যে কোন সময় দেশ ছেড়ে পালাতে পাড়ে রবি। অতীতে একাধিক কোম্পানি যে ভাবে লোভনিয় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের চোখে ধুলোদিয়ে গ্রাহকের পকেটর হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে দিয়ে পালিয়েছে এমওয়ে, যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপেট সহ একাধিক কোম্পানি একই পথের পথিক রবি।
রবির যাত্রা শুরু হয় মালয়েশিয়া (টিএম) ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের এ কে খান অ্যান্ড কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ‘একটেল’ নামে। সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রি মরহুম জহিরউদ্দিন খানের হাত ধরে। (১৫ই নভেম্বর ১৯৯৭ ঢাকায় এবং ২৬শে মার্চ ১৯৯৮ চট্টগ্রামে)।
এর পর তিনি ৭০ শতাংশ শেয়ার বিক্রয় করেন। ২০১০ সালের ২৮ মার্চ ‘রবি’ ব্র্যান্ড হিসেবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে রবি আজিয়াটা লিমিটেড।
গ্রাহকদের সেবার মান বাড়িয়ে দেওয়ার শর্ত নিয়ে যাত্রা শুরু করে রবি। একে একে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পারেনি রবি।
গ্রাহক হয়রানি, রাজস্ব ফাঁকি, বৈদেশিক মুদ্রা পাচার, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি, ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা কেলেঙ্কারির মধ্য দিয়ে তিন বছর পার করছে বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি ‘রবি’।
পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল সব কেলেঙ্কারি।
দেশের যে কয়টি মোবাইল কোম্পানি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে নরমাল, খারাপ নেটওয়ার্ক ও রিচার্জের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা কেটে রাখার দিক দিয়ে দেশে প্রচলিত মোবাইল কোম্পানির মধ্যে এগিয়ে রয়েছে রবি। এ অভিযোগ গ্রাহকদের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নতুন গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন সেবা প্রদান এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্র্যান্ড হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেতে ২০১২ রবি’র জন্য একটি উল্লে¬খযোগ্য বছর দাবি করলেও গ্রাহকদের তেমন কোনো সেবা দিতে পারেনি রবি।
প্রত্যান্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়া রবি’র শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে সর্বস্তরের মানুষ একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনে অংশগ্রহণ করতে পারবে বলেও শর্ত দিয়েছিল রবি। কিন্তু তাদের এই শর্ত পূরণ বাস্তবায়ন হয়নি বলে দাবি রবির গ্রাহকদের।
রবির গ্রাহক শিউলি আকতার রবি’র ম্যাসেজ যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘ব্যালেন্স শেষ হবার আগেই ইজিলোড বা স্ক্র্যাচ কার্ড এ রিচার্জ করুন’
ম্যাসেজটিই বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বেশী বিরক্তিকর ম্যাসেজ। মাল্টিলেভেল মোবাইল অপারেটর রবি তাদের ব্যবসার স্বার্থে লাখ লাখ গ্রাহকের মোবাইলে প্রতিদিন একাধিক ম্যাসেজ পাঠিয়ে থাকে।
তার মধ্যে গ্রাহকদের কল করার সময় কি কি সুবিধা দেয়া হচ্ছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কি কি সুবিধা দেয়া হচ্ছে, প্রতিদিন স্যামসাং মোবাইল ফোন জিতে নিতে হলে কি করতে হবে, গুণগুণ অ্যাকটিভ করলে কি করতে হবে সহ অসংখ্য বিরক্তিকর ম্যাসেজ গ্রাহকদের মোবাইলে দিয়ে থাকে।
