পরীক্ষা অনেক তাড়াহুড়া কইরা বাসে উঠলাম
মাথার মধ্যে
সব ফিজিক্স এর সুত্র ঘুরতাছে।আমার দুই
প্রানের বন্ধু
দুইজন ওয়ালা সিটে বসল এবং আমারে তিনজন
ওয়ালা
সিটে একলা বসাইল,পাশে কেউ নাইক্কা।
ভাবলাম ভালাই হইল
আরামছে এখন বই
দেখতি দেখতি যাইতি পারমু।
একটু পরেই বাগড়া বাজল।এক
সুন্দরি ললনা তার সাথে তার
মাম্মি এবং তার পিচ্চি কুচুকাচু বোন
বাসে উইঠা পরল।
পুরা বাসে তিন খান সিট ফাকা।আমার পাশের
দুইখান আর আমার
পিছনে একখান। প্রথমে মেয়েটা আইসা বলল
আমি কি বসতে
পারি?মনে মনে ভাবলাম এর
থাইকা পৃথিবীতে আর ভালা কোন
প্রস্ন কোথাও নাইক্কা।আসলে গ্রাম
থাইকা ঢাকায় আসার পর
এই প্রথম কোন মেয়ের পাশে বসাত!!!!!!
আবার বই এর দিকে নজর দিলাম। হঠাত তার
মা আইসা বলল
ওই ছেলে পিছনে গিয়া বস।মনে মনে কইলাম
ওই মহিলা
তোমার দারগা হউয়া উচিত আছিল।কার কপাল
যে পুরাইছ!!
কি আর করার বর্তমানে এই লিঙ্গের মানুষ যাই
কয় তাই
শুনতে হয়।পিছনে গিয়া বসলাম।তবে এইবার
সরাসরি ললনার পিছনে।একটু পরেই তার
মা সামনে একটা
সিট ফাঁকা হওয়ায় এক মহিলার
কাছে গিয়ে বসলেন এবং
সেই ললনার পাশে এসে বসল আরেকজন
মেয়ে হয়ত তার
বান্ধবি হবে।আমি আসলে বই দেখতে খুব
বেস্ত।
কিন্তু একটু পরেই মহারঙ্গ শুরু হইল। ডাল মে কুচ
রঙ্গিন হে!
মেয়েটা খুব অপালক দৃষ্টিতে বার বার চোখ
ফেলছে।
খুব লজ্জা রাঙ্গা চেহারায় পিছনে একটু চোখ
রাখছে
আর আমি তাকাতেই চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।তার
ঠোঁটের পাশে
খুব ছট্টো একটা তিল।আসলে অসাধারন
লাগছিল। এইরকম
পরিস্থিতিতে জীবনে খুব কম পরেছি তাই খুব
লজ্জা পাচ্ছিলাম।
পাশের বন্ধুরাও ব্যাপারটা খেয়াল করেছিল।
মনে মনে
গালি দিলাম
শালারা আমারে একা রাইখা এখন
বইসা বইসা মজা
লুটতাচ। ক্রমাগত ললনার তাকানর হার বেড়েই
চলছে এবং
আর সমানুপাতিক হারে আমি যা পরীক্ষার জন্য
মাথার মধ্যে
সঞ্চয় করিয়া আসিয়া ছিলাম তাহা ক্রমাগত
ফাকা হইতাছে।
সত্যি আমি ভীষণ লজ্জা পাচ্ছিলাম।
মেয়েটা এবং তার বান্ধবি ফিস ফিস
করে কিছু বলার চেষ্টা করছে।কিছু
না ভেবে পেয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে
থাকলাম।হাসমু না কানমু কিছুই
ভাইবা পাইতাছিনা।
।বুকে হাত দিয়ে দেখলাম হার্ট সেকেন্ড এ
তিনবার বিট করছে ।
মনে মনে ভাবলাম কোন সমায় যে আমার হার্ট
ড্রপ খায় ঠিক নাই!!
তারপর সে মোবাইল বের করল।
মোবাইলে কি যেন একটা উঠাল
মনে হল।তারপর প্রায় অনেক্ষন
মোবাইলটা একটু কাত করে
একভাবে ধরে রাখল।
আমি ওইদিকে না তাকিয়ে জানালার বাইরে
তাকিয়ে থাকলাম। মেয়েটা এইবার
সত্যি অনেক রাগ করল বলে
মনে হল। মেয়েদেরকে রাগলে যে সত্যি খুব
সুন্দর লাগে তা
সরাসরি দর্শন করিলাম।তার ঠোঁটের পাশের
তিল টা যেন
আমাকে ফেভিকলের মত টানছিল। কিন্তু
পরক্ষনেই নিউটনের
তৃতীয় সূত্রের কথা মনে পড়ে গেল।
তারপর সে তার ব্যাগ থেকে কি যেন বের
করে কলম দিয়ে কি যেন
লিখল তারপর বার বার তার
পিচ্চি বোনকে কি যেন বলছিল।পিচ্চি
বোনটা আমার
দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিল।
পিচ্চি মেয়ের হাসি দেখে আর লজ্জা পেলাম।
সে কাগজটা আমার দিকে
দেওয়ার সুজুগ খুঁজছে কিন্তু আবার ভয়
পাচ্ছে বলে মনে হল।
আমি এইবার ও
জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকার ভান
করলাম
মেয়েটা এইবার সত্যি ভীষণভাবে রাগ করল
মনে হল।হয়ত
ভাবছিল এই ছেলে মনে হয় এখন লুকায় লুকায়
ফিটার খায়!!
পরক্ষনেই সেই দারগারুপি মহিলার চিৎকার-
এই তোমরা এসে পড় এখনি
নামতে হবে। এইবার আমি খুব করে তার
দিকে তাকালাম ঠোঁটের পাশের সেই
তিলটা যেন আস্তে আস্তে তার
ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে।
নেমে যাওয়ার পড় খুব
মায়াবি দৃষ্টিতে একপলক তাকাল।কেন
জানি ইচ্ছা থাকা সত্তেও আমি তার
দিকে তাকিয়ে থাকতে
পারলাম না।
মানুষটাই আমি এইরকম ফুটবল
খেলতে জানি কিন্তু গোল দিতে
জানি না।
দিন শেষে আমরা দুজনেই একা।
দিনশেষে আমাদের দুজনের পুঁজি
শুন্য। তবে সেই দিন
থেকে আমি বুঝতে শিখেছি জীবনে চলার পথে
সত্যি কাওকে দরকার। যার
কারনে আমি হাসব। যার কারনে আমি
কাদব।যাকে ভেবে ওই নীল আকাশ ছুঁয়ার স্বপ্ন
দেখব। সত্যি সেই
দিনের অপেক্ষায় আছি।