নিজামীরা বাংলার আগাছা-পরগাছা মাত্র! এগুলো একেবারে শিকড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলতে হবে।
আচার্যবাঙ্গালী
একাত্তরের আরেক যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল। একাত্তরে এই যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপশক্তি পাকিস্তান নামক একটি শয়তানরাষ্ট্রের পক্ষ নিয়ে যারপরনাই অপরাধ সংঘটিত করেছে। সেদিন, এদের মধ্যে সামান্যতম কোনো মানবতাবোধ ছিল না। দেশের খেয়ে-পরে তারা সেদিন দেশ, জাতি ও মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলো—এক সীমাহীন ধৃষ্টতায়! এদের পাপের শেষ নাই। এরা পাপকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পৃথিবীর বুকে এমন কোনো অপকর্ম নাই যা তারা করেনি। আর এখনও তাদের অপকর্ম থেমে নেই।
পাপ বাপকে ছাড়ে না। এই মহাবাণী বাংলার বুকে আরেকবার প্রমাণিত হলো। বাংলা এবার কিছুটা হলেও কলংকমুক্ত হবে। বাংলাদেশের অপরাজনীতির ইতিহাসে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান একটি কলংকিত নাম। ১৯৭১ সালে, তারা সজ্ঞানে পাকিস্তানের পদলেহন করে নিজেরা সফল হতে চেয়েছিলো। কিন্তু বাংলার মানুষ তাদের সেই অপবিত্র আশা কখনও সফল হতে দেয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মার খেয়ে তারা পায়খানা-প্রস্রাব করে ফেলেছিলো। আর পরাজিত হয়ে একটা সময় তারা আত্মগোপনও করেছিলো। কিন্তু ১৯৭৫ সালে, দেশে নৃশংসভাবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুবাদে একজন মেজর জিয়া নিজেকে দেশের ভাগ্যবিধাতা হিসাবে প্রচার করতে থাকে। আর সে হয়ে ওঠে বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর রাজাকারদের পিতা। সেই পিতার আশ্রয়ে-প্রশ্রয়েই নিজামীরা এতোকাল পর্যন্ত আমাদের জ্বালিয়ে খেয়েছে। আর হত্যা করেছে আমাদের সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবীদের পর্যন্ত।
রাজাকারদের সুপ্রীম-কমান্ডার গোলাম আযমের পরেই যার পজিশন ছিল—সে এই নিজামী। এরা কোনো রাজনীতিবিদ নয়। আর রাজনীতি করার মতো এদের কোনো বুদ্ধি-বিবেক বলতে কিছু নাই। এরা শুধু মুখে-মুখে নিজেদের স্বার্থে পবিত্র ইসলামধর্মকে তাদের রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করেছে। এদেশের একশ্রেণীর মুর্খের কাছে এখনও এরা বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ! নিজামীরা কোনো আলেম নয়। আর কোনো শিক্ষিত মানুষও নয়। এদের দেহটা শুধু বাংলাদেশে থাকে। কিন্তু এদের মনপ্রাণ পড়ে থাকে পাকিস্তানে! এরা বাংলাদেশের চিহ্নিত আগাছা-পরগাছা। এগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিকড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। আর ৩০লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীন রাষ্ট্রটিকে সম্পূর্ণভাবে আগাছামুক্ত করতে হবে।
বিনয়াবনত
আচার্যবাঙ্গালী
ঢাকা।