প্রশ্নটা কেন যেন অসম্পূর্ণ হয়ে গেল। কেন অসম্পূর্ণ সেটা শেষেই বলি
ছাত্র নাকি বিএনপি-জামায়াত জোট নাকি বিদেশী কোন শক্তির ? সাধারণত এখন এভাবেই কথা উঠছে। কেউ বলছে ছাত্ররা এই বিজয় এনেছে, কেউ বলছে বিএনপি-জামায়াত জোট এটার বড় দাবীদার আবার কেউ বলছে বিদেশী কোন শক্তির খেলা এটা।
কিন্তু আমার তো মনে হয় বিদেশি শক্তির বিষয়টা বাদে এখানে অনেক স্টেকহোল্ডার আছে। অনেকের অনেক কন্ট্রিবিউশন আছে। এখন যদি কেউ নিজে একক ভাবে এটার ক্রেডিট নিতে চায় তাহলে তো সেই একই দিকে যাবে বাংলাদেশ। ৭১ এ স্বাধীনের পরে যেমন শুধু একজনকে মাথায় করে নাচতে গিয়ে বাকিদের অবদান গৌণ করা হয়েছে। আবার একটি দল স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি হিসেবে দাবী করে বাকিদেরকে স্বাধীনতা বিরোধী ট্যাগ লাগিয়েছে। এখানেও যদি তেমন কিছু হয় তাহলে তো স্বার্থের সংঘাত বেঁধে এই স্বাধীনিতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।
আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে, এর পরে ধীরে ধীরে সেটা স্বৈরাচার সরকার পতনের ১ দফা দাবিতে রূপ নেই। এরপর ৫ ই আগস্ট সেই ঐতিহাসিক দিনটি আসে। এই যে জার্নিটা এখানে কি ছাত্ররা একাই সব কিছু করেছে ? মোটেই না। এতবড় অর্জন এসেছে কয়েকটি স্টেকহোল্ডারের কারণে।
ছাত্ররা ছিল এটার মাস্টারমাইন্ড এবং মূল নেতৃত্বে। তাদেরকে জনবল দিয়ে গেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। আর একটা আন্দোলনের সফলতার জন্য যে গ্রাউন্ডস তৈরী করতে হয় সেটা করে গেছেন দেশপ্রেমিক অনলাইন এক্টিভিটিস্টরা।
সাধারণ মানুষ, যারা কোনো রাজনীতিতে জড়িত নাই, তারা কেন ফুঁসে উঠেছিল জানেন? কারণ তারা সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম দেখতে দেখতে বিরক্ত ছিল। আর এই অপকর্মগুলো কারা তুলে ধরেছিলো?
বাংলাদেশের মিডিয়া? মোটেও না।
অপকর্মগুলো তুলে ধরেছিলো ঐ সকল অনলাইন এক্টিভিস্টরা।
আপনি কোনভাবেই কি পিনাকী ভট্টাচার্য, মুশফিকুল ফজল আনসারী,জুলকারনাইন সায়ের সামি, ইলিয়াস হোসাইন, ড. কনক সরোয়ার, ফাহাম আব্দুস সালাম, তাসনিম খলিল, সাহেদ আলম, মনির হায়দার,ফ্রিল্যান্সার রাসেল আহমেদ এদের অবদান অস্বীকার করতে পারবেন ?
এরাই তো দিনের পর দিন জনগণকে সত্যটা জানিয়ে গেছে।
দেশে বসেও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহাবুব কবির মিলন, ছোট-বড় ফ্রিল্যান্সাররা যারা এই আন্দোলনের সময় অনলাইনে সরব ছিল আপনি কি কোনভাবেই তাদের অবদানকে অস্বীকার করতে পারবেন?
একটু ভেবে দেখুন তো:
-বিএনপি-জামায়াত জোট যদি তাদের নিজেদের ব্যানারে এভাবে সরকার পতনের আন্দোলনে নামতো তাহলে কি হতো। স্বৈরাচার মামলা-হামলা দিয়ে থামিয়ে দিতো।
-যদি শুধু ছাত্ররা এভাবে সরকার পতনের আন্দোলনে নামতো, জনবল না পাইলে এভাবে কি মাঠে টিকে থাকতে পারতো? ৫ই আগস্ট যারা ঢাকার দিকে রওনা দিয়েছিলো তারা কি শুধুই ছাত্র বা সাধারণ জনতা ছিল? আমার মনে হয় এখানে ম্যাক্সিমামই বিএনপি-জামায়াতের মানুষ ছিল।
-যেখানে মিডিয়াগুলো বাতাবি লেবুর চাষ নিয়ে ব্যস্ত সেখানে, আপনাকে সত্যটা কে জানিয়ে গেছে ? কে আপনাকে আসার আলো দেখিয়ে মোটিভেট করেছে? কারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনাদেরকে নিউজ সাপ্লাই দিয়ে গেছে। ঐ অনলাইন এক্টিভিস্টরাই। সাথে PUSAB এর মত পেজগুলো।
তাহলে এখন কেন এমন কথা আসবে, অমুক স্বৈরাচার হটিয়েছে? বা এখন কেন সব স্টেকহোল্ডারদের কথা শোনা হবে না।
দেশটা আগের চেয়ে অনেক ভালো চলতেছে আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমি চাই আরো ভালো চলুক। সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যাক আমাদের বাংলাদেশ।
ও হ্যা প্রথমে যে অসম্পূর্ন প্রশ্নটা করেছিলাম সেটা এমন হলে বেটার হতো-
প্রশ্নঃ স্বৈরাচার পতনে কাদের অবদান বেশী ?
উত্তরঃ চব্বিশের যুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের অবদান বেশী।
[বাকী অবদানটুকু আন্দোলনের সকল স্টেকহোল্ডারদের সমান]
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