানি সমান আমার শরীরের সমস্ত রক্ত।" তোমার জানতে ইচ্ছে করেনা যে, আমি তোমায় কতটা
ভালবাসি? এমন প্রশ্ন কখনও করলে আমি এককথায় উত্তর দিয়েদেব। বলব, আকাশের বিশালত্বের হয়ত শেষ আছে কিন্তু আমার
ভালবাসার শেষ নেই।

আর একটা কথা, খুব বেশি ইচ্ছে করছে তোমার হাতে বানানো এককাপ চা খেতে। কখনও যদি এমন হয় যে, সকালবেলা ঘুম থেকে
উঠেই দেখব তুমি একটা নীল শাড়ি পরে হাতে এককাপ চা নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছ। আর তারপর দুজনে মিলে এককাপ চা
ভাগাভাগি করে........!!!
না! আর চিন্তা করতে পারছিনা। এসব চিন্তা করতে গেলেই হৃদযন্ত্র খানা অচল হয়ে পরে। আজ আর লিখতে পারছিনা। হাতটা অবশ হয়ে আসছে।
ভাল থেক।

ইতি,
তোমার....!!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দীপনের দীপ নেভে না

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯


ছবিঃ সংগৃহীত
আজকে সামুর অন্ধকার ব্লগার নামে খ্যাত ফয়সাল আরেফিন দীপনের মৃত্যু দিবস। ২০১৫ সালে আজকের এই দিনে জঙ্গি হামলায় দীপন মারা যান নিজ প্রকাশনীর কার্যালয়ে । যে ছেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×