নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"
প্রবাসে ১৪ তম ঈদ উদযাপন করলাম আজকে। রাতে ঘুমোতে যাবার পূর্বে ঘড়ির এলার্ম সেট করেছিলাম সকাল ৭ টা বেজে ১৫ মিনিটে। সকালে এলার্ম বাজলে অন্যান্য দিনের মতো বিরক্তি সহকারে এলার্ম বন্ধ করে আবারও ঘুম। ঘুম থেকে জেগে দেখি ৭ টা বেজে ৫০ মিনিট। পড়ি-মরি করে গোসল করে দে দৌড় বাসা থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে একটি ইনডোর ফুটবল খেলার মাঠে।
রোজার ঈদে নামাজের জামাত ৮ টা বেজে ৩০ মিনিটে শুরু হবার কথা থাকলেও শুরু হয়েছিল প্রায় ৯ টায় এবং সেদিন ছিল কর্ম দিবস। ভেবেছিলাম আজকে যেহেতু শনিবার ও ছুটির দিন তাই নামাজ সকাল ৮ টা বেজে ৩০ মিনিটে শুরু হবার কথা থাকলেও হয়ত ৯ টায় শুরু হবে রোজার ঈদের মতো। আমার অবস্থা হইলো প্রতিদিন সঠিক সময়ে ইস্টিশনে উপস্থিত হইলেও ট্রেন লেট করে আসে বলিয়া একদিন লেট করে ইস্টিশনে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম ঐদিন সঠিক সময়ে ট্রেন চলিয়া গিয়াছে।
ঈদ মাঠে প্রবেশ করিয়া দেখি ইমাম সাহেব ৬ তাকবীরের ঈদের নামাজের ২ তাকবীর ইতিমধ্যেই বলিয়া ফেলিয়াছেন। তরি-ঘড়ি করে নামাজের নিয়ত ছাড়াই নিজে ২ তাকবীর বলিয়া ৩ য় তাকবীরে ইমাম সাহেবের শঠে কণ্ঠ মিলাইলাম। নামাজ শেষে মনে পড়িল নিয়ত করতে ভুলে গিয়েছি। মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম ঈদের নামাজ পড়িবার উদ্দেশ্যেই যেহেতু মাঠে উপস্থিত হইয়াছি আল্লাহ চাইলে নিয়ত ছাড়াই নামাজ কবুল করিবেন।
নামাজ পড়িয়া বাহির হইয়া গাড়ির পার্কিং লটে কয়েক শত গাড়ির মাঝে নিজের গাড়িটি খুঁজিতে লাগিলাম। হঠাৎ দেখি একই ব্রান্ডের একটি গাড়ি লাইনে আগইয়া যাইতেছে। আমি ভাবিলাম বউ আগেই গাড়ি নিয়ে লাইনে দাঁড়াইছে যাতে করে পরে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা না করতে হয় বের হতে গিয়ে। গাড়ি সামনে আগাইয়া যাইতেছে ভাবিয়া আমিও গাড়ির পিছনে দিলাম ভো দৌড়। গাড়ির কাছে গিয়া দেখি গাড়ির মধ্যে দুই অষ্টাদশী তরুণী আমার অবস্হা দেইখা মুচকি-মুচকি হাঁসে। এদিকে আমিতো লজ্জায় মরি-মরি। ঐ গাড়ি থেক যখন আমার গাড়ির দিকে ফিরিতেছিলাম তখন দেখি গাড়ির মধ্যে বসে আমার বিবি মুচকি-মুচকি হাঁসে। বুঝিতে পাড়িলাম সে আমার ঐ গাড়ির পিছনে দৌড়ানো দেখেছে।
গত দুই বছর অন্য ৬ জনের সাথে মিলে গরু কুরবানি দিয়েছিলাম এখানে। ঈদের নামাজের পরে চলে যেতাম কুরবানি দিতে বাসা থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে একটা ফার্মে। গত ২ বছর যে গরু কুরবানি দেওয়া হত সেগুলোর ১ ভাগে প্রায় ১ মন মাংস পাওয়া যেত যার ৩ ভাগের দুই ভাগ হতো ২৫ কেজির বেশি। ২ জনে মিলে তা শেষ করতে লেগে যেত ৬/৭ মাস। এবারে এখানে কুরবানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হলো ডাক্তারের অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া থকে বিরত থাকার নিষেধাজ্ঞার করনে। যাদের সাথে কুরবানি দিতাম সেই ভাইদের মন খারাপ কারণ তারা একজন অভিজ্ঞ কসাইয়ের সার্ভিস থেকে বন্বিচিত হতে হচ্ছে এ বছর।
আজকে ঈদের নামাজ পড়ে এসে বাবা-মা কাউকেই ফোন করি নাই ইচ্ছে করেই কারণ তারা শুনে মন খারাপ করবে কারণ এবারে ঈদে কুরবানি দেই নি এই কারনে যদিও দেশে পরিবারের সকল সদস্যদের নামে কুরবানী দেওয়া হবে। আমি নিস্চিত যে মা ফ্রিজে কিছু কুরবানির মাংস রেখে দেবেন আগামী কুরবানি ঈদ পর্যন্ত এই আশায় যে ছেলে যদি এই বছর দেশে আসে।
ঈদের নামাজ শেষে বাসায় ফিরিবার পথে দোকানে প্রবেশ করিলাম চাল-ডাল কিনিবার উদ্দেশ্যে। অতঃপর বাসায় ফিরিয়া রাইস কুকারে রান্না করা পোলাও এর মাঝে মুরগির মাংস প্রবেশ করাইয়া পলাশ মিয়ার চিকেন বিরিয়ানি খাইয়া দিলাম ৩ ঘণ্টার ম্যরাথন ঘুম। ঘুম থেকে উঠে দেখি ইতিমধ্যে ৫ টা বাজে। রাতে বাসায় ২-৩ জনকে আমাদের সাথে খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিলাম। অতঃপর রান্না ঘরে গমন ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শেখা কিছু রান্না এর পুঃনপরীক্ষন। রান্না হইল প্যাকেজ নাটকের মতো শর্টকাটে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শেখা ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগীটি মারা গেলেও আমাদের রান্না-বান্না অতিথি আসিবার পূর্বে সম্পন্ন হইলো না। অতঃপর রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে অতিথিদের সাথে গল্পে তালে-তালে চলিল আমার বিবির টুনা মাছের কাবাব বানানো।
ইতিমধ্যে এক ছোট ভাই, দাওয়াত খাইতে আসিয়া আমার বাসার পাশে বাস থেকে নামিয়া আমাকে বারংবার ফোন করিয়া ও আমার সাড়া না পাইয়া (দুপুরে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল ভাইব্রেশন মুড থেকে সাধারণ মুডে পরিবর্তন করিতে ভুলিয়া গিয়াছিলাম) অভিমানে বাসায় ফিরিয়া গিয়াছে। বেচারা বাসা থেকে বের হয়েছিল শীতের কাপড় না পড়িয়াই তাই ঠাণ্ডায় বাহিরে বেশিক্ষণ টিকতে পারে নাই (হঠাৎ করিয়া আমাদের শহরে আজকে ফিলস লাইক তাপমাত্রা মাইনাস ১ ডিগ্রীতে নামিয়ে গিয়াছে)। আমারে বারং বার কল দিতে গিয়া বেচারার মোবাইলের ব্যেটরী ইন্তেকাল ফরমাইয়াছিল বিধায় পরবর্তীতে কল করিয়াও আমি তাহাকে পাই নাই। বাসায় ফিরিয়া মোবাইলে চার্জ দিয়া তার করুন কাহিনী বর্ণনা করিতে লাগিল। নিজের বোকামির জন্য লজ্জায় পড়িয়া গেলাম ও তাহারে বলিলাম ১০ মিনিট পড়ে আমি তোমার বাসায় সামনে উপস্থিত হইতেছি; তুমি রেডি থাক। শেষে, বাসায় দাওয়াত খেতে আসা এক ছোট ভাইকে নিয়া তাকে নিয়া আসিলাম।
এদিকে পরচিত ২/১ জন মানুষের দাওয়াতের ওভারল্যাপ হইয়া গিয়াছিল আমার প্রতিবেশী এক বড় ভাইয়ের সাথে। ফলাফল: এই সমাধানে উপনীত যে উনার বাসায় পোলা-মাংস খাইয়া ডেসার্ট (সাধারণত দই, ড্রিন্কস, মিষ্টি ইত্যাদি আইটেম হইয়া থাকে) আমার বাসায় খাইবেন। শর্ত পালনের উদ্দেশ্যে বাধ্য হইয়া এক বাসা থেকে অন্য বাসায় আগমন ও ওরস্যালাইন বানানোর উপকরণ ৩ আঙ্গুলের এক চিমটি ডেসার্ট ভক্ষণ করিয়া নিজ নিজ বাসায় প্রত্যাবর্তন; সেই সাথে সমাপ্ত হইলা আমার প্রবাস জীবনের ১৪ তম ঈদ।
******** আবারও ঈদের শুভেচ্ছা সবাইকে ***********
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারক রায়হান ভাই।
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৩
