নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"
ছবি সুত্র: Science Learning Hub
আপনি কখনও চিন্তা করেছেন কি, ভূমিকম্প যে স্থানে সংঘটিত হয় সেই স্থান থেকে অনেক দূরে কোন স্থানের বাড়ি-ঘড় এর ক্ষতি করে কেন?
ভূমিকম্পের সময় ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলে ফল্ট প্লেনে জমা হওয়া স্থিতি শক্তি seismic waves এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভূ-পৃষ্ঠ নাকি ভূ-অভ্যন্ত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে seismic waves কে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা হয়। ভূ-অভ্যন্ত দিয়ে প্রবাহিত হলে তাকে বলা হয়ে থাকে Body waves ও ভূ-পৃষ্ঠ এর উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে তাকে বলা হয়ে থাকে Surface waves. Body waves আবার দুই প্রকার: ১) Primary waves (p wave) ও ২) Secondary waves (s wave)। Body waves (Primary waves ও Secondary waves তরঙ্গ দুইটি যখন ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছে তখন তার নতুন নাম হয় Surface waves। এই Surface waves আবার দুই প্রকার ১) Love waves ও ২) Rayleigh waves। তরঙ্গের নাম ভালবাসা হলেও কাজটা কিন্তু করে ঘৃণার। Love waves ও Rayleigh waves তরঙ্গ দুইটি বাড়ি-ঘর এর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে। নিচে সংযুক্ত ভিডিওতে দেখতে পারবেন ভূমিকম্পের ভলে সৃষ্ট কোন ধরনের তরঙ্গ এর কারণে একটি ঘরে কেন ফাটল সৃষ্ট হয় কিংবা ঘরটি পড়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আপনি যদি প্রশ্ন করেন ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ঠ প্রধান ২ টি তরঙ্গকে কেন Primary waves ও Secondary waves নাম করন করা হয়েছে?
আমরা জানি ভূমিকম্পের কারণে ভূমিতে যে কম্পন সৃষ্টি হয় তা যে যন্ত্র দিয়ে মাপা হয় তার নাম সিসমোমিটার। ভূ-কম্পন যে কাগজে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে সিসমোগ্রাম বলে। কোন স্থানে ভূমিকম্প হওয়ার পড়ে সিসমোমিটারে সর্বপ্রথম যে seismic waves টি পৌছায় তার নাম দেওয়া হয়েছে Primary waves বা প্রাথমিক তরঙ্গ ও এর পরে যে তরঙ্গ পৌছায় তার নাম দেওয়া হয়েছে Secondary waves বা দ্বিতীয় তরঙ্গ। এখানে উল্লেখ্য যে Primary waves (p wave) ও Secondary waves (s wave) এর ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্রে পৌঁছানোর সময়ের পার্থক্য জানার মাধ্যমে ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্র থেকে ভূমিকম্পটি কত দূরত্বে হয়েছে তা নির্ণয় করা যায়। ভূকম্পন যন্ত্রে সবার শেষে পৌছায় Love waves ও Rayleigh waves। অর্থাৎ, ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ৪ প্রকার তরঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে অলস তরঙ্গ হলও ভালোবাসা তরঙ্গ ও রেইলিঘ তরঙ্গ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে এই অলস তরঙ্গ দুইটি সবার শেষে পৌঁছালেও সবচেয়ে বেশি জান ও মালের ক্ষতি করে এই দুইটি তরঙ্গ।
উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভূমিকম্পের ফলের সৃষ্ট তরঙ্গ ৪ প্রকারের তরঙ্গ আকারে প্রবাহিত হচ্ছে ও ভূ-পৃষ্ঠে অবস্হিত বৈদ্যূতিক সরবরাহ লাইনের ক্ষতি সাধন করছে।
Primary waves বা প্রাথমিক তরঙ্গ প্রবাহিত হওয়ার সময় বিল্ডিং এর নিচের মাটিতে সংকোচন ও সম্প্রসারণ করে। প্রাইমারি তরঙ্গের প্রবাহকে সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় হারমোনিয়াম এর বেলো এর মাধ্যমে। বেলো যখন ছেড়ে দেওয়া হয় তখন তা সম্প্রসারণ করে; আবার যখন আঙ্গুল দিয়ে টেনে নেওয়া হয় তখন সংকোচন করে। কিংবা তুলনা করা যেতে পারে স্প্রিং এর সংকোচন ও প্রসারণ এর সাথে। ভূ-অভ্যন্তরের মাটিও ঠিক ঐ রকম সংকুচিত ও সম্প্রসারিত হয়ে যখন প্রামারি তরঙ্গ প্রবাহিত হয়। তবে এই সংকোচন ও সম্প্রসারণ এত কম পরিমানে হয় যে কারণে প্রাইমারি তরঙ্গ থেকে বিল্ডিং এর ক্ষতি হয় খুবই কম পরিমানে। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় প্রাথমিক তরঙ্গের প্রবাহকে অনুদৈর্ঘ্যও বলা হয়ে থাকে।
ছবি: Primary waves যেভাবে বিল্ডিংকে লইরা-চইরা দেয়
Secondary waves ( প্রকৃত বাংলা প্রতিশব্দ আমার জানা নাই) বা দ্বিতীয় তরঙ্গ (ভূমিকম্প পরিমাক যন্ত্রে ধরা পরা দ্বিতীয় তরঙ্গ) প্রবাহিত হয় সমুদ্রের ঢেউ এর মতো। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় Secondary waves বা দ্বিতীয় তরঙ্গের প্রবাহকে তির্যক তরঙ্গ বলা হয়ে থাকে।
