এই মাসের ২ তারিখ থেকে ফোনের পর ফোন পাচ্ছি কিউবি ব্যবহারকারীদের কাছে থেকে, সবারই একই কথা এটা কি! কিউবি’র বিল পেয়ে সবাই একটু হলেও হতভম্ব হয়েছে। এদের মধ্যে বেশীরভাগেরই অভিযোগ হচ্ছে; কিউবি ভ্যাটের কথা বলেনি সংযোগ বিক্রি করার সময়। কিন্তু এরকম অভিযোগ আনার আমি কোনো যুক্তি দেখিনা। ওদের ওয়েব সাইটে পরিস্কার বলা আছে সকল চার্জের সাথে ভ্যাট প্রযোজ্য, সাইটে লেখা থাকলে মুখেও নিশ্চয়ই বলবে ওদের সেলস্ পারসনরা, যদি বাংলা লায়নের মতন অজ না হয়ে থাকে।
এর পরের অভিযোগ হলো গত মাসের ১৫ তারিখের দিকে কিউবি ২৫৬ এবং ৫১২ প্যাকেজকে স্কাই লিমিট করে দেয়। অর্থাৎ যদি ভালোভাবে ব্রাউজ না করে সারাদিন বসে পর্ণ ডাউনলোড করেন বা ওদের লাইন নিয়ে নিজেই আইএসপি খুলে না বসেন, তাহলে আপনি উক্ত প্যাকেজগুলি উপভোগ করতে পারবেন। কিন্তু যখন বিল এলো, তথন সবারই মাথায় হাত! তারা আগের মতন কিলোবাইট হিসেবে বিল ধার্য্য করেছে। শুধু তাই না, যারা নতুন লাইন নিয়েছে তাদের ঐ মাসের অতিরিক্ত টাকা এই মাসের বিল থেকে বিয়োগ না করে যোগ করে দিয়েছে।
এর চাইতে বাজে কি আর কোনো পরিস্থিতি হতে পারে? আমার মনে হয়না হতে পারে। এই লেখাটি লেখা পর্যন্ত ৮ দিন হতে চললো কিন্তু এখনো গ্রাহকরা বিলের আপডেট পায়নি। আমি আশাকরবো যে তারা এসব ফাউল সফটওয়্যার ফেলে দিয়ে প্রফেশনাল জিনিসপত্র চালাবে এবং প্রফেশনাল মানের সেবা দেবে।
এ তো গেলো সাময়িক (!) সমস্যার কথা, যেটা ঠিক হয়ে যাবে বলে আমরা সবাই আশা করি। কিন্তু একটা জিনিস আমার ভালো লাগেনি, সেটা হলো এদের আপলোড পলিসি। ডাউনলোড গতির এক চতুর্থাংশ আপলোডের গতি। এই কথাটি কিন্তু কোথাও বলা নেই। এরা বড় গলায় বলছে যে বিটিআরসি-এর দেয়া নিয়ম অনুযায়ী এরকম করা হয়েছে। যদি আপলোড/ডাউনলোড সমান লাগে, তাহলে মাসিক ট্রান্সফার লিমিটেড করে ফেলতে হবে, যেমন মাসে ৬ গিগা বা ১০ গিগা। এই বিষয়টা আমার যাচাই করে দেখার সুযোগ হয়নি, আমি বিটিআরসি’র কয়েকজনকে চিনি কিন্তু আমার ধারণা উনারা এর জবাব দিতে পারবেন না। বাংলালায়ন কিন্তু ডাউনলোডের অর্থেক আপলোড দিচ্ছে, কিন্তু ওদের আবার মাসিক ট্রান্সফার লিমিটেড।
কিউবির গ্রাহকদের মাঝে মাঝেই অপটিমাইজেশন নামের অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে যেতে হচ্ছে। তারা দিনে দুপুরে নেটওয়ার্কের কাজ করছে এবং সেই সময় গ্রাহকদের ডাউনলোডের গতি ১/২ কিলোবাইট/সেকেন্ডে নেমে আসছে, ঠিক ঢাকা শহরের গ্যাস লাইনের মতন। এই সমস্যা ছাড়া আপটাইম নিয়ে আপাতত ঝামেলা দেখা যাচ্ছেনা। যাদের রিসিভার দিন-রাত ২৪ ঘন্টা ধরে চলছে ৩-৪ দিন পরে দেখা যায় তাদের ডাটা ট্রান্সফার বন্ধ হয় যায়, তখন রিসিভারটা বন্ধ করে চালু করলেই সব ঠিক হয়ে যায়। বিটিসিএল যে এডিএসএল সেবা দেয়, সেগুলি দিয়ে ডাউলোড চালালে কিছুক্ষণ পর পর সেগুলি হ্যাঙ্গ করে, কিউবিরটা তার থেকে অনেক ভালো। তবে গরমকালে এটার পরিমাণ বাড়তেও পারে। কিন্তু সত্য কথা বলতে সিমেন্স গিগাসেটের এই রিসিভারগুলি আমার ভালো লেগেছে। রিসিভারগুলি নিজেই রাউটার হিসেবে কাজ করতে পারে, তাই রিসিভার থেকে একটা সংযোগ নিয়ে একটা হাব/সুইচে লাগিয়ে দিলেই অনায়াসে যত খুশি তত কম্পিউটারে সংযোগ ব্যবহার করা যায় একসাথে।
পাকিস্তানে অবশ্য কিউবির সংযোগ নিতে টাকা দিতে হয়না। আবার পাকিস্তানে ওরা আরও একটা রিসিভারটা দিচ্ছে, যেটা ওয়াইম্যাক্স গ্রহণ করে ওয়াইফাইতে পরিবর্তন করতে পারে, মানে অফিস/বাসায় লাগালে তারের ঝামেলা ছাড়াই সুন্দর কাজ করা যাবে। আমি আশা করবো আমাদের এখানে ঐ মাল শিঘ্রই চলে আসবে।
কাস্টমার সার্ভিসের ব্যবহার ভীষণ ভালো, কিন্তু বেচারাদের হাতে কিছু নেই, মানে তারা চাইলেও একটা সাপোর্ট বা অভিযোগ লেখা ছাড়া কিছু করতে পারে না। যেসব পোলাপাইন ফিল্ডে কাজ করে, তারা শিক্ষিত এবং সন্মান করে। কোনো সমস্যা হলে আপ্রাণ চেষ্টা করে সেটা সারানোর।
মোট কথা -
আমি মাঝে মাঝে অনেক আপলোডের কাজ করি, যেটা কিউবি দিয়ে ভালোভাবে করা যাবে না। আমার ৫১২ প্যাকেজে আপলোডের গতি মাত্র ১২৮।
এখন পর্যন্ত ওরা যে গতি দেবার কথা বলছে সেটাই দিচ্ছে এবং সেটা থাকছে।
কাস্টমার সাপোর্ট ভালো।
মাঠ কর্মীদের ব্যবহার ভালো এবং ওরা শিক্ষিত। ডিসের লাইনের পোলাপাইন দিয়ে ইন্টারনেট লাইনের কাজ করাচ্ছে না।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে আগ্রহী, তাই আশা করা যায় ঢাকার বাহিরেও এদের অবস্থান থাকবে।
এখন দেখা যাক সামনে কি হয়!
পুরু লেখাটা অমি ভাইয়ের মূল লিংক এখানে http://omi.net.bd/560