somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি জানি কিসেরও লাগি প্রাণ করে হায় হায়... :|

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুপুর বেলাটা জুড়ে এতো হাহাকার কেনো!

বিরক্ত হয়ে নিজের রুমে বসে আছি, কিছুটা বিব্রতও বটে। পকেটে ৯৬ টাকা আছে, এই টাকা নিয়ে অন্যান্য দিন গুলোতে নগরী ভ্রমন করা গেলেও অবোরধের মাঝে বের হওয়া সম্ভব না। সিগারেটের প্যাকেট চেক করে দেখলাম তিনটি সিগারেট আছে, অতএব বাসায় থাকারই সিদ্ধান্ত নিলাম।
ব্লগ/ফেসবুকেও মন টিকছে না, কিছু লিখতে পারছি না। কোথাও কমেন্ট করতে গিয়েও প্রাসংগিক কথা খুঁজে পাচ্ছি না, পুরো মাথা ফাঁকা হয়ে আছে। শুন্য বাসাতে একা মন টিকছে না, আবার বের হতেও পারছি না।

অনেক্ষন ধরেই প্রচুর কিচির-মিচির আওয়াজ পাচ্ছি, পাখির ডাক। নিরবতার মাঝে পাখির ডাক এতো বেশি স্পষ্ট লাগছে যে, মনে হচ্ছে যেনো গোটা সুন্দরবনটাই জানালার ওপাশে এসে দাড়িয়েছে। জানালার পাশে গিয়ে দাড়ালাম, কবিতা লেখার উপরকরনটা ওখানেই থাকে। খানিক চেষ্টা করে বিফল হলাম, আসছে না। বাহিরে গুমোট আবহাওয়া, এই আবহাওয়াতে কাব্য চলে না। কবিতা লিখতে হলে দরকার তীব্রতা, সেটা হতে পারে গ্রীস্মের বা বরষার অথবা শীতের। হতে পারে ভালোবাসা অথবা কষ্টের, হতে পারে হাহাকারের। অথচ বর্তমানে এর সবকটিই অনুপস্থিত। নাকি ভুল বললাম? হাহাকারের মাঝেই তো আছি।

ঠিক করলাম মাথাতে যাই আসুক ওটাই লিখে ফেলবো, সমস্যা হলো মাথাতে শুধু নিজের জীবনের বিভিন্ন ঘটনাবলী উঁকি দিচ্ছে। ভেবে দেখলাম ওখান থেকেও কিছু লিখে ফেলা যেতে পারে, সাথে নাহয় কিছুটা মিথ্যে মিশিয়ে দেবো। ইদানিং সবাই খুব বেশি সত্যি কথা বলে বেড়াচ্ছে, আমি নাহয় খানিকটা সময় সত্য-মিথ্যের মিশেলে থাকি।

হঠাৎ পড়ার টেবিলের দিকে তাকালাম, বইয়ের সারির ওপরে এই বছরের একটা ডায়েরী রাখা। ডায়েরীটা খুলে আরও বিরক্ত হলাম! ফাঁকা ডায়েরী, কিছুই লেখা হয়নি। কে লিখবে? আমি ডায়েরী লিখিনা; কারন আমার জীবনের প্রত্যেকটি ঘটনাকেই আমি গুরুত্বপূর্ণ ভাবি, তাই আলাদা করে লেখার কিছু নেই। যে গিফ্ট করেছে সে এটা জেনেই করেছে। ডায়েরীটা বেশ সুন্দর; পাতাগুলোতে জলছাপা ও বিভিন্ন ধরনের আঁকিবুকি, সেই সাথে পাতাগুলো ফুলের ঘ্রান ছড়াচ্ছে। এই ঘ্রানই আকর্ষন সৃষ্টি করলো; কিছু একটা লিখে ফেলার তীব্র ইচ্ছে হচ্ছে, ঠিক করলাম যে এটা গিফ্ট করেছে তাকে নিয়েই কিছু একটা লিখে ফেলি। লিখতে শুরু করলাম...

