কারেন্ট চলে গিয়েছে খুব গরম রুমের মধ্যে তখন একটু
ঠাণ্ডা বাতাসের আশায় বেল কুনিতে দাড়িয়ে আছি।
আমার বাসার নিচের গলিতে অনেক ছেলে মেয়ে কোচিং
করে কোন এক মায়াবতী সুন্দরী শিক্ষিকার কাছে।
এত প্রসংশা করলাম কারন তাকে আমি ভালবেশে
ফেলেছিলুম, কিন্তু বয়সে বড় দেইখা অন্নের জন্য
সেক্রিফাইস করছি এই আর কি।বেলকুনি থেকে
খুব স্পষ্ট ভাবে সবাইকে দেখা যায়। তবে এখন শুধু
একজনকেই
চোখে পড়ল, চোখে চশমা(ভাবয়ালা না),চুলগুলো
কোঁকড়ানো, খুব সাধারণ মানের একটা পোশাক হয়ত
পরা কিন্তু সব কিছু মিলিয়ে দেখতে অসাধারন লাগছিল।
যেইরকম সাধারণ মানের অশাধারন মেয়েকে আমি
অনেক দিন ধরে খুজছি।
খুব ভাল লেগে গেল।একটু পরেই মেয়েটি আমাকে অবাক
করে দিয়ে মনোযোগ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল,প্রথম
দেখাতেই কোন মেয়ে কোন ছেলের দিকে এভাবে তাকাবে
তা ভেবেই চরম শিহরিত হচ্ছি।ভাবছি মেয়েটি হয়ত আমার
মত ছেলেকেই এত দিন ধরে খুজছে(আনন্দে আমার মনের
গিটার টন টন করে বেজে উঠল)।
চোখ বুজে টাইম মেশিনে করে সামনের কথা ভাবতে
লাগলাম। আমি ভয়ে ভয়ে তার হাত ধরতে যাচ্ছি
আবার ধরছি না , সে বলল এই তুমি কি ফিটার খাও
যে এখন হাত ধরতে ভয়, আমি কইলাম পরথম পরথম
তো প্রাক্টিস করলেই ঠিক হয়ে যাবে।
টাইম মেশিনের চার্জ ফুরায় যাওয়াতে চোখ খুললাম
মুহূর্তের মধ্যেই একটি আনরোমান্টিক মাছি বাম চোখে এসে
চোখে পড়ল তখন যা হবার তাই হল! আমিত রাজকন্নার দিকে
তাকিয়ে ছিলাম যখনি সেটি আমার চোখে এসে পড়ল তখনি
আমার বাম চোখের পলক পড়ল।সাথে সাথেই বেল কুনি থেকে
সরে আসলাম।
হায় হায় এইডা কি হইল!! মেয়েত ভাববে আমি তাকে
চোখ টিপি মারছি।এখনত
সে আমাকে খারাপ ভাববে, আমি
ইহাকে হারাইলাম, আমি আমার রাজকন্নাকে হারাইলাম।
তাও বুকে অনেক আশা নিয়ে আস্তে আস্তে আবার বেলকুনির
কাছে গিয়ে যেই না দাঁড়িয়েছি দেখি মেয়েটি এক সুদর্শন বালক
কে আমার দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। কাম সারছে
কেস খাইয়া গেলাম মনে কয়।
মাইয়া আমারে যাই ভাবুকগা কিন্তু এখন যদি নালিশ করতে
চইলা আসে যে ওই পুলারে লইয়া তাইলে আমি শেষ।ভাইয়া
আমারে ফুটবল বানাইয়া খেলব।
হটাথ আমার বাসার করনিং বেল বেজে উঠল।বেলকুনিতে গিয়ে
দেখলাম সেই মেয়ে আর সাথের ওই পুলা ওইখানে নাই।
হায় হায় তাইলে কি এরাই বেল টিপল। আস্তে আস্তে
গিয়ে দরজা খুলে খুললাম,
হা তাহারা দুইজন আমার দরজার সামনে দাঁড়ান।মাইয়ার দিকে
কি তাকাইব ভয়ে আমার ভয়ে আমার প্যান্টের তাপমাত্রা,
পরিবর্তন হওয়ার মত অবস্থা! যেকন সময় কিছু একটা হয়ে
যেতে পারে।
ছেলেটিঃ এই বাসায় কে কে থাকে?
আমিঃ আমাদের রুমে আমি এবং আমার ভাইয়া থাকি
ছেলেঃ তোমার ভাইকে ডাক?( অস্থিরতার চরম পর্যায়ে)
আমিঃ উনিত বাসায় নেই(মিথ্যা কথা)
ছেলেঃ এই বাসার মালিক কে?
আমিঃ আব্দুল কুদ্দুস আলি মিয়া।
ভয়ে আমার পা কাপছে আর মেয়েটা তা দেখে মুচকি মুচকি
হাসছে।এত সুন্দর হাসি জিবনেউ আমি দেখিনি।
(১০ সেকেন্ডের মধ্যে তাকে নিয়ে অনেক কিছুই ভেবে
ফেললাম। একটা ছোট্ট বাসা দুইজন একসাথে, আমার
অফিসে যাওয়ার টাইম চলে এসেছে, সবকিছু সুন্দর
করে গুছিয়ে দিয়ে একটু ভালবাশার পরশ দিয়ে বলল
তাড়াতাড়ি চলে এস একটুও দেরি করবেনা কিন্তু)
পরক্ষনেই ছেলেটা বলল এই তুমি কি ভাব।
আমিঃ না না এইত কিছুনা
ছেলেঃ আচ্ছা আমাকে একটা কথা বল?(ভাবলাম এইবার
বলবে যে মেয়েটাকে কেন আমি চোখ টিপি মেরেছি)
আমিঃ জী বলেন?
ছেলেঃ আচ্ছা তোমাদের বাসার কোন রুমটা ভাড়া হবে!!!!!(
মনে হইল পুলার গাল পিছে একখান চটকানি মারি)
আমি বললাম এইত আপনার পিছনের রুমটা।
সন্দেহ বসত বাসার নিচে গিয়ে দেখলাম আমার বাসার বেল কুনির
একটু নিচেই বড় করে টুলেট লাগিয়ে রাখা আর সেখানে বড় করে
লিখা-
""ফ্লাট ভাড়া দেওয়া হইবে"
বুঝিতে পারলাম মেয়েটি আসলে আমার দিকে না ওই টুলেটের
দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে ছিল!!