প্রথমেই প্রশ্ন : ৩,৪৫০/=টাকার পাসপোর্ট ৬,০০০/=টাকা এবং ৬,৯০০/=টাকার পাসপোর্ট ১০,০০০/= টাকা কেন? অবশ্য এ প্রশ্ন কাকে করছি? কেন করছি এই প্রশ্ন? তারা উত্তর দেয়ার কে? যেহেতু ভুক্তভোগী তাই অন্যজনকে হয়রানি সম্পর্কে সচেতন করতেই এই লিখা।
একটা সাধারণ পাসপোর্ট ফী হচ্ছে: ৩,০০০/= এবং ভ্যাট ৪৫০/=
জরুরী পাসপোর্ট ফী হচ্ছে ৬,০০০/= এবং ভ্যাট ৯০০/=
বাকী টাকা কোথায় যায়? দালাল, পুলিশ এবং পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের পকেটে।
পাসপোর্ট সময়ের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। হতে পারে অনেকের কাছে এটা কম গুরুত্বপূর্ণ। একটি পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য নাগরিক জীবনে কত ভোগান্তি পোহাতে হয় তা ভুক্তভোগী মাত্রেই জানা। আপনি যতই ডিজিটালাইজড হন না কেন? ইচ্ছে করলে অনলাইনে ফরমপূরণ করে সোনালী ব্যাংকে নির্ধারিত টাকা জমা দিয়ে সকল শর্ত পূরণ করে জমা দিতে যাবেন পদে পদে সমস্যা। পারবেন না জমা দিতে। একদল পুলিশ আছে, ফরম পূরণ করা ফাইলটি দেখেই বলবেন এখানে এখানে ভুল আছে। ঠিক করে নিয়ে আসেন। পরদিন ঠিক করে নিয়ে গেলেন, আবার বলবেন হয়নি, যান আবার ঠিক করতে হবে। এভাবেই চলতে থাকবে। আপনি এত টাকা দিবেন, আমি ঠিক করে দিচ্ছি। না হলে অমুকের কাছে যান। অগত্যা কী আর করা? দালাল বলবে আরো ৩,০০০/= দিতে হবে। এবার আপনি কী করবেন? নিরূপায় জনাব, দিয়ে দিন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে জমা দিলেন, আর মনে মনে ভাবলেন নির্ধারিত সময়ে পেয়ে যাবেন? জী না। জমা দেয়ার পর স্লিপের পিছনে কী লিখা থাকে একটু দেখবেন।
৪টি কথা আছে এখানে-
২ নং হলো “অনুকুল পুলিশ রিপোর্ট পাওয়া সাপেক্ষে পাসপোর্ট প্রধান করা হবে।”
এক্ষত্রে প্রথমে পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার ফাইলটি প্রথমে জেলা পুলিশ অফিসে যায়, সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় যায়। যেকান এক স্থান থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আপনাকে ফোন দিল বা অনেক সময় বাড়ি গিয়ে হাজির। অবস্থা বুঝে পুলিশ বলে চায়ের টাকা। অনেক সময় ফোন করে বলে বিকাশ করে দিন ১,০০০/=। অনেক সময় আরো বেশি দাবী করতে পারে, আপনার দূর্বলতা দেখে। যদি টাকা দেয়া না হয় ফাইল থানায় পড়ে থাকে। ২২ দিনের পাসপোর্ট পেতে কত দিন বা কত মাস লাগবে বা আদৌ টাকা না দিলে পাসপোর্ট পায় না। এই হচ্ছে সংক্ষিপ্ত ভোগান্তি চিত্র।
পাসপোর্ট অফিসের সামনে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো দালাল থেকে সাবধান বা থানার দরজায় লেখা থাকে দালাল মুক্ত থানা। “কাজী গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই।” আপনি দালাল ছাড়া পাসপোর্ট জমা দিতে পারবেন? স্বপ্নে হয়তোবা। নীতিমালা পড়ে আছে সাইনবোর্ডে-পুলিশ, পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় মাস্তান, দালালদের কারণে একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা গুনতে হচ্ছে। এটা ওপেন সিক্রেট।
কবে অবসান হবে এই ভোগান্তি এবং ঘুষ-দুর্নীতির প্রকাশ্য রমরমা বাণিজ্য?
+@+@+
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৮