আবুল বারাকাত স্যার।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন স্বনামধন্য শিক্ষক।তাঁর ৬০০টির বেশি গবেষণা কর্ম রয়েছে।তিনি ২৪টি গবেষণাগ্রন্থ, ১১৯টি জার্নাল প্রবন্ধ,২২১টি গবেষণা মনোগ্রাফ রচনা করেছেন এবং ২৩৪টি গবেষণাপত্র জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থাপন করেছেন।এটি আমার সৌভাগ্য যে,আমি তাঁর বিভাগের একজন ছাত্র।স্যারকে নিয়ে কয়েকটি অভিজ্ঞতার কথা বলি।
প্রথমত, ২০১০ সাল।বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি এক মাস হয়েছে।ফেব্রুয়ারি মাস;কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা করলাম ভাষার মাসে দেয়াল পত্রিকা বানাবো।কিছু অর্থ দরকার,গেলাম স্যারের কাছে।কিছু নবীন ছাত্রকে তিনি শুরুতেই হাসিমুখে সম্ভাষণ জানিয়ে আমাদের ভয় দূর করে দিলেন।অর্থের প্রয়োজন শোনার সাথে সাথে তিনি আমার নাম শুনে চেক লিখে দিলেন।
দ্বিতীয়ত,প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি।এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ যেমন বিতর্ক প্রতিযোগিতা,মঞ্চ নাটক,খেলাধুলা,বইমেলা,সেমিনার,শিল্পকর্ম প্রদর্শন সহ অনেক অনুষ্ঠানই বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন হতে দেখেছি।উক্ত কাজগুলির যতগুলোর পোস্টার দেখেছি তার অধিকাংশের সহযোগিতায় জনতা ব্যাংকের নাম দেখেছি।অনেক আয়োজকদের এটিও বলতে শুনেছি যে,উক্ত অনুষ্ঠান গুলির একটিও আয়োজন করা সম্ভব হতোনা জনতা ব্যাংকের অর্থায়ন ব্যাতিত।উল্লেখ্য এই সময়ে আবুল বারাকাত স্যার জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন।এই কাজগুলির প্রত্যেকটি সিএসআর অর্থাৎ সামাজিক দায়বদ্ধতা এর আওতায় পরে।
একটি ব্যাংকের মুনাফার শতকরা ১০ ভাগ সিএসআর এ খরচ করতে হয়।মাননীয় অর্থমন্ত্রী যিনি বিস্ময়করভাবে ইংরেজি সাহিত্য পড়ে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হয়েছেন,যিনি পাকিস্তান সরকারের একজন আমলা ছিলেন,বিশিষ্ট নারী প্রেমী ও কবি এরশাদের যিনি মন্ত্রী ছিলেন,যিনি বাংলিশ ভাষার একজন প্রসারকারী,যিনি পৃথিবীর মধ্যে সম্ভবত একমাত্র অর্থমন্ত্রী যিনি নিজে স্বীকার করেছেন- তিনি শেয়ার মার্কেট বোঝেন না,একটি নিম্ন আয়ের দেশের অর্থমন্ত্রী হয়ে যিনি ৮ হাজার কোটি টাকাকে সামান্য বলেন, তিনি সম্প্রতি জনতা ব্যাংকের সিএসআর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বাংলাদেশে ৫৬ টি ব্যাংকের মধ্যে অধিকাংশই সিএসআর নিয়মমাফিক খরচ করে না।জনতা ব্যাংক সৃজনশীল ক্ষেত্রে ও ডাচ বাংলা ব্যাংক ছাত্র বৃত্তির মাধ্যমে সেখানে একটি উজ্জ্বল ব্যাতিক্রম।
পুনশ্চঃ রাবিশ ও খবিশ বলা বাদ দিয়ে বিশ্রামে যান।আপনার চুলহীন মাথার বৃদ্ধ অর্থনৈতিক চিন্তাই দেশ আজ ক্লান্ত।