সদ্য বিদায়ী শিক্ষা মন্ত্রী নাহিদ স্যারের বাসায় বসে আছি।
নব্য গঠিত হওয়া মন্ত্রীসভা থেকে স্যারের আকস্মিক অপসারণের কারনে স্বভাবতই উনার উনার মন খারাপ।আমি উনার একজন প্রিয় পাত্র।সেইসাথে দুর্দিনের সাথীও বলা যেতে পারে। স্যারের এমন দুর্দিনে তাকে একটু সহানুভূতি জানাতে আসবনা তা কিভাবে হয়! ক্লাস শেষ করে বাসায় না গিয়ে সোজা স্যারের বাসায় চলে এসেছি আর এসেই সেই কখন থেকে বসে আছি।আমার মতো অনেকেই আজ দেখা করতে এসেছে।সবাই ই সহানুভূতি জানাচ্ছে। আধ ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পর আমার ডাক এলো। স্যারের ঘরে ঢুকেই সালাম দিলাম। -আসসালামু আলাইকুম স্যার।
-ওয়া আলাইকুম......
-ভালো আছেন? -সরি স্যার। আসলে আমার ও মন টা খারাপ জানেন। এভাবে বিনা নোটিশে...
-কি বলতে চাও?
-না মানে স্যার!! আপনি এত বছর একটা জায়গাই সার্ভিস দিলেন। অথচ অপসারণের সময় কিছু না বলে হুট করে এভাবে সরিয়ে দিলো।৩ ঘন্টা পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগেও তো স্যার ঘন্টা বাজায়ে সতর্ক করে দেই। কত কিছু নতুন ভাবে চালু করলেন অথচ এই জিনিস টা চালু করতে পারলেন না।
-স্যার রাগে গজগজ করতে বললেন “ওটা আমার মন্ত্রণালয়ের বাইরে”।
-তাও অবশ্য ঠিক স্যার। তবে স্যার... ঠিক এমন সময় আকাশ বাতাস কাপিয়া তুলিয়া আমার ফোন ভেজে উঠলো।
(আমিতো ভালা না ভালা লইয়াই....) দ্রুত ফোনটা কেটে দিলাম।
এটা নিশ্চিত হাসিবের কাজ। ফাইজলামি করে এই রিংটোন সেইভ করে রেখেছে কখন যেনো। ফোন কেটে দিয়েই স্যারের দিকে তাকালাম। চোখ দুটো বিশাল মার্বেলের ন্যায় বড় করে আগুনে দৃষ্টিতে করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ে জড়সড় হয়ে শুকনো গলায় ঢুক গিলে আবার ও বলা শুরু করলাম।
যেটা বলতে ছিলাম স্যার! ছাত্র সমাজ কিন্তু আপনাকে ভালোবাসে। ওরা ইতোমধ্যেই আপনার অপসারণের প্রতিবাদে ইভেন্ট খুলেছে। সেই ইভেন্টে হাজার হাজার মানুষ আপনার অপসারণের প্রতিবাদে সম্মতি জানাচ্ছে। কিছু একটা হবে স্যার।
-কচু হবে! আমার অপসারণে খুশি হয়ে কতগুলা মিলাদ ইভেন্ট ও যে চালু করেছে সেগুলার খোজ আমি রাখিনা মনে করেছ?
সব খবর রাখি আমি।এরা আমাকে চিনলনা।
-চিন্তা করবেন না স্যার। নতুন শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছে যে এইসব ইভেন্টের ব্যাপারে একটা তদন্ত করা হবে।
-আর তদন্ত.!
-তবে স্যার যাই বলেন! এদেশের ছাত্র সমাজ কিন্তু আপনাকে মনে রাখবে। বিগত দশ বছরে দেশের ছাত্র সমাজকে আপনি যা দিয়েছেন তাতে আপনি তাদের কাছে চীর স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আপনার কাজ আপনাকে বাচিয়ে রাখবে। এরকম সময়েও আমার মুখে এমন প্রশংসা শুনে স্যারের মুখ চওড়া হয়ে গেলো। অত্যধিক খুশিতে স্যার নিজেই আমার পিঠ চাপড়ে দিলেন।
-স্যার?
-বলো
-আগে তো শুধু ছুটে বেড়িয়েছেন এখান থেকে ওখানে। এখন তো মন্ত্রীত্ব নেই। কাজ কাম কম। অবসর সময় কি করবেন স্যার?
-বড় নাতির সামনে এস এস সি পরীক্ষা। ২.২০ মিনিটে ৭ টা সৃজনশীল। আপতত মাথায় ৭ টা সৃজনশীল এর চিন্তা। নাতিকে গোল্ডেন পাওয়াতে হবে। ওকে পড়াবো।
(বিঃদ্রঃসম্পূর্ণ লেখাটি কাল্পনিক।এ লেখার কোনো অংশ কোনোভাবেই কারো মনে আঘাত করার জন্য নহে।)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:২৯