ছবি: Secondary waves যেভাবে বিল্ডিংকে লড়াইয়া-চড়াইয়া দেয়
Love waves বা ভালোবাসা তরঙ্গটির প্রবাহকে তুলান করা যেতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিনে কেরু কোম্পানির বাংলা মদ খেয়ে কনসার্ট দেখতে যাওয়া বন্ধুর ছন্দহীন নৃত্যের নামে হাত-পা ছোড়া-ছুড়ির সাথে। যে বন্ধুটি নেশার ঘোরে একবার সামনের জনকে লাথি মারে, একবার পিছনের জনকে লাথি মারে; একবার ডানের জনকে ঘুষি মারে; একবার বামের জনকে ঘুষি মারে। কিংবা তুলনা করা যেতে পারে একই সাথে সাপের চলার পথ (আঁকা-বাঁকা) ও সমুদ্রের ঢেউ এর (উঁচু-নিচু হয়) সাথে। অর্থাৎ, ভালবাসা তরঙ্গ সাপের মতোও ডানে-বায়ে কোমড় দুলিয়ে সামনে দিকে অগ্রসর হয় কিংবা সমুদ্রের ঢেউ এর মতোও উঁচু-নিচু হয়ে উপকূলের দিকে আচড়ে পড়ে। Love waves বা ভালোবাসা তরঙ্গটি ঠিক একই ভাবে সামনে-পিছনে ও ডানে-বামে বিস্তার লাভ করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এই কারণে এই তরঙ্গটি থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতির সাধিত হয় বিল্ডিং এর।
ছবি সুত্র: Shearer (2009)
Rayleigh waves যখন প্রবাহিত হয় তখন বিল্ডিং এর নিচের মাটির কনাগুলোকে ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরায়। এই কারণে ৪ প্রকারের তরঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে Rayleigh তরঙ্গ। এই তরঙ্গটিকে তুলনা করা যায় মুড়ির-টিন বাসের সাথে। মুড়ির টিন বাসে বসে যাত্রা করলে যেমন মানুষের পেট থেকে নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে আসতে চায় ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটায় Rayleigh তরঙ্গটি যখন বিল্ডিং এর নিচ দিয়ে প্রাবাহিত হয়।
বিভিন্ন প্রকারের ভূমিকম্প তরঙ্গ ভূপৃষ্ঠের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হলে মাটি কণা গুলো কিভাবে নড়া-চড়া করে তার খুব সুন্দর একটা এনিমেশন নিচের লিংক থেকে দেখে নিতে পারেন। তাহলে উপরে বর্ণিত বিষয় গুলো আরও সুন্দর ভাবে বুঝতে পারেন বলে মনে করি।
Seismic Wave Theory
০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৪৮
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: আপনাকে বিশেষ ধণ্যবাদ ভুলটি লক্ষ করে আমাকে জানানোর জন্য।
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৩
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট
০৫ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১:৩৫
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:১১
করুণাধারা বলেছেন: কঠিন একটি বিষয়কে অতি সহজবোধ্য ভাষায় লিখেছেন। ধন্যবাদ।
০৫ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১:৩৬
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:
আপনার কাছে পোষ্ট টি সহজবোধ্য মনে হয়েছে তা জেনে খুশি হলাম।
৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:০০
রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট পোষ্ট।
০৫ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১:৩৭
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: নুর ভাই আপনাকে ধণ্যবাদ সবসময় সাথে থাকার জন্য।
৫| ০৫ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ২:০৭
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
ফেসবুকে আগের পর্বগুলি পড়েছি, এখানে এই পড়লাম। আপনার লেখার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে খুবই সাবলীলভাবে উপস্থাপন ও সহজ শব্দে লিখনী।
শুভকামনা নিরন্তর।
৬| ০৫ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৭:১০
সোহানী বলেছেন: চমৎকারভাবে লিখেছো পলাশ।
তোমার ছোটদের জন্য লিখা শুরু হরা উচিত। তোমার লিখার হাত ভালো ও বিষয়ের উপর চমৎকার দক্ষতা আছে। বাচ্চারা কঠিন বিষয়গুলো সহজভাবে বুঝবে। আমি বিজ্ঞানের মানুষ না, তা না হলে আমিই শুরু করতাম।
তোমার বই কতদূর?
৭| ০৫ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: নুর ভাই আপনাকে ধণ্যবাদ সবসময় সাথে থাকার জন্য।
আপনার লেখা গুলো আমি আগ্রহ নিয়ে পড়ি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৩
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: টাইপো
শিরোনাম : বাড়<বাড়ি