মেসি-রোনালদোরা তো বিশ্বকাপ মাতাবেনই,তবে এদের বাইরে দলের হয়ে নীরবে ভূমিকা রেখে যাবেন আরও কিছু মাঝমাঠের ফুটবল শিল্পীরা।এদের প্রত্যেকের সাধারণ বৈশিষ্ট্যটি হচ্ছে এরা পরিশ্রমী।আসুন জানা যাক এরকম ১০ ফুটবলারের ফুটবল ইতিহাস।
১-স্টিভেন জেরাডঃ ইংল্যান্ডের এ ফুটবলার লিভারপুলের হয়ে খেলছেন ১৫ বছর ধরে।গোল করার চেয়ে বানিয়ে দিতেই বেশি পছন্দ করেন।২০০৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এসি মিলানের সাথে ৭৫ মিনিট পর্যন্ত ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও অবিশ্বাস্যভাবে জিতিয়েছেন লিভারপুলকে।সর্বোপরি ফর্মের তুঙ্গে থাকা ৮নাম্বার জার্সি পরা এ খেলোয়াড় এবার ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ভরসা।
২-থমাস মুলারঃ জার্মানির ১৩ নাম্বার জার্সি পরা এ ফুটবলার বায়ার্ন মিউনিখের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।খেলতে পারেন মাঝমাঠ,আক্রমনভাগ,উইং যে কোন পজিশনে।৫ গোল ও ৩ টি আসিস্ট করে জিতেছেন ২০১০ বিশ্বকাপের সেরা গোলদাতা ও সেরা তরুণ প্লেয়ারের পুরস্কার।অদম্য জার্মানির বিশ্বকাপ মিশনের অন্যতম সারথি এ প্রতিভাবান ও পরিশ্রমী খেলোয়াড়।
৩-ইয়াইয়া তোরেঃ আইভরি কোস্টের মাঝমাঠের এ খেলোয়াড় ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এ বছর জিতেছেন লিগ শিরোপা। ২০০৯ শালে বার্সেলোনার ৬ শিরোপা জয়ী ড্রিম টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন।অসম্ভব দ্রুতগতি,নিখুঁত পাস ও শারীরিক সক্ষমতার জন্য আফ্রিকানদের সবচেয়ে বড় ভরসা তিনি।
৪-ডি মারিয়াঃ আর্জেন্টিনার এই মাঝমাঠের খেলোয়াড় রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের অন্যতম কারিগর।ছিপছিপে গড়নের এই ফুটবলার খেলতে পারেন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার অথবা উইঙ্গার হিসেবে।দৃষ্টিনন্দন ড্রিবলিং ও ফাইনাল পাস দিয়ে প্রতিপক্ষের সীমানায় ত্রাস ছড়াতে জুড়ি নেই এ পরিশ্রমী ফুটবলারের।
৫-এডিন জেকোঃ"The Bosnian Diamond" খ্যাত এ স্ট্রাইকার খেলছেন ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে।বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে করেছেন ১০ গোল।বসনিয়ার ইতিহাসে সর্বাধিক গোল করা এ ফুটবলার পরপর তিন বছর ধরে নির্বাচিত হয়েছেন সে দেশের বর্ষসেরা খেলোয়াড় হিসেবে।জার্মান ক্লাব Wolfsburg কে বুন্দেস লিগা জিতিয়েছেন ২০০৮ সালে।ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা এ গোল স্কোরার নিজের দিনে বড় প্রতিপক্ষের মাথা ব্যাথার কারণ হবেন নিশ্চিতভাবে।
৬-হাল্কঃ নামের সাথে শরীরের দারুণ মিল এ ব্রাজিল উইঙ্গারের।বর্তমানে খেলছেন Zenit Saint Petersburg এর হয়ে।পর্তুগিজ ক্লাব Porto কে জিতিয়েছেন ইউরোপা কাপ সহ মোট ১০ টি শিরোপা। পরিশ্রমী এ ফুটবলার ভূমিকা রেখেছেন গেল বছর ব্রাজিলের কনফেডারেশন কাপ জয়ে।স্কলারির অন্যতম এ অস্ত্র বিশ্বকাপে সেরা উইঙ্গার হতে পারেন।
৭- ভিনসেন্ট কোম্পানিঃ বেলজিয়াম ও ম্যানচেস্টার সিটির এ ফুটবলারকে বর্তমানে অন্যতম সেরা সেন্টার ডিফেন্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।সিটির বৈপ্লবিক উত্থানের অন্যতম এ কারিগর সিটিকে জিতিয়েছেন ২ টি লিগ শিরোপা।এডেন হাজারডকে নিয়ে বেলজিয়ামকে পরিণত করেছেন বিশ্বকাপের Dark Horse রূপে।
৮-লুকা মোডরিচঃ ক্রোয়েশিয়ার এ ফুটবলার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী রিয়াল মাদ্রিদের অন্যতম প্রাণভোমরা।খেলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে।রিয়ালে আসার পূর্বে খেলেছেন টটেনহাম হটস্পারে দাপটের সাথে।তার পূর্বে Dinamo Zagreb কে জিতিয়েছেন পরপর তিনটি লিগ শিরোপা।নিতে পারেন অসম্ভব জোরালো শট।কর্নার কিক ও ফ্রি কিকেও আছে দক্ষতা।তাই ব্রাজিল বিশ্বকাপ তাকিয়ে আছে এ মিডফিল্ডারের ফুটবল শৈলী দেখার জন্য।
৯-আরিয়েন রবেনঃ ডাচ অভিজ্ঞ এ উইঙ্গার মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বর্তমানে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে।ড্রিবলিং,দ্রুত গতি,বুলেট গতির জোরালো শট,নিখুঁত পাস এ উইঙ্গারকে করেছে অনন্য। খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ ও চেলসির মত বড় ক্লাবে।ফর্মে থাকলে তাকে আটকানো যেকোনো দলের জন্য অসম্ভব হয়ে পরবে।তাই ব্রাজিল তাকিয়ে আছে এ মহান ফুটবলারের শেষ ঝলকানি দেখার জন্য।
১০-ডিয়েগো কস্তাঃ ছোটখাটো টিম নিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এবার যা করলো তার অন্যতম কারণ এ স্ট্রাইকার।ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত এ ফুটবলার এবারের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট পেয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।অসম্ভব সুযোগ সন্ধানী ও পরিশ্রমী এ স্ট্রাইকারকে সামলাতে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের ভীষণ বেগ পেতে হবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।