যা চালু করতে হলে রবি’র দেয়া কোড নাম্বারে ফিরতি ম্যাসেজ পাঠাতে হয় নিরীহ গ্রাহকদের পকেটের টাকা খরচ করে। প্রতিনিয়ত এ সব অসংখ্য ম্যাসেজ যন্ত্রণার পরও স¤প্রতি চালু করা ‘আপনার ব্যালেন্স শেষ হবার আগেই ইজিলোড বা রিচার্জ করুন’ ম্যাসেজটি।
রবি গ্রাহক কওছার আহমেদ বলেন, কেউ দরকারী কথা বলবেন বলে ২০ টাকা ইজিলোড নিয়ে কথা বলা শুরু করলেন। ২০টাকা থেকে ২/৩ পয়সা খরচ হওয়ার সাথে সাথেই কল চলাকালে ওই বিরক্তিকর ম্যাসেজটি দেয়া হয়।
রবি’র অমানবিক বিজ্ঞাপন:
রবি’র অমানবিক বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে। স¤প্রতি মোবাইল অপারেটর রবি’র একটি টিভি বিজ্ঞাপনে মানবদেহের অঙ্গের নেতিবাচক ব্যবহারের এবং প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এনাটমিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। এনাটমিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. গুলশানারা বেগম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু এই বিজ্ঞাপন অনতিবিলম্বে প্রচার নিষিদ্ধের দাবি জানান।
তারা বলেন, মেডিকেল শিক্ষায় মানুষের শরীর এবং শরীরের অঙ্গ একটি অতি জরুরি অনুসঙ্গ। সারা পৃথিবীতেই স্বল্পসংখ্যক হৃদয়বান মানুষের মরণোত্তর দেহদানে এই জরুরি প্রয়োজনের কিয়দাংশ পুরণ হয়। এই ধরনের বিজ্ঞাপনের ফলে মানুষ মরণোত্তর দেহদানে নিরুৎসাহিত হবে। হাড় নিয়ে ক্রিকেট খেলার কথা একজন মেডিকেল ছাত্র চিন্তাও করতে পারবেনা। সেটাই দেখানো হচ্ছে রবি’র বিজ্ঞাপন চিত্রে বারে বারে। রবি’র এই বিজ্ঞাপনটিও উদ্ভট আইডিয়ার আতিশয্যে একটা বিপদজনক প্রচারণায় পর্যবসিত হয়েছে।
এদিকে রবির এই বিজ্ঞাপন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েব ফেসবুকেও চলছে ব্যাপক নিন্দা। অনেকেই বলছেন রবি’র বিজ্ঞাপন শিক্ষা উপকরণ আর মৃতমানব দেহের কি নির্মম অবমাননা। বিজ্ঞাপনে দেখান হচ্ছে- একটা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্ররা পড়ার ফাঁকে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠেছে, এই খেলার উপকরন হচ্ছে মানুষের দুটি বিশেষ হাড়। এই ছাত্ররা হয়ত একই সাথে সৃজনশীল এবং অতিরিক্ত মৃত মানুষের হাড়ের ভারে ন্যুব্জ তাই মোবাইল ফোন সেট রাখার জন্য আর কিছু পায়নি, পেয়েছে শুধু কোমরের আরেকটি হাড়। সকলেই মনে করেন অবমানবিক ও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এমন বিজ্ঞাপন চিত্র প্রচারে টিভি চ্যানেল এবং সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।
রিচার্জে বোনাসের নামে রবি’র নিত্য নতুন প্রতারণা :
বিভিন্ন অঙ্কের রিচার্জে রকমারি বোনাসের অফার দিয়ে গ্রাহকদের সাথে নিত্য নতুন প্রতারণায় মেতে উঠেছে মোবাইল অপারেটর “রবি”(একটেল)। এসএমএস’র মাধ্যমে রকমারি সব বোনাসের অফার পেয়ে সেই মোতাবেক রিচার্জ করে প্রতারণার শিকার হচেছ সহজ সরল গ্রাহকরা। ২৩ নভেম্বর থেকে ২১ টাকা রিচার্জ করলে ২১ মিনিট বোনাস টকটাইম, ২১ টি এসএমএস, ২১ টি এমএমএস ও ২১ এমবি ইন্টারনেট ফ্রি দেয়ার ঘোষণা দেয় রবি।
মোবাইলের ব্যালেন্স চেক করার সময় ব্যালেন্সের সাথে উপরোক্ত ঘোষণা সম্বলিত এসএমএস দেয়া হয় গ্রাহকদেরকে। তাই দেখে গ্রাহকরা ২১ টাকা রিচার্জ করে দেখতে পায় মাকাল ফলের মত সব ভাওতাবাজি।
