১) আচ্ছা যারা নূন্যতম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানে বা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়েছে তারা কেউ কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অস্বীকার করার মত। কিন্তু কেন এখন বাংলাদেশের একটা বিশাল জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে সহ্য করতে পারে না বা তাকে ব্যাঙ্গ করে? এমন তো হবার কথা ছিলো না, তাই না ? এখন অনেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নাম বলার আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি সম্মানের সাথে ব্যবহার করে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম বলার সময় সেই সম্মানের ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। এটা কি আসলেই হবার কথা ?
-আমার উত্তর হচ্ছে ,না এটা হবার কথা না।
-তাহলে কেন হলো ?
উত্তর : ঐযে আগেই বলেছি একটা বিশাল জনগোষ্ঠী সহ্য করতে পারে না ,তার মানে বাকি যে আর একটা বিশাল জনগোষ্ঠী আছে তারা উনাকে মাথায় তুলে রাখে ,এবং শুধু মাথায় তুলেই রাখে না উনার নাম ভাঙিয়ে বহুত অপকর্ম করে। সমস্যাটা হয়েছে এখানে। দ্বিতীয় বিশাল জনগোষ্ঠীটা বঙ্গবন্ধুকে এই বঙ্গের সবার "বন্ধু" হতে না দিয়ে শুধু ঐ জনগোষ্ঠীরই "বন্ধু" করে রাখলেন। এবং এটার জন্য একমাত্র দায়ী ঐ দ্বিতীয় জনগোষ্ঠীটাই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন নোংরা রাজনীতি করেছে যে, এখন অনেকেই বঙ্গবন্ধুকে সম্মান পর্যন্ত দেখাতে চান না। এর জন্য বঙ্গবন্ধুর আশেপাশের মানুষজনও সমান ভাবেই দায়ী , তারা বঙ্গবন্ধুকে একটা পরিবারে বা একটা দলে আটকে রেখেছেন।
আপনি যখন দেখছেন এই রাজনীতির মাঠে কাদা ছোড়াছুড়ি হয়, তাহলে কেন সেই কাদার মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসলেন ,কেন উনাকে সাইনবোর্ড বানিয়ে রাজনীতি করতে গেলেন ? স্বাভাবিক ভাবেই আপনার রাজনৈতিক দর্শনের সাথে যাদের দর্শন মিলবে না তারা আপনার সব কিছুই খারাপ প্রমান করার চেষ্টা করবে ,এবং সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুও বাদ যায় নি ,কারণ আপনারা জনগণকে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন আপনারাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেন,কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে অনেক অমিল বা অপকর্ম পরিলক্ষিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকে যদি রাজনীতির বাইরে রাখতেন ,তাহলে আজ হয়তো ১৫ আগস্ট বা ১৭ মার্চ শুধু ঐ জনগোষ্ঠীই ফুল নিয়ে যেত না ,অন্য জনগোষ্ঠীটাও যেত, আজ হয়তো বিশাল জনগোষ্ঠী নামাজের শেষে দোয়ায় বসে জেতেন ,জোর করে কাউকে শিখিয়ে দেওয়া লাগতো না ,নামাজের শেষে বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া কইরেন একটু।
২) ঠিক একই ভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে ঘৃণার পাত্র বানিয়ে ফেলছেন মুক্তিযোদ্ধার রিলেটিভ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের তথাকথিত ধারক-বাহকরাই। ভোটব্যাংকের জন্য উপমহাদেশের রাজনীতিতে সবই সম্ভব, তাই বলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিয়েও?
এদেশের সাধারণ জনগণ কখনোই মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অসম্মান করে নাই, কিন্তু এই সুবিধাবাদী কিছু মানুষের কারণে আজকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা হাস্যকর পাত্রে পরিণত হচ্ছে।
যারা ৭১ এ যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন আমার মনে হয় তারা যোদ্ধাদের সাথে কোনো চুক্তি করে নাই , তোমরা এই সুবিধা পাবা বা ঐটা পাবা। এর পরেও বীর যোদ্ধাদের সম্মানার্থে অনেক কিছুই দিয়েছে এদেশের সরকার। তবে এটা কখনোই প্রতিদান হতে পারে না।, কারণ তাদের ঋণ শোধ হবার নয়।
কিন্তু এই সুবিধাবাদী কিছু মানুষ এটার প্রতিদান চাইছেন। শুধু তাই না , এই সুবিধাবাদীগুলো মুক্তিযুদ্ধের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। ইভেন এমনও হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ঝাল মিটিয়েছে থানা-অফিস-আদালতে সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে। এর পরেও সবাই মুখ বুজে সেটা সহ্য করেছে।
সবচেয়ে বড় কথা, যে কোটা নিয়ে এত আলোচনা সেই কোটা টেম্পোরারিভাবে তাদেরকে দিয়েছিলো ৭২ এ , সেটাই এখন নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে নিতে চাচ্ছে।
একটা সময়ে হয়তো "বীরমুক্তিযোদ্ধার পরিবার" শুনলে অনেকেই নেগেটিভ চোখে দেখবে। এটার জন্য দায়ী হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধার রিলেটিভ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের তথাকথিত ধারক-বাহকরাই। তারা এত কচলান কচলাইতাছে এক সময় হয়তো তিতা হয়ে যাইতে পারে, যেমন বঙ্গবন্ধুকে এরা বিশাল একটা জনগোষ্ঠীর কাছে তিতা বানিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