বইয়ের নাম:কাচের দেওয়াল
লেখক:সুচিত্রা ভট্টাচার্য
প্রকাশনী:আনন্দ
মূল্য:১২৫ টাকা(মূদ্রিত)
প্রথম মূদ্রন:১ বৈশাখ ১৪০০
প্রচ্ছদ:অনুপ রায়
রিভিউ:বইটা একটা মেয়ের জীবন কাহিনী নিয়ে।মেয়েটা সবে মাত্র ১৮ তে পা দিয়েছে।অথাৎ এখন সে এডাল্ট।মেয়েয়ার নাম বৃষ্টি।বৃষ্টির পরিবারে,রয়েছে,মা,তার ভালোমামা আর সুধা,সুধা কাজের লোক।এখানে একটা কাহিনী হচ্ছে তার বাবা নেই।নেই মানে তার বাবা তার আর এক বউকে নিয়ে থাকে, বৃষ্টির মা হচ্ছে বিখ্যাত আর্টিস্ট জয়া রায়,জয়ার সাথে তার বাবা'র গন্ডগোল এর কারনে ছাড়াছাড়ি অবস্থ্যা।তবে মামলাতে জয়া জিতে যাওয়ার কারনে বৃষ্টি তার মায়ের কাছেই থাকে।কেন যে জয়া আর সুবীর(বৃষ্টির বাবা)আলাদা হলো তা বলা নেই।শুধু উভিয়পক্ষেরই দোষ দেখিয়েছেন সুচিত্রা ভট্টাচার্য। সুবীরের অপরপক্ষে একটা ছোট্ট ছেলে আছে নাম, রাজা।এমন অবস্থ্যাও সুবীর তার মেয়ের সাথে যোগাযোগ রেখেছে ঠিক।তার অপরপক্ষের বউ বৃষ্টিকে পছন্দ না করলেও যত্নের ত্রুটি রাখে না।সব ঠিকই চলছিলো...হঠাৎ সেই পুচকে বৃষ্টি যে সারাক্ষন মায়ের আচল ধরে বসে থাকত,যে তার ভালোমামার সাথে রোজ পড়ন্ত বিকাল দেখত,সেই বৃষ্টি ১৮ তে পা দিয়েছে।আর এটাই যত নস্টের মূল!একজন ১৮ বছরের এডাল্ট মেয়ে যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে এটাই ফুটিয়ে তুলেছেন সুচিত্রা ভট্টাচার্য। মদ,সিগারেট, বন্ধুবান্ধব,মা-বাবার মুখে তর্ক,বড়দের, ছোটদের অবজ্ঞা সব,সব ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।সেই এডাল্ট বৃষ্টি ১৮ তে পা দিয়েই মাতবে এক খেলায় যে খেলায় সে মা কে মানবে না, বাবাকে যাচাই করবে।এটাই তার খেলা!একরোখা খেলা।কিন্তু এই খেলা খেলতে গিয়েই বৃষ্টি যে তার কতবড় ক্ষতি করে ফেলছে তা সে নিজেও জানে না।পাঠক যখন একজন স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে যখন সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয় তখন,লেখক, হয় মেয়ের না হয় ছেলের পক্ষ নিয়ে লিখে, গ্রন্থ টাকে আরো কস্টকর তোলে।কিন্তু সুচিত্রা ভট্টাচার্যের এই 'কাচের দেওয়াল'বইটাতে তিনি তুলেছেন এক ভিন্ন রূপ।দুটো বিচ্ছেদের মধ্যে একটা ছেলে বা মেয়ে কত প্রেসারে থাকে,অযত্নে থাকে,এবং এই অযত্ন থেকেই একদিন সে হয় নেশাগ্রস্থ,সেটাই তুলে ধরেছেন,তিনি।
এবার আসি লেখক প্রসঙ্গে, সুচিত্রা ভট্টাচার্যের বই আমি এই প্রথম পড়লাম,এবং পড়েও আমি মুগ্ধ,যতক্ষন পড়েছি ততক্ষনই একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।বইটা শেষ করার সাথে সাথে এটাও বুঝতে পারলাম, সুচিত্রা ভট্টাচার্যের যেমন ইংলিশে জ্ঞান আছে তেমনই আছে খেলা, রাজনীতিতে।মোটকথা ভালোই লেগেছে আমার।এই লেখকের আরও বই পড়ার ইচ্ছা আছে।
এবার আসি বই সম্পর্কে।বইটার প্রচ্ছদটা সত্যিই আসাধারন।আর আনন্দ প্রকাশনীর বাধাইয়ের কাজটা আমার চমৎকার লাগে।আমাদের দেশের বাতিরঘর আর আদি প্রকাশনীর বাধায়ের কাজও ভালো লাগে।বইটা পেপারব্যাক হার্ডকভার।
আমার রেটিং:আমি ৫ এর মধ্যে ৪.৫ দিবো।সত্যিই আমার কাছে দারুনই লেগেছে বইটা।
পড়ার আমন্ত্রন রইলো।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