২১ টাকা রিচার্জের পরে দেখা যায় মাত্র ১১ মিনিট টক টাইম পাওয়া গেলেও রিচার্জের ২১ টাকা গ্রাহকের মূল একাউন্টে যোগ হয়নি, কেবল মাত্র আগের ব্যালেন্সই আছে। পরে এ নিয়ে একটেল হেল্প লাইন ১২৩ এ যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বরং ১২৩ এ ফোন করলে ২/৩ মিনিটে আরো ৮/১০ টাকা একাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়। এরকম প্রতারিত হয়ে চরম হতাশা নেমে আসে গ্রাহকদের মধ্যে।
রবি গ্রাহক ইয়াছিন আরাফাত বলেন, মাঝে মাঝে বিভিন্ন অফারের প্রলোভনে পড়ে অনেক ছাত্র রবির গ্রাহক হয়। কিন্তু প্যাকেজ শেষ হতে না হতেই তাদের সকল সুবিধা বন্ধ করে দেয়।
এরকম প্রতারণা হলে গ্রাহকরা অন্য অপারেটরের সিম ব্যবহারে বাধ্য হবে বলে জানান এ কলেজ পড়–য়া ছাত্র। ইতি:পূর্বেও রিচার্জে রকমারি বোনাসের ঘোষণা দিয়ে গ্রাহকদের থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল রবি।
আকর্ষণীয় স্মার্টফোনসহ রবি’র বান্ডেল অফারে প্রতারণা :
উদয় পোস্ট পেইড প্রফেশনাল প্যাক ১ নামে প্রতারণা শুরু করছে রবি। উদয় পোস্ট পেইড প্রফেশনাল প্যাক ১ এর সঙ্গে স্যামসাং গ্যালাক্সি এসথ্রি, নোট টু, নকিয়া ও সিম্ফনি স্মার্ট ফোনের বিশেষ অফার ঘোষণা করলেও দোকানে গিয়ে গ্রাহকরা পাচ্ছেন না।
ডিলার বলে এ অফারটি গ্রাহকের কাছে পেতে আরো সময় লাগবে। আবার অন্য কোন দোকানে গেলে বলে এ অফারটি আছে আমাদের কাছে নেই। তবে একটু বেশি টাকা খরচ করার কথা বললে ঠিকই বের হয়ে যায়। জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রবির এক ডিলার বলেন, রবির অফিস থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে আনতে হয়েছে। তাই দাম বেশি নিতে হয়।
‘আমি দেশপ্রেমিক’ নামে প্রতারণা:
‘আমি দেশপ্রেমিক’ শিরোনামে গণমাধ্যমগুলোতে একটি নতুন ক্যাম্পেইন শুরু করেছে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবি। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের দেশপ্রেমের কথা বলে প্রতারণা ফাঁত পেতেছে রবি। অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ও ভয়ঙ্কর ছবি স্থান পেয়েছে, একটি মেয়ে শিশুকে চুল ধরে টানা হিচড়া, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ন্যায় চান্দা দিবিনা, এতে রাজনৈতিক দলের ধ্বংসাত্মক কাজে আগ্রহী করে তুলবে। ব্রিজের মধ্যে গাড়ি ঠেকিয়ে ব্রিফকেস নেয়া। এ দৃশ্যে ছিনতাইকারীদেও উৎপাত বেড়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
নতুন প্রিপেইড প্যাকেজ ‘জয় ২১’ রবি’র প্রতারণা:
প্রিপেইড গ্রাহকদের জন্য বোনাস অফারসহ ‘জয় ২১’ নামে একটি নতুন প্রিপেইড প্যকেজ চালু করে রবি প্রতারণা করেছে। অনেক সুবিধার কখা বলে অবশেষে ছোট অক্ষরে প্রাচার করে ভ্যাট প্রযোজ্য হবে। ২১ নভেম্বর উন্মুক্ত করা এই বিশেষ প্যাকেজে রবি গ্রাহকরা যতবার ইচ্ছে ততবার ২১ টাকা রিচার্জ করে ২১ মিনিট টকটাইম, ২১টি এসএমএস, ২১টি এমএমএস এবং ২১ মেগাবাইট ইন্টারনেট ক্রয় করতে পারবেন বলে ঘোষণা করে রবি। কিন্তু রবি’র বর্তমান প্রিপেইড গ্রাহকরাও রিচার্জ ভিত্তিক ২১ টাকা বোনাসের ‘জয় ২১’ অফার নিতে পারবেন। ‘জয় ২১’ প্যাকেজটির মূল্য ১৩৮ টাকা, যাতে সারাদিন প্রতি ১০ সেকেন্ড ১৪ পয়সা রেটে যে কোনো অপারেটরে কথা বলা যাবে। কিন্তু এ কথা রাখেনি রবি।
