মাত্র কিছুদিন আগে পোস্ট দিয়েছি। জুন মাস ছিল সেটি। আর এখন জুলাই। কিন্তু মনে হচ্ছে অনেকদিন কোন পোস্ট দেইনি। অনেকদিন ব্লগে আসিনি।
ভালোবাসার ব্যাপারগুলো এমনই।
খুব একসাইটেড ছিলাম যে জুলাইয়ে ৫ বছর হতে যাচ্ছে ব্লগিংয়ের। এখন মনে হচ্ছে আমার না থাকার সময়গুলো থেমে গেলে মন্দ হতো কি? অথবা যা হয়েছে ভালোই হয়েছে।
যা হয় ভালোর জন্যেই হয়।
এই যে বললাম যা হয় ভালোর জন্যেই হয়, এর মধ্যে অন্তর্জালের জীবন আর বাস্তবজীবনে ঘটে যাওয়া যা হয়েছে তা আমার জন্যে ভালোই হয়েছে। এর মধ্যে বেশ অনেকবারই বিড়বিড় করে বলেছি...লাইফ ইজ বিউটিফুল...। আমার অবস্থা অন্য যে কারো চেয়ে খারাপ হতে পারতো। কিন্তু আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। ব্যস্ত আছি। পারিবারিক জীবন নিয়ে শান্তিতে আছি। কাজেই অবশ্যই লাইফ ইজ বিউটিফুল।
ব্লগে গত পাঁচবছরে অনেকরকমের মানুষ, মানুষের মুখ/মুখোশ অনেককিছুই দেখেছি এই অন্তর্জালের জীবনে আর কিছু দেখেছি বাস্তবজীবনে। তবে অন্তর্জালের ব্যাপক অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার এই ব্লগিং জীবনেই। ব্লগে এসে মানুষ দেখেছি, চিনেছি, বুঝেছি। বুঝেও নীরব থেকেছি। পরম নির্ভরতার কোন কোন বন্ধু পেয়েছি। যদিও তাদেরকে কখনও সেভাবে বলা হয়নি ...তোমায় সারাজীবনের বন্ধু বলে মেনেছি, তুমি থাক আর নাই থাক। কাছে থাক বা দুরেই থাকো...যোগাযোগ রাখো আর নাই রাখো। মুখোশ পরে থাকো বা নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েই থাকো।
কী পেয়েছি কী পাইনি সেই হিসেব করতে বসিনি। কারণ আমার কাছে সবটাই প্রাপ্তি।
যখন কেউ প্রশংসা করেছে সেটাতে যেমন আপ্লুত হয়েছি তেমনি যখন কেউ নিন্দে করেছে তাতে সাময়িক কষ্ট পেলেও ভেবে নিয়েছি, এটা হয় আমার প্রাপ্য ছিল নতুবা যে কষ্ট দিয়েছে, নিন্দে করেছে, অপবাদ দিয়েছে তার সীমাবদ্ধতা ছিল।
আমি সাধারণত স্ক্রিনশট রাখিনা। কী হবে অন্যকে ফাসানোর জন্যে স্ক্রিনশট রেখে। আজ একজনকে ফাসালাম কাল হয়তো পরমকরুণাময় তার করুণা আমার উপর থেকেই সরিয়ে নিবেন। কী কারণে এমন হলো বুঝতেও হয়তো পারবোনা।
তবে কিছু স্ক্রিনশট দেখে ভালো লেগেছে...আমি খুব সাধারণ মানুষ। তাই প্রশংসা পেলে অবশ্যই ভালো লাগে। আর সেই প্রশংসার কিছু যখন চোখে পড়েছে আগলে রাখতে চেয়েছি সেই ভালোবাসা, মূল্যায়নের নিদর্শন হিসেবে। সেগুলোই এখানে শেয়ার করলাম।
বইমেলায় প্রকাশিত ব্লগারদের বই নিয়ে পোস্টটিতে কবি চৈতী আহমেদ-এর এই মন্তব্যটি পেয়ে আমার সব পরিশ্রম সার্থক মনে হয়েছে। বই নিয়ে যে কোন ধরনের সদর্থক কাজই আমার কাছে পরম আদরনীয়।
গেম চেঞ্জারের ব্লগবাস্টার পোস্টে করা অপর্ণা মন্ময়ের এই মন্তব্য দেখে ভালো লেগেছে এই ভেবে যে হিটের আশায় একটা যেন তেন সংকলন করলেই হয়না। সংকলন করতে হয় ভালোবাসা থেকে, মনের আনন্দ নিয়ে আগ্রহের সাথে। আর আমি তাতে সফল।
রাজপুত্রের এই মন্তব্য কোথায় করেছিলেন মনে করতে পারিনি, তবে আরজু পনির পোস্টকে মূল্যায়ন করায় প্রীত হয়েছিলাম সেদিন। ভালোবাসার টোকেন হিসেবে জমিয়ে রেখেছিলাম এই মন্তব্যটি।