'আমি হিমু না হলেও আমার জীবনে রুপার মতো কেউ একজন আছে, বিষন্নতার ঢেউ যদি আমার মনদ্বীপে এসে আছড়ে পড়ে তবে আমি তার কাছে চলে যাই। তাকে ফোন দেই, অথবা দেখা করি। এতো চুপচাপ থাকা ছেলেটি যে এতো কথা বলতে পারে, সেসময় কাছে না থাকলে এটা কেউ বিশ্বাসই করবে না। সে শুধু শুনেই যায়, মাঝে মাঝে সিগারেট জ্বালবার কথা মনে করিয়ে দেয়। হ্যা, আমি জানি এটা স্বার্থপরতা; কারন আমি কখনোই আমাদের সম্পর্কটাকে প্রেম পর্যন্ত গড়াতে দেইনি। অথচ করার কিছুই নেই, গত প্রায় চার বছর ধরে এরকমই চলছে। এটা ঠিক যে সেও কখনো সরাসরি কিছু বলেনি; কিন্তু আমি জানি যে আমার প্রতি তার আসক্তি বেড়েই চলেছে, প্রতিদিন একটু একটু করে। মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই সে উল্টোপাল্টা কথা বলতে শুরু করে, আবার নিজে থেকেই সেটা বন্ধ করে। ইদানিং কথার পাগলামীটা একটু কমেছে, হয়তো বুঝে ফেলেছে আমাকে। একটা সময় ভাবতাম কলেজ ছেড়ে ভার্সিটিতে উঠলেই পাগলামী কমে যাবে, হাজার ছেলের মাঝে আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। অথচ তার ভার্সিটি জীবনের দুটি বছর কেটে গেলো, এই দুবছরে ভালোবাসার তীব্রতা আরও বেড়েছে। কিভাবে বুঝলাম? বুঝেছি, কারন ভালোবাসা টের পাওয়া যায়। জোছনা যতটা তীব্র হয়ে সমগ্র আকাশকে মায়ার বাঁধনে আচ্ছন্ন করে ফেলে, তার ভালোবাসার আলো এরচেয়েও তীব্রতর হয়ে আমার সমগ্র অস্তিত্বকে দখল করতে চায়। ভাবছি এবার তার কাছে যাওয়া যেতে পারে, এই সময়টা একটু ভালোবাসা যে না হলেই নয়।'

"ওহে রেনুকা!

তুমি শ্রাবণঘন বর্ষাজলে কদম ফুলের ছন্দ,

তুমি তীব্র শীতের ঝড়া পাতায় এক অদ্ভুত নিস্তব্ধ।

তুমি শুন্য আকাশে রঙিন ঘুড়ি,

মেঘের ছায়ায় একটু উড়ি;

আজকে না হয় তন্দ্রা হরি.

তবু তোমার প্রেমেতে মরি..."

লেখা শেষ হতেই মনে হলো এটা কেনো লিখলাম! এটা কি আদৌ সত্য!! সত্যি নাহলে কি তবে মিথ্যে!!! আর ভাবতে ইচ্ছে করছে না।

"ফুলে ফুলে ঢোলে ঢোলে" গানটি ছেড়ে জানালার পাশে এসে দাড়িয়ে সিগারেট ধরালাম, মনটা আবারও ভয়ঙ্কর রকম বিষন্ন হয়ে গেছে। বাড়ির সামনের নির্জন রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে সিগারেট টানছি। একটা বাচ্চাকে দেখা গেলো, সামনের টিনশেড থেকে এইমাত্র বেরিয়ে এসেছে। পরনে হাফপ্যান্ট, খালি গা। গেটের উল্টোদিকে একটা কুকুর ঝিমুচ্ছে, বাচ্চাটা গিয়ে একটা ইটের টুকরো তুলে ওটার দিকে ছুড়ে মারলো। কুকুরটা কেউ করে উঠলো, বাচ্চাটা ভয় পেয়ে দৌড়ে গেটের ভেতর ঢুকে গেলো। কুকুরটা অলস ভঙ্গিতে উঠে দাড়িয়ে আড়মোড়া ভাঙ্গলো, তারপর দুটো বুকডন দিয়ে সামনের দিকে রওনা হলো। আবার চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে গেলো, নিস্তব্ধতার মাঝে নিঃসঙ্গ আমি দাড়িয়ে রইলাম। রুমের ভেতর থেকে গান ভেসে আসছেঃ "কি জানি কিসেরও লাগি প্রাণ করে হায় হায়..."

দুপুর বেলাটা জুড়ে এতো হাহাকার কেনো...

বিঃদ্রঃ >> নাটকীয় বর্ণনার জন্যে দুঃখিত. . . :D :D B-)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×