somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাগজের ফেরিওয়ালা
যদি ভালো ইনসানই না হতে পারি, তবে এই রক্ত-মাংস-রূহ-মস্তিষ্কের মূল্য কী? আমি উড়ার স্বপ্ন দেখি না, উড়তে তো মাছিও পারে! আমি মাটির আদম, মাটিতেই মরতে চাই, আমার বুকে লাগিয়ে দিও কদম ফুলের গাছ।

মোস্তাকিমের পথে (পর্ব ৫)

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফাতেমা বেগম তার পুত্রবধু সুরাইয়ার সাথে কথা বলছেন।
ফাতেমা বেগম ।। তুমি তাহলে পর্দা করা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছ?
সুরাইয়া ।। আমাদের সোসাইটিতে কেউ ওরকম পোশাক পড়ে না। এটা আমাদের টেস্টের ব্যপার, আমাদের রুচিশীলতার ব্যপার।
ফাতেমা বেগম ।। ছোট ছোট কাপড় পরাটা রুচিশীলতার ব্যপার হতে শুরু করল কবে থেকে?
সুরাইয়া ।। আম্মা, এটাই এখনকার ফ্যাশান। আর আপনার ছেলে এমন পোশাক পড়াটাই পছন্দ করেন।
ফাতেমা বেগম ।। আগে তুমি কত ভালো ছিলে! কত পরহেজগার ছিলে! পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে, কুরআন তেলাওয়াত করতে, হিজাব করে চলতে। হটাৎ কী ভূত আছর করল, সব ছেড়ে দিলে। বদলে গেলে। মেয়েটাকেও তো কাফের বানিয়েছ! দ্বীনের ব্যপারে কিছুই সে জানে না। আমার তো মাঝে মাঝে ভয় হয়, না জানি কখন আল্লাহর গজব নেমে আসে! আল্লাহর নাফরমান বান্দা দুনিয়া আখেরাত কোনখানেই সফলকাম হতে পারে না।
সুরাইয়া ।। আপনি দুয়া করেন ওর জন্যে, আম্মা।
******
নুসরাত বিছানায় বসে বসে আপনমনে হাসছে আর বারবার মোবাইলের স্ক্রিনে ফরহাদের নাম্বার দেখছে। নুসরাত ভাবছে, কল দেবো? না থাক। এতো রাতে কল দিলে কি ভাববে! দিলেই বা কি ক্ষতি! ফোন তো কল করার জন্যেই, নাম্বার নিয়েছি তো কথা বলার জন্যেই। না থাক। যদি রাগ করে, যদি খারাপ মেয়ে ভাবে! না, দেই একটু। দুই মিনিটের বেশী তো কথা বলব না। শুধু জানতে চাইব, কেমন আছেন। বাসায় ঠিকমত পৌছেছেন কী না। হুম, সাহস কর নুসরাত। এত এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে কেন? কেমন যেন শিরশির করছে সারা দেহে। আগে তো কখনও এমন হয়নি।
নুসরাত ফরহাদকে ফোন দিল।
ফরহাদ বই পড়ছিল। হটাৎ দেখল অচেনা নাম্বার থেকে কল এসেছে। সে অবাক হয়ে রিসিভ করল।
ফরহাদঃ হ্যালো
নুসরাতঃ হ্যালো
ফরহাদঃ কে বলছেন?
নুসরাতঃ গেস করুন।
ফরহাদঃ রঙ নাম্বার।
ফরহাদ ফোন কেটে দিল। নুসরাত আবার কল দিল।
ফরহাদঃ দেখুন আমি আপনাকে চিনতে পারছি না। আপনি ভুল নাম্বারে বারবার কেন কল করছেন?
নুসরাতঃ আপনি বুঝি আমাকে ভুল নাম্বার দিয়েছেন?
ফরহাদঃ সরি? বুঝলাম না।
নুসরাতঃ আপনিই আমাকে এই নাম্বার দিয়েছিলেন।
ফরহাদঃ কে আপনি?
নুসরাতঃ আমি নুসরাত।
ফরহাদঃ নুসরাত! সরি, নুসরাত নামে তো আমি কাউকে চিনি না।
নুসরাতঃ এত দ্রুত ভুলে গেলেন! আজ বার্থডে পারটিতেই তো কথা হলো।
ফরহাদঃ ও আচ্ছা! আই গট ইট। আপনি সেই ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকা মেয়েটা!
নুসরাত হেসে দিল।
ফরহাদঃ সো, হাউ ক্যান আই হেল্প ইউ?