মামুন রশিদ বলেছেন: ঈদ শুভেচ্ছা ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারক রশিদ ভাই।
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
তাসনুভা সাখাওয়াত বীথি বলেছেন: ঈদ মুবারক ভাইয়া ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারাক ডাক্তার আপা।
কুরবানির মাংস অতিরিক্ত খাইয়া পেট যেন গ্যাসে ভর্তি না করা এই রকম একটা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পোষ্ট দিয়া দেন ডাক্তার আপা।
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
নীরব হাসান মুননা ০০৭ বলেছেন: ঈদ মোবারক পলাশ ভাই!!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারাক নীরব ভাই। ঈদের দিনে কিন্তু নীরব থাকা যাবে না সরব হইতে হবে।
৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:২২
এম ই জাভেদ বলেছেন: ঈদ মোবারক । ভাই কোন দ্যাশে থাকেন?
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:৫৮
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারক জাভেদ ভাই। থাকি বরফের দেশ কানাডায়।
৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২৭
অতৃপ্ত কল্পনার মানব বলেছেন: গল্প খানা পড়িয়া হাসিবো নাকি কাঁদিবো তাহা বুঝিতেছি না.....
অবশ্য আমার ঈদ কাটে বাড়ির ছাদে একা একা বসে থেকে ।তারপরও সবার কাছে ঈদের দাওয়াত থাকল ।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:০০
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: কি বলে ঈদের দিন বাড়ির ছাদে একা একা কাটবে কেন। দেশে থাকতে আমার বেশিভাগ সময় কাটত বন্ধুদের সাথে আড্ডা মেরে।
ভাল থাকবেন। ঈদ মোরারক।
৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৩৯
কলমের কালি শেষ বলেছেন: ঈদ মোবারক ।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:০০
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারক
৮| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৪৫
আবু শাকিল বলেছেন: পড়ে আরাম পাইলাম।
ঈদের শুভেচ্ছা ।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:০০
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ঈদ মোবারক শাকিল ভাই।
৯| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫
অতৃপ্ত কল্পনার মানব বলেছেন: ভাইরে ঈদে বন্ধুরা সব বাড়ি গেছে ।এলাকায় যারা আছে সবাই বড় ভাই ।তাই একা একা বসে থাকি ।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৯
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: বন্ধুত্বকে কখনও বয়সে মাঝে সিমাবদ্ধ রাখা উচিত না। আমার এখানে আমার বয়সের একজন মাত্র বন্ধু আছে। কিন্তু আমার বন্ধুর সংখ্যা ৮/১০ জনের মতো। কারো বয়স আমার চেয়ে ১৫ বছর বেশি। আমরা সপ্তাহে ১ দিন কার্ড খেলতে বসি না হয় কফি খেতে বসি সাথে আড্ডা। আড্ডার বিষয় হতে পারে ক্যরিয়ার, রাজনিতী, অর্থনিতী অথবা বিশ্ব রাজনিতী।
আপনিও আমার মতো চেষ্টা করে দেখতে পারেন। ভাল মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করুন সেই মানুষটা যে কোন বয়সের হতে পারে।
ভাল থাকবেন। ঈদ মোবারক।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা ভ্রাতা