এলার্ম শুনে সেহরী খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠলেন। আপনার স্ত্রী রান্নাঘরে তরকারী গরম করছেন। বাবা মার দেখাদেখি আপনার ছোট ছোট ছেলেমেয়ে দুটোও উঠে গেছে, রোজা রাখবে তারাও। হাতমুখ ধুয়ে সবাই মিলে খেতে বসেছেন কিন্তু খাবার আর মুখে তুলতে পারলেন না! পাহাড় চাপায় চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে গেলেন সবাই!
এমনটিই ঘটেছে গতরাতে চট্টগ্রামের তিন জেলার অসংখ্য অসহায় পরিবারে। এখন পর্যন্ত ১৩১ জন নিহত, সংখ্যা আরও বাড়ার আশংকা আছে। এই হতাহতের সংখ্যা গত ১০ বছরের ৬ বার পাহাড় ধ্বসের ঘটনার রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
# ২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রামের সাতটি স্থানে মাটিচাপায় ১২৭ জনের মৃত্যু হয়
# ২০০৮ সালের ১৮ অগাস্ট চট্টগ্রামের লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকায় পাহাড় ধসে চার পরিবারের ১২ জনের মৃত্যু হয়
# ২০১১ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রামের টাইগার পাস এলাকার বাটালি হিলের ঢালে পাহাড় ও প্রতিরক্ষা দেয়াল ধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়
# ২০১২ সালে ২৬-২৭ জুন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান ও সিলেটে ৯৪ জনের প্রাণহানি ঘটে
# ২০১৫ সালের ২৬-২৭ জুন টানা বর্ষণ, ধস আর পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে ১৯ জনের মৃত্যু হয়।
এই দূর্ঘটনার! (পরুন গনহত্যা) জন্য দায়ী কে?
প্রাকৃতিক দুর্যোগ? দু’দিনের টানা বর্ষণ? হ্যা, ঠিক ধরেছেন।
নিয়ম ভেঙ্গে পাহাড় কাটেন, সেই মাটি বিক্রি করে টাকা কামান।
কাটা পাহাড়ের নিচে কিছু ঘর বানিয়ে ভাড়া দেন, আরো কিছু টাকা আসুক।
অসহায় গরীব 'হারামজাদা' গুলো আসে কেন এখানে কম টাকায় ভাড়া নিয়ে মরতে!
ওদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে! মামুর বাড়ীর আবদার!!
করতে থাকেন, কিচ্ছু হবে না আপনার। আপাতত কয়েকদিন একটু চুপচাপ থাকেন। প্রশাসনকে টাকা দিসেন কি কিছু হওয়ার জন্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর কি আপনার হাত আছে! ইন্নালিল্লাহ...
নিহতের পরিবারে কিছু টাকা দিলেই হবে, কি বলেন। একজন মানুষের জীবনের দাম বিশ হাজার টাকায় রফা করে ফেলসