আমাদের কবির ভাই সাদামাটা ধরনের মানুষ। কারো সাতেও নাই পাচেও নাই। কিন্তু উনি না থাকতে চাইলেও নিওতি উনারে সাত কিংবা পাচের চক্করে বহুবার ই ফেলছে।
বৌ বাচ্চা সহ উনি সুখেই দিনাতিপাত করছিলেন। কিন্তু বাধ সেধে বসলেন উনার বস। উনার সারল্যে বস এতোই মুগ্ধ যে তিনি চান কবির ভাই সরকারি ভাবে একটা বিদেশী উচ্চতর ডিগ্রী নিএ আসুক। এতে দেশের ও ভালো হবে আর কবির ভাইএর ও একটা ডিগ্রী কাম কিছু পইসা কড়ি হবে। সবাই যেখানে এ ধরনের অফার পেলে কোলা ব্যাঙ্গের মত এক লাফ মারবে সেখানে কবির ভাই মনে মনে ভাবছিলেন ''শালার ভালো হইয়াও কি লাভ টা হইতাসে...বউ বাচ্চা ছাড়া থাকুম কেম্নে''. তাছাড়া ইতিপূর্বে উনি বস রে আলরেডী একবার ফাকি মারসিল...এইবার আর রেহাই পাচ্ছেন না।
যাই হোক, অবশেষে বিদায়ের টাইম ঘনায় আসল...জিয়া বিমানবন্দরে শেষবারের মত স্ত্রী সন্তানদের দেখে অতি কষ্টে কান্না সংবরন করে বিদায় নিলেন।
ফ্লাই করছেন ইউরোপে, তো প্রথম স্টপেজ দিল্লীতে এবং সেখানে আবার 14 hrs stop over . সাতসকালে বের হয়েছিলেন, তাই মখে কিছু না দিএই চলে এসেছেন, তারপর আবার Jet Airways এর অতি সুস্বাদু () খাবার দাবার মুখে রচলোনা। ঠিক করলেন দিল্লীতে গিএ কিছু খাবেন। কিন্তু বিধি বাম, ভ্রমনের অভিজ্ঞতা না থাকলে যা হয় আর কি। উনার পকেটে না ছিল রুপি না ছিল international credit card. ছিল খালি ১০০ ডলারের নোট। যেহেতু ট্রানজিটে ছিলেন তাই দিল্লী বিমানবন্দরে চলাচল সীমিত ছিল। আর উনার পরিধির মধ্যে কোথাও ডলার ভাঙ্গানোর ব্যাবস্থা ছিল না। পরে উনি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে এক পুলিশ কর্মকর্তা কে গিয়ে ঘটনা খুলে বললেন আর এও বললেন যে উনাকে যাতে ওইপারে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় ডলার ভাঙ্গানোর জন্য। পুলিশ উনাকে জিজ্ঞেস করলেন ''WHere r u from''. তদুত্তরে ভয়কাতুরে কবির ভাই উনার বাঙ্গালি পরিচয় দিলেন। পুলিশ বলল '' Whatever happens, u r not allowed to cross this limit''. ভগ্ন হৃদয় কবির ভাই মনে মনে ভারতীয়দের একচোট নিলেন, '' হারামীর বাচ্চারা বাঙ্গালী দেখলেই চুল্কানী উঠে না?? ''. আর উনার বারবার মনে হচ্ছিল একটা কথা, Morning shows the day..ইউরোপে অবস্থান কত সুখকর হবে তা উনি দিব্য দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছিলেন।
১৪ ঘন্টা পর যখন লুফথান্সা এর বিমানে চড়ে বস্লেন, খালি মনে হচ্ছিল কতখনে খানা দিবে। একেকবার বিমানবালারা আসে আর উনি ভাবেন এই বুঝি খাবার নিএ আসছে। প্রথমে বিমানবালারা সাদা প্যাকেট এর মত কিছু একটা বিলি করছিল...মনে মনে ভাবলেন...যাক বিস্কিট দিএ শুরু হবে...খারাপ না। যখন হাতে নিলেন...দেখলেন নরম কিছু একটা। ভাব্লেন বইদেশী বিস্কিট এতো নরম হয় জানতাম না...কালে কালে কত কি দেখব কিন্তু প্যাকেট খোলার পর উনার আক্কেল্গুড়ুম...কেম্নে কি...এত দেখি ভিজা একখান সাদা কাপড়...ধুর এইটা কি কামে দিল...চারপাশে তাকায় দেখলেন সবাই এইটা দিয়া মুখ হাত মুছে।পরে উনি ভালো মত প্যাকেট পইড়া দেখলেন লেখা আসে ''Refreshing Towel'' . সাথে সাথে উনার পেটে আরো একটা মোচোড় দিল।
চলবে।
(আমার লিখার অভ্যাস একদম ই নাই...তাই ঘটনার বিবরন হয়ত তেমন সুবিধার হয় নাই...ব্লগারদের মতামত সাপেক্ষে লেখাটা continue করব...নাইলে সামুর পাঠক হয়েই থাকব )