নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"
"ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর!’ সংলাপটা ছুড়ে তলোয়ারের আঘাতে ঠাকুর বলদেব সিংয়ের দুটো হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল গব্বর সিং এর ভূমিকায় অভিনয় করা ভিলেন আমজাদ খান! কারণটা ছিলও গব্বর সিং এর আদেশে অমান্য করে ঠাকুর বলদেব সিং তার প্রজাদের নির্দেশ দিয়েছিল ডাকাত গব্বর সিং কে চাঁদা না দিতে। ডাকত গব্বর সিং এর নেতৃত্ব অস্বীকার করার মাসুল দিতে হয়েছিল ঠাকুর বলদেব সিংকে নিজের দুই হাত খুইয়ে।
বাংলা চ্যানেলের দুষ্প্রাপ্যতা ও হিন্দি চ্যানেলের সুলভ্যতার জন্যই কিনা হিন্দি ছবি দেখার অভ্যাস ছিলও। স্কুল জীবনে বেসরকারি টিভি চ্যানেলও ছিলো না। এলাকায় ডিশ ও ছিলো না। সর্বকালের অন্যতম সেরা হিন্দি সিনেমার একটি হলও অমিতাভ বচন, হেমামালিনী, ধর্মেন্দ্র-আমজাদ খান অভিনীত "শোলে" সিনেমা। ঐ সিনেমাটা একটা মাত্র ডায়লগের জন্য মানুষ আজ ও মনে রেখেছে, যেমনটি মনে রেখেছে মান্না ও রাজীব অভিনীত "দাঙ্গা" ছবিটির কথা। কাজি হায়াৎ পরিচালিত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে অন্যতম সফল 'দাঙ্গা' ছবিতে রাজীবের বলা সংলাপ 'আমি মাইন্ড করলাম, আমি খুব মাইন্ড করলাম'। নায়ক মান্নাকে খলনায়ক রাজীবের সাথে বেয়াদবির কারণে (চাঁদাবাজির অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো) হাত খোয়াতে হয়।
সিনেমা জগতে ব্লকবাস্টার ছবি গুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর-পর রিমেক করা হয়। মানে ছবির স্ক্রিপ্ট অপরিবর্তিত থাকে শুধু নতুন পরিচালক-প্রযোজক ও কলাকুশলী নিয়োগ করে নতুন করে ছবিটি শুটিং করা হয়; নতুন লোকেশনে। শোলে সিনেমার নতুন শুটিং শুটিং স্পট শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর; প্রযোজক বাংলাদেশ সরকার; পরিচালক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গব্বর সিং এর ভূমিকায় বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
৪২ বছর পূর্বে শোলে সিনেমায় গব্বর সিং এর সাথে বেয়াদবির শাস্তি হিসাবে ঠাকুর বলদেব সিংকে দুই হাত হারিয়ে ডাকাত সর্দারের সাথে বেয়াদবির প্রাশ্চিত্য করতে হয়েছিল; রিমেক সিনেমায় গব্বর সিং এর ভূমিকায় অভিনয় করা পুলিশের হাতে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুরকে দুই চোখ দিয়ে সরকারের সাথে বেয়াদবির প্রাশ্চিত্য করতে হলও।
"অন্ধকারে টিমটিম আলো ছিলেন সিদ্দিকুরের মা। পৃথিবীর সব দুখু মিয়ার মায়েরা যেমন করেন, ময়মনসিংহের তারাকান্দার এই দুঃখিনী নারীও তা-ই করেছিলেন। অন্যের জমিতে কিষানি খেটে দুই ছেলেকে বড় করেছেন। বড় ছেলে নায়েব আলী। সাধারণত এসব পরিবারে একজন বা দুজন আত্মত্যাগী থাকেন। সিদ্দিকুরের মা-ই একা নন। ছোট ভাইকে আরও উঁচুতে তুলতে বড় ভাই নায়েব আলী মাধ্যমিকের পর পড়া ছেড়ে রাজমিস্ত্রির কাজ নেন। ইট-কাট-সিমেন্ট-রডের কঠিন জগতের এই কোমল প্রাণের মানুষটি বলেছেন, ‘ওর ভবিষ্যৎই ছিল আমাদের ভবিষ্যৎ।’ সিদ্দিকুর বলেছিল, ‘আর দুইটা বছর, তারপর সরকারি চাকরি পামু।’"
যে চোখ দিয়ে ঢাকার ৭ টা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারের ফ্লাইওভার ধ্বস উন্নয়ন না দেখে বরং ঐ দৃষ্টি দিয়া শাহবাগ বিরিয়ানি চত্বরের রাস্তা চিনে সেখানে উপস্থিত হয়ে রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করে যাতে করে ননুণ্যতম সেশন জট পেরিয়ে শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকুরীতে প্রবেশ করে পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরনো অবস্থার কিছুটা উন্নয়ন করা যায়।