রবি’র নষ্ট বা হারানো সিম কার্ড উত্তোলনে অতিরিক্ত টাকা আদায়:
বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানী রবি’র নষ্ট বা হারানো সিম কার্ড উত্তোলনে অপারেটর নির্ধারিত মূল্যেরও চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে মারামারি, হাতাহাতিসহ বাকবিতন্ডার মতো অহরহ ঘটনা। পাশাপাশি রবি মোবাইল কোম্পানী বিমুখ হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকরা। অভিযোগে জানা গেছে , রবি মোবাইল অপারেটর (আজিয়াটা) কোম্পানী জেলা শহর ছাড়াও গ্রাহকদের সুবিধার্থে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও বাজার সহ জনসমাগন এলাকায় দিয়েছে রবি সেবা কেন্দ্র ( আরএসডি সিম)। এ সময় কেন্দ্র থেকে অপারেটর কোম্পানীর নির্ধারিত মূল্যে (প্রতি সিম ৬৮ টাকা) নষ্ট বা হারানো সিম উত্তোলনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। অবশ্য রবি মোবাইল অপারেট কোম্পানীর নিয়োজিত ডিলাররা রবি সেবা কেন্দ্র গুলোর মধ্যে প্রতি সিমের মূল্যে (পাইকারী হারে) নেন ৫০ টাকা। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ গ্রাহকেরা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহ সিম উত্তোলণ করতে গেলেই রবি সেবা কেন্দ্র গুলো গলাকাটা অর্থ আদায় করছে।
অপর দিকে, একটি সুত্র জানিয়েছেন রবি সেবা কেন্দ্র গুলোর এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগীতা দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন রবি অপারেটর কোম্পানীর নিয়োজিত বেশ কয়েকজন ডিএসও পদবীর কর্মচারী ও সংশি¬ষ্ট ডিলাররা।
রবি’র নেটওয়ার্ক জ্যামের বিড়ম্বনায় গ্রাহকরা:
মোবাইল অপারেটর রবি’র প্রচন্ড নেটওয়ার্ক জ্যামের ফলে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঢাকা চট্টগ্রামসহ সারা দেশের লোক। বিশেষ করে ঢাকার বাহিরের শহরগুলোতে রবির নেটওয়ার্কের সমস্য প্রতিনয়িত। মোবাইলে কল, ডায়াল ও রিসিভ করা যাচ্ছে না, যেকোন নাম্বারে ডায়াল করলেই নেটওয়ার্ক বিজি,কানেকশন এরর সহ আরো বিভিন্ন রকম লেখা মোবাইল স্কৃনে ভেসে উঠে। শতবার চেষ্টা করেও প্রয়োজনীয় ফোনালাপ করতে না পারায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এভাবে নেটওয়ার্ক জ্যাম হওয়ার ফলে সর্বস্থরের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী গণ চরম অসুবিধায় পড়েন। রবির হেলফ লাইন নং ১২৩ এ ফোন করা হলে কোন সমাধান পাওয়া যায় না। বরং তিন চার মিনিটে ১১/১২ টাকা কেটা রাখা হচ্ছে।
রবি’র রিচার্জ বন্ধ হতে যাচ্ছে:
মোবাইল ফোনে ব্যালান্স রিচার্জ নিয়ে বিপদে পড়েছে দেশের তৃতীয় গ্রাহক সেরা অপারেটর রবি। রবি’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদুর রহমানের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই আন্দোলনে যাচ্ছে। ৩ অক্টোবর ২০১২ এক চিঠি দিয়ে মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন রবিকে এ বিষয়ে ২৪ ঘন্টা সময় দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছে। এখন সে ক্ষমা আনুষ্ঠানিক ভাবে চাইনি রবির সিনিয়র ভিপি।