নুসরাতঃ মানুষ বুঝি হেল্প চাওয়ার জন্যেই শুধু ফোন দেয়?
ফরহাদঃ তো আর কি জন্যে ফোন দেয়?
নুসরাতঃ এমনি এমনিও তো দিতে পারে।
ফরহাদঃ তাই? জানতাম না তো।
নুসরাতঃ কী জানতেন না?
ফরহাদঃ এত রাতে এমনি এমনিও কোন মেয়ে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করতে পারে, সেটা জানতাম না।
নুসরাতের মন খারাপ হয়ে গেল।
নুসরাতঃ আপনি ডিস্টার্ব ফিল করছেন?
ফরহাদঃ এনি ডাউট?
নুসরাতঃ আই এম সরি। গুড নাইট।
নুসরাত ফোন কেটে দিল। তার অনেক কান্না পাচ্ছে। সে আবিদকে কল করল।
আবিদঃ হ্যালো
নুসরাত নীরব।
আবিদঃ হ্যালো, হ্যালো নুসরাত...
নুসরাত ফুঁপিয়ে কেঁদে দিল।
আবিদঃ নুসরাত, তুমি কাঁদছ কেন? কি হয়েছে?
নুসরাত কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল, আমি রাতের বেলা ফোন করলে তুমি বিরক্ত হও?
আবিদঃ হটাৎ এ প্রশ্ন! কি হয়েছে? কেউ কিছু বলেছে তোমায়?
নুসরাতঃ আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। তুমি বিরক্ত হও আমি রাতে ফোন দিলে?
আবিদঃ না তো। বিরক্ত হবো কেন?
নুসরাতঃ মিথ্যে কথা। তোমরা ছেলেরা খুব খারাপ, খুব বাজে। তোমরা মেয়েদের মন বোঝো না, তাদের হৃদয়ের ভাষা বোঝো না। তোমরা এক একটা চোখহীন টিউবলাইট।
নুসরাত ফোন কেটে দিল। হটাৎ দেখল ফরহাদের কল এসেছে। নুসরাত রিসিভ করল, হ্যালো।
ফরহাদঃ হ্যালো নুসরাত, আই এম সরি। আমার এভাবে বলাটা ঠিক হয়নি। একচুয়ালি আমি এভাবে রাতের বেলা কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনি তো, তাই। আর আমার খুব পছন্দের একটা বই পড়ছিলাম, হটাৎ তোমার কল আসায় কনস্যান্ট্রেট ব্রেক হয়ে গিয়েছিল। তাই একটু রেগে গিয়েছিলাম। আই এম সরি এগেইন।
নুসরাতঃ ওকে, এখন আর সাফাই দিয়ে কি হবে। থাপ্পর মেরে সরি বললে কী লাভ? দাগ তো থেকেই যায়।
ফরহাদঃ সরি? বুঝলাম না।
নুসরাতঃ এখন বিরক্ত হচ্ছেন না তো আমার কথায়?
ফরহাদঃ না না, বিরক্ত হচ্ছি না। তুমি বলো।
নুসরাতঃ আপনার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
ফরহাদঃ আমি আর আমার মা বাবা।
নুসরাতঃ আপনি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান?
ফরহাদঃ হ্যাঁ। কেন?
নুসরাতঃ আমিও।
ফরহাদঃ তাই?
নুসরাতঃ হুম। আপনার সাথে আমার ভালো মিল আছে।
ফরহাদঃ তাই তো দেখছি!
নুসরাতঃ আমি আপনার সাথে দেখা করতে পারি?
ফরহাদঃ জরুরী?
নুসরাতঃ খুব জরুরী। আপনাকে আমার অনেক কথা বলার আছে।
ফরহাদঃ বলো?
নুসরাতঃ না, সাক্ষাতে বলব।
ফরহাদঃ ওকে।
******
ফরহাদের সাথে কথা বলা শেষ করে ফোন কাটতেই আবিদের কল এলো।
নুসরাতঃ হ্যালো আবিদ
আবিদঃ এতোক্ষণ কার সাথে কথা বলছিলে? আর তোমার মুড হটাৎ করে এত ভালো হলো কি করে? আলাদিনের চেরাগ পেয়েছ নাকি?
নুসরাতঃ তাই ধরে নাও।
আবিদঃ মানে?
নুসরাতঃ কাল ক্যাম্পাসে বলব। এখন খুব ঘুম পাচ্ছে। গুড নাইট।
আবিদঃ গুড নাইট।
(চলবে...)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×