আন্দোলকারিদের চোখ রেখে দেওয়ার কোন যুক্তি হয় না; ঐ চোখ রাইখা দিলেই বরং রাষ্ট্রের সমস্যা। ঐ চোখ দিয়েই আজকে শাহবাগ বিরিয়ানি চত্বরের রাস্তা চিনেছে; আগামীকাল সকালে সংবাদ পত্রের পাতা খুলে পড়বে সরকারের উচ্চ ব্যাক্তির সরাসরি প্রশ্রয়ে ও কোন সময় সরাসরি নির্দেশে সরকারি ব্যাংক লুট, কুইক রেন্টালের নামে সরকারি কোষাগার লুট; সুইস ব্যাংকে হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার, ইউনেস্কো কর্তৃক সুন্দরবনের রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থাপনে অনাপত্তি দিয়েছে মর্মে সরকারের মিথ্যাচার; মিরপুর থেকে ৪ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার পারি দিয়ে মতিঝিলে পৌছাইতে ৪ ঘণ্টা বাসে বসে থেকে স্থবির হয়ে যাওয়া ঢাকার মানুষের জনজীবনের সাক্ষী হওয়া; সারা বিশ্বে ১০ থেকে ১০০ কোটি টাকায় হাইওয়ে নির্মাণ করা হলেও ২৫০-৩৫০ কোটি টাকায় হাইওয়ে নির্মাণের নামে সরকারি কোষাগার লুটপাট; ঢাকা শহরকে দক্ষিণ এশিয়ার ভেনিস শহর বানানো; ঢাকা শহরে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ মানুষের চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিতের ভাষায় বলতে হয় This is একদম বেয়াদবি। এই রকম বেয়াদবি মাইনা নেওন যায় না।
শিল্পী মনির খানের গানের কথায় বলতে হয়"
"বিধি আমার এ চোখ অন্ধ করে দাও
অনুভূতির হাজার দুয়ার বন্ধ করে দাও।।
তার চোখে আর আমার এ চোখ পড়েনা যেন
তারে নিয়ে স্মৃতির মহল গড়েনা যেন
অনুভূতির হাজার ফাগুন দগ্ধ করে দাও।।
তার মনে আর আমার এ মন থাকেনা যেন যেন
তাওে নিয়ে সুখের স্বপন দেখেনা যেন
অনুভবের হাজার বছর নষ্ট করে দাও।।"
শোলে সিনেমা মুক্তির ৪২ বছর হবে আগামী ১৫ ই আগস্ট। ৪২ বছর চলে গেলেও সমাজ ও রাষ্ট্রে ডাকাত গব্বর সিং দের ভূমিকার কোন পরিবর্তন হয় নি।
জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা পুলিশের রাবার বুলেট ও কাঁদনে গ্যাস দিয়ে জনগণের চোখ অন্ধ করে দাও; অনুভূতিহীন করে দেওয়ার জন্য ৫৭ ধারা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দাও; ৫৭ ধারার ভয়েও যদি মুখ ও কলম বন্ধ না রাখে তবে গুম করে, খুন করে, লাশ সিমেন্টের বস্তায় ভরে ইটে বেধে নদিতে ডুবাইয়া দিয়া উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে এ যুগের গব্বর সিংরা।
২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪৬
আখেনাটেন বলেছেন: রাজা অাসে রাজা যায়...দিন কভু নাহি বদলায়... তবুও অাশায় বুক বাধি...হয়ত একদিন সবকিছুর মিমাংসা হবে...
৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০১
রাকিবুল হাসান অনিক বলেছেন: সমাজের নীচু শ্রেণীর লোকেদের শাসন আর শোষনে যে কি মজা তা একমাএ উপরতলার লোকেরাই পাইছে।তাইতো এরা আজন্ম শোষীত হয়ে আসছে।
৪| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
১৯৮০ সাল থেকে ভারতীয় কোন ছবি দেখি না, এটা কিছুটা প্রতিবাদ; আপনার লেখার শুরুতে ছবি মবির কথা থাকায় মনযোগ সহকারে পড়া হলো না।
৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১২
আবু সাইফ বলেছেন: দারুণ লিখেছেন!!
কিন্তু কে শোনে কার কথা!!!
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৫
সুমন কর বলেছেন: দারুণ লিখেছেন। সম্পূর্ণ সহমত।