নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রাকৃতিকভাবে অথবা মনুষ্যসৃষ্ট যেকোনো বাধা পেলেই ইলিশ ফিরে যায় বা সাগর থেকে নদীতে ওঠে না। কারণ, ইলিশ খুবই সংবেদনশীল, বিচিত্র স্বভাবের। এর জীবনাচরণ অন্য মাছ থেকে আলাদা। খাওয়াদাওয়া ও প্রজননের উদ্দেশ্যে ইলিশ সাগর থেকে মোহনা অতিক্রম করে নদ-নদীতে উঠে আসে। ডিম ছেড়ে ফিরে যায়। সাগরেই বসবাস করে। নদীর পানিতে ডিম ছাড়ে এবং বংশবিস্তার করে।
স্বাভাবিক সময়ে ডুবোচরের কারণে ইলিশ নদীতে ওঠে না; বাধা পেলে ফিরে যায়, সেটা ঠিক। তবে একটা ব্যাপার হলো, সেপ্টেম্বর–অক্টোবরের অমাবস্যা-পূর্ণিমার সময়, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে, ঝড়বৃষ্টি হয়, নদীতে পানি বাড়ে, যখন ইলিশ প্রজননের প্রেরণা অনুভব করে, তখন সব রকম বাধা অতিক্রম করে নদীতে উঠে আসে এবং ডিম ছেড়ে আবার সাগরে ফিরে যায়।
কিন্তু ইলিশের চলাচলে পথের বাধা যদি প্রকট হয়, জলবায়ুর যদি ব্যাপক পরিবর্তন হয়, তাহলে সব বাধা অতিক্রম করে আসার তাগিদ কমে যাবে, যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এ জন্যে জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং আইন মান্য করাতে হবে।
যখন বৃষ্টিপাত কম হয়, এবার যেমন অনাবৃষ্টি হলো, প্রচণ্ড গরম পড়েছে, এ কারণে ইলিশ খুব সমস্যায় পড়েছে। সে ক্ষেত্রে বৃষ্টি ও পানির প্রবাহ বাড়ার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যখন অক্টোবরে পূর্ণিমার সময় বৃষ্টিপাত বাড়ে, ডুবোচর ডুবে যায়, পানির গভীরতা বাড়ে, তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়, তখন ইলিশের নদীতে উঠে আসার একটা সেতুবন্ধন গড়ে ওঠে।
গত মে মাসে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল নিয়ে নিঝুমদ্বীপে গিয়েছিলাম। তখন সাগরমোহনায় অনেক বেহুন্দি জাল পাতা দেখেছি। এটা দুইভাবে ইলিশের ক্ষতি করছে। এই জাল দীর্ঘদিন পাতা থাকার কারণে পলি জমে চর পড়ে। দুই, এ জালে ইলিশের জাটকাসহ অন্যান্য মাছের রেণুপোনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। এভাবে ইলিশ সম্পদের বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়।
প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়োজিত জেলেরা নানা রকম অবৈধ জাল দিয়ে চর দখল করে ইলিশের মাইগ্রেটরি রুট, প্রজননক্ষেত্র, মাছের বাস্তুতন্ত্র, খাবারের স্থান ধ্বংস করছেন। নিঃসন্দেহে তাঁরা ইলিশসহ মৎস্য সম্পদের বিশাল ক্ষতি করছেন।বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে ঋতুগত পরিবর্তন হচ্ছে। নদীর পানি কমে যাচ্ছে, পানিতে খাবার কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে জোয়ারে লবণাক্ততা ধেয়ে ওপরে উঠছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্রের তলদেশের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ সবকিছু ইলিশের জন্য অশনিসংকেত।
এ ছাড়া বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা, তুরাগ নদ–নদীর দূষণ গজারিয়া দিয়ে ব্যাপক হারে মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় নামছে। এই দূষণ অবশ্যই ইলিশ কম ওঠার আরেকটা কারণ।
ভোলাসহ যেসব অঞ্চলে ইলিশের প্রজননক্ষেত্রে, নার্সারি ক্ষেত্রে ও ইলিশের মাইগ্রেট অঞ্চলে বালু তোলা হচ্ছে, সেখানে ইলিশের বাস্তুতন্ত্র (ইকোসিস্টেম) বা বাস্তুভিটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মেঘনা-তেঁতুলিয়া ইলিশের প্রধান প্রজননক্ষেত্র, নার্সারি ও মাইগ্রেটরি অঞ্চল। এখানে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।
সৌজন্যেঃ ড. আনিসুর রহমান: ইলিশ গবেষক ও চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২
শাহ আজিজ বলেছেন: যারা ইলিশ নিয়ে জানেন না তাদের জন্য খুবই তথ্যবহুল পোস্ট ।
২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ২:২৩
আহরণ বলেছেন: রুপ কথার ইলিশ গাঁধা। ২০৫০ সালে পড়তে হবে, "এক সময় বাংলাদেশে ইলিশ নামের একটি মাছ পাওয়া যেত".....
৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭
প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট
৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১:২৫
Salina Alam বলেছেন: পোস্ট টি পড়ে ছোটবেলায় পড়া সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের
ইলশেগুঁড়ি ছড়াটা মনে পড়ে গেল--
ইলশেগুঁড়ি ইলশেগুঁড়ি
ইলিশ মাছের ডিম
ইলশেগুঁড়ি ইলশেগুঁড়ি
দিনের বেলায় হিম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:১২
সোনাগাজী বলেছেন:
দরকারী ও জানার মতো তথ্য