নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"
গতকালকে কানাডার একটি প্রধান দৈনিকে সচিত্র খবর বেড়িয়েছে তীর বিদ্ধ একটি হাঁসকে অপারেশন করে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। এই ঘটনা পড়ে গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের পত্রিকা গুলোতে বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শিল্প দুর্ঘটনায় ( রানা প্লাজা: মানুষ মৃত্যুর দিক থেকে) বেঁচে যাওয়া আহত মানুষ গুলোর দূর্ঘটান পরবর্তী জীবনের দুর্দশার কথা পড়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়লাম "হে সর্ব-শক্তিমান বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকগুলোকে মানুষ হিসাবে বাংলাদেশে জন্ম না দিয়ে হাঁস হিসাবে কানাডায় জন্ম দিলি না কেন?"
২০০৯ সালে কানাডা আসার ১ মাস পড়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে একটা রাস্তার মধ্যে ১ টা হাঁস শুয়ে থাকতে দেখি। সেই সময় আমি বাসের জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম সেখানে। কয়েক মিনিট পরে দেখি সাইরেন বাজিয়ে পুলিশের গাড়ি হাজির। পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার অর্ধেকটা বন্ধ করে দিল। ১০ মিনিটের মধ্যে একটা এম্বুলেন্স আসলো ও সেই হাঁসটিকে তুলে নিয়ে গলে পশু হসপিটালে।
দুই দিন পূর্বে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যে রানা প্লাজা ধসের পর হতাহতদের পুনর্বাসনে জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা হওয়া ১২৭ কোটি টাকার প্রায় পুরোটাই (১০৮ কোটি) অব্যবহৃত হয়ে অলস পড়ে আছে গত ২ বছর ধরে; দুই দিন পূর্বে এক পত্রিকায় পড়লাম আহতদের ৪৫% বেকার জীবন করতেছেন শারীরিক ভাবে অকর্মণ্য হয়ে পড়ার জন্য ও টাকার অভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করতেছে ও চিকিৎসা করতে পড়তেছে না।
এই দিকে প্রধানমন্ত্রীর অফিস বলতেছে রানা প্লাজা ধসে হতাহতদের জন্য নির্দিষ্ট করে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোন অর্থ নাই।
১) দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া উচ্চ প্রযুক্তির (থার্মাল স্ক্যানার) উদ্ধার সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিল শেখ হাসিনা সরকার এই ভেবে যে তাতে করে বাংলাদেশ সরকারের সম্মানহানি হবে। সরকারের সম্মানই ছিল তাদের কাছে মুখ্য ব্যাপার; কংক্রিটের নিচে আটকে পড়ে শ্রমিক গুলির জীবন না।
২) উদ্ধার কালীন সময়ে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সামগ্রী যোগান দিতে পুরোপুরি ব্যর্থতা দেখিয়ে আহত কয়েকশ মানুষের মৃত্যু তরান্বিত করেছে। কংক্রিটের নিচে আটকে পড়া শ্রমিক গুলো প্রতি সেকেন্ড ভেবেছে এই বুঝি সরকারি বুলডজার এসে কংক্রিট সরিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করবে মৃত্যুকূপ থেকে। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল যে বাংলাদেশে একটা মানুষের জীবনের মূল্য ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের সমান।
৩) কংক্রিটের নিচে ধুকে-ধুকে নিহত হওয়া মানুষ গুলোর চাপা-পড়া লাশ গুলোও সম্পূর্ণ ভাবে উদ্ধার করেনি তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন নেওয়া সরকারি কর্মচারীরা। ঘটনার ২/৩ মাস পরেও টোকাইরা কংক্রিটের মধ্যে থেকে উদ্ধার করেছে পচা-গলা মাংস লেগে থাকা মাথার খুলি, মেরুদণ্ডের হার।
আহত কয়েক হাজার মানুষের জন্য বিদেশ থেকে যে টাকা এসেছিল সেই টাকাটা ৭৩০ দিনেও আহতদের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব হলো না; সেই টাকার কোন হিসাব ও পাওয়া যাচ্ছে না? তাহলে কি রানা প্লাজার তহবিল খাইয়া ফেলাইছে সরকার?
সোনালী, রুপালি, জনতা ব্যাংকের ৫ হাজার কোটি, বেসিক ব্যাংকের ৩ হজার কোটি খয়েও ক্ষুধা নিবারণ হলো না? শেষ পর্যন্ত আহত শ্রমিকদের জন্য জমা হওয়া ত্রাণের ১০০ কোটি টকাও রক্ষা পেল না?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর "দুই বিঘা জমি" কবিতার কৃষক উপেনের কথা মনে পড়ে গেল
শুধু বিঘে-দুই ছিল মোর ভুঁই, আর সবই গেছে ঋণে।
বাবু বলিলেন, 'বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।
'কহিলাম আমি, 'তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই -
চেয়ে দেখো মোর আছে বড়জোর মরিবার মতো ঠাঁই।
শুনি রাজা কহে, 'বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখানা,
পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দিঘে সমান হইবে টানা -
ওটা দিতে হবে।'কহিলাম তবে বক্ষে জুড়িয়া পাণি
সজল চক্ষে, 'করুন রক্ষে গরিবের ভিটেখানি।
সপ্তপুরুষ যেথায় মানুষ সে মাটি সোনার বাড়া,
দৈন্যের দায়ে বেচিব সে মায়ে এমনি লক্ষ্মীছাড়া!'
আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল রহিল মৌনভাবে,
কহিলেন শেষে ক্রুর হাসি হেসে, 'আচ্ছা, সে দেখা যাবে।'
পরে মাস-দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হইনু পথে -
করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি মিথ্যা দেনার খতে।
এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি,
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭
কর্পোরেট ভালোবাসা বলেছেন: ছুপা নাস্তিক দেশ বরেণ্য মানবতাবাদী শাহরিয়ার কবির ওরফে মুরগি কবির এই সব ইস্যুতে কথা বলেন না কেনো বিষয়টি বোধ গম্য নয়।
এত মানুষ মারা গেলো কারো কোন মাথা ব্যাথাই নাই। আসলেই আমরা রহস্যময় জাতি
৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩২
হ্রদয় ৩৩ বলেছেন: বাংলাদেশ এর ও একটা সরকার পিপিলিকাও একটা পাখি .।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।।।ছবি গুলা দেখে অনেক কষ্ট লাগছে ।আল্লাহ্ যেন এদের সবাই কে জান্নাত নাজিল করে
৪| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৪
হাসান আল নাফি বলেছেন: আরেকটা মানুষের কষ্ট দেখে এই মানুষগুলার কষ্ট কেন লাগে না, আমি সেটাই বুঝি না ৷ এমন তো না যে সামর্থ্য নাই ৷ এইসবকিছু দিয়েও বহু আরামে থাকতে পারবে সরকার ৷ অথচ দুইদিনের এই জীবনের অতিরিক্ত লালসার জন্য কতগুলো মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে এরা ৷ কি করে এত কমে গেল এদের মনুষ্যত্ব? নিজেরই তো লজ্জা লাগে ৷
৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:১০
নতুন বলেছেন: দেশের মানুষের কিসের যে অভাব বুঝিনা...
আমাদের দেশের মানুষের চিন্তাই অন্যরকমের....
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯
সুশান্ত হাসান বলেছেন: উফফ,,,,,, কি যে অসহায় আমরা,,,,,,,