নিভৃতেই চলে গেলেন বাংলাদেশে অনুকরণীয় কিংবদন্তি বুদ্ধিজীবী এবং দার্শনিক সরদার ফজলুল করিম ।
১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে তার সাম্যবাদী বামপন্থী সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত থাকার পর্যায়ে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিগৃহীত হন। রাজবন্দি হিসেবে দীর্ঘ ১১ বৎসর বিভিন্ন পর্যায়ে কারাজীবন যাপন করেন। জেলে থাকা অবস্থাতেই ১৯৫৪ সনে তিনি পাকিস্তান সংবিধান সভার সদস্য হিসেবে কাজ করেন। পরে ১৯৬৩ থেকে '৭১ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি পাকিস্তান হানাদারবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হন। পরবর্তিতে তিনি আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদান শুরু করেন।
অনুবাদ রচনায় ছিলেন সিদ্ধহস্ত।অনুবাদ করে গেছেন দর্শনের অনেক মৌলিক গ্রন্থের।
অনুবাদ গ্রন্থঃ
প্লেটোর রিপাবলিক
প্লেটোর সংলাপ
এরিস্টোটল-এর পলিটিক্স
এঙ্গেলস্-এর এ্যান্টি ডুরিং
রুশোর- সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট
রুশোর- দি কনফেশনস
পাঠ-প্রসঙ্গ
এছাড়াও রচনা করেছেন অনেক মৌলিক সাহিত্য।
সাহিত্য গ্রন্থঃ
চল্লিশের দশকে ঢাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক
রুমীর আম্মা
নানা কথা
নানা কথার পরের কথা
নূহের কিশতী ও অন্যান্য প্রবন্ধ
গল্পের গল্প
বাংলায় দর্শনের অভিধান তৈরি করে দর্শন শিক্ষাকে সহজ করে গিয়েছেন বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য।
অন্যান্য রচনাঃ
দর্শনকোষ
শহীদ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা স্মারকগ্রন্থ
সেই সে কাল
সরদার ফজলুল করিম নানা অর্থেই এক অসামান্য চরিত্র। রাজনীতি করেছেন আদর্শের, আজীবন মগ্ন ছিলেন জ্ঞানের সাধনায়। তারও চেয়ে বড় কথা, তাঁর চিন্তা আর জীবনযাপন ছিল একই সুতোয় গাঁথা।
বাংলা ভাষা,বাংলা সাহিত্য সর্বোপরি সমগ্র বাঙালি স্মরণ করবে এ মহান মনীষীকে তাঁর জীবন ও কর্মের জন্য।