একই সঙ্গে তাদের ১১ দফা দাবিও মেনে নেয়নি রবি। মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু এ বিষয়ে বলেন, রবি যেহেতু কোনো কিছু জানায়নি সে কারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, এদেশের তরুণদের দিয়ে হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করবে অপারেটররা কিন্তু যারা রিচার্জ করে দেয় তাদেরকে কিছু দেবে না তা হয় না। জানা গেছে, গত ১ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে মাহমুদুর রহমানকে উদ্ধৃত করে একটি বক্তব্য ছাপা হয়। সেখানে তিনি বলেন, রিচার্জ অ্যাসোসিয়েশনের বৈধ নিবন্ধিত কোনো সংগঠন নেই। ফলে কাদের সঙ্গে আলোচনায় বসব? এই বক্তব্য অ্যাসোসিয়েশনের প্রতি অবজ্ঞা বলে মনে করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু।
তিনি বলেন, হাজার হাজার তরুণ এখানে কাজ করে। তাদেরকে অবজ্ঞা করে ব্যবসা করা চলবে না। তিনি জানান, অপারেটরদেরকে তাদের শক্তি বোঝানোর জন্যে স¤প্রতি কিছুদিন বিক্ষিতভাবে বিভিন্ন এলাকায় রিচার্জ বন্ধ রেখে অপারেটরদের এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়।
জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক রবি’র ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করেন। কিন্তু রবি সেবা দিতে ব্যর্থ। এ অপারেটর ব্যবহার করে নানা বিড়াম্ভনায় পড়ছে গ্রাহকরা। ফলে ছেড়ে দে মা কাইন্দা বাঁচিতে আছে রবি। এর আগে রবির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোম্পানির প্রচার ও গণমাধ্যম বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ তালাত কামাল স¤প্রতি বলেন, বাংলাদেশের আইন মেনেই রবি ব্যবসা করছে।
রবি’র সামনের দিনের কথা ভেতে আরো দুঃশ্চিন্তা গ্রস্থ ঠেকেছে তাদের। ২৬ ফেব্র“য়ারি ২০১৩ সালে রাজধানীর একটি হোটেলে রবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও প্রদীপ শ্রীবাস্তব মুখ ফোসকে বলে ফেলেন, গ্রাহক কেন্দ্রিক হিসেবে খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, ২০১০ সালের ২৮ মার্চ ‘রবি’ ব্র্র্যান্ড হিসেবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে রবি আজিয়াটা লিমিটেড। এর আগে (১৫ই নভেম্বর ১৯৯৭ ঢাকায় এবং ২৬শে মার্চ ১৯৯৮ চট্টগ্রামে) মালয়েশিয়া (টিএম) ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের এ কে খান অ্যান্ড কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ‘একটেল’ নামে কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়।
রবি'র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুম জহিরউদ্দিন খান, প্রাক্তন বাণিজ্য মন্ত্রী। ২০০৮ সালে এ কে খান কোম্পানী তাদের অংশ (৩০ ভাগ) বিক্রি করে দেয় ইটিসালাট এবং এনটিটি ডোকোমো'র কাছে।
অর্থনীতিবিদ কাজল রায় বলেন, রবি যেভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা চালিয়ে যাচ্ছে। এসময় যদি কতৃপক্ষ ব্যাবস্থা না নেয় তাহলে তাহলে অতীতে যেসব কম্পানি মানুষের পকেটের টাকা নিয়ে পালিয়েছে ঠিক রবিও তাই করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, যুবক ডেসটিনি ইউনিপেটু কথা চিন্তা করে সরকারকে রবি নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে তাদের কেলেঙ্কারি উঠে আসছে। সে কোন সময় দেশ ছেড়ে ভাগতে পারে রবি। কেননা রবি’র ৭০ ভাগ মালিক বিদেশি কোম্পানি।
তথ্যসূত্র: আমাদরে সময়
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