সেরা হওয়ার মতো ব্লগিং করিনি ...তারপরও জীএস সাহেব যখন প্রিয় ব্লগার দূর্দান্ত জুনের সাথে আমার নামটিও নিয়েছেন তখন সত্যিই খুব ভালো লেগেছিল। মনে হয়েছিল, এই যে ভালোবাসা পেলাম এটাই আমার ব্লগিং এর প্রাপ্তি।
ব্লগে আমি সবসময়ই ব্লগার হতে চেয়েছি। নারী বা পুরুষ হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পেতে চাইনি। এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দ। অন্যদের পছন্দ অন্যরকম হতেই পারে সেটাও তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর যখন আরণ্যক রাখালের এই মন্তব্যটা দেখলাম তখন মনে হয়েছে নারী বা পুরুষ হিসেবে নয় আমি ব্লগার হতে পেরেছি কিছুটা হলেও।
সুলতান মির্জার সাথে আমার ব্লগিয় ইন্টারেকশান তেমন একটা নেই। কিন্তু উনার এই মন্তব্যে আমার ব্লগিং সার্থক মনে হয়েছে। চেষ্টা করেছি দায়িত্বশীল থাকতে সবসময়ই।
এই নিকটির পেছনের মানুষটিকে আমি আরেকটা নামে চিনি। যদিও ইনিই যে তিনি সেটিও বুঝেছি মাত্র কিছুদিন আগেই। তবে এই মন্তব্যটা আমার কাছে অনেক অনুপ্রেরণার। ভবিষ্যতে নিজেকে এগিয়ে নিতে এই মন্তব্যটাও অনুপ্রেরণা যোগাবে আমাকে।
এই কথাগুলো ইহতিবের। লাখো ব্লগারদের মাঝে উনার মিস করার সীমিত সংখ্যকের মধ্যে আমিও আছি জেনে সত্যিই অবাক হয়েছি। হয়েছি আনন্দে আপ্লুত। [সংযুক্তি: ২৮/৭/২০১৬]
লিখতে আরো অনেক কিছু ইচ্ছে করছে। অনেক প্রিয় ব্লগারদের নিক সামনে আসছে। তাদের কথা লিখতে গেলে আরো অনেক সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু আমার হাতে সময়ের বড় অভাব হয়ে যাচ্ছে আজকাল। আশাকরি আমার প্রিয়, পরম শুভাকাঙ্ক্ষীরা আমার এই সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করবেন। এই মুহুর্তে কিছু কাজ রেখে নিজেকে বিশ্রাম দিচ্ছি ভেবে ব্লগে ঢুকেছি।
**বানানে আমি দুর্বল। এটা কখনই মেনে নিতে চাইনা। চাইবোও না। যতই বানান ভুল হোক আমার শুদ্ধিকরণ চেষ্টা চলতে থাকবে।
**এই পোস্ট লিখতে বসে বুঝলাম আমি হুটহাট ব্লগপোস্ট লেখা ভুলে গেছি। আগে যেমন একবসায় একটানে একটা আস্ত পোস্ট লিখে ফেলতে পারতাম। পারতাম একটানে একটা গল্প লিখে আনএডিটেড অবস্থায় ব্লগে পোস্ট করে দিতে। অনভ্যাসে সেই চর্চা মরে গেছে। হয়তো যা হয় ভালোর জন্যেই হয়।
শেষ কথা: এই পোস্ট দেবার কথা ১৩ তারিখ আর আমি তখন পরিবারের প্রিয় মানুষগুলোর সাথে ভ্রমণে। যদিও অনেক কথাই ছিল, আছে। ...তবুও আরজু পনি পোস্ট দিয়া প্রমাণ করিল সে ব্লগিং ছাড়ে নাই
উৎসর্গ:
প্রিয় ফিউশন ফাইভ নিকের পেছনের মূল চরিত্র যার কাছ থেকে আমি মানুষকে বুঝতে শিখেছি। শিখেছি আরো অনেক কিছু যা এই স্বল্প পরিসরে বলা সম্ভব নয়। আর
আমার পরম শুভাকাঙ্ক্ষী দু'জন প্রিয় ব্লগার, স্নেহের মানুষ...। দুর কোন দেশে দু'জনই অবস্থান করবেন শিক্ষা জীবনের অনেকটা সময়। আমার দোয়া থাকবে তাদের জন্যে সারাজীবনভর। তাদের বলবো, থেকো বন্ধু জীবনভর।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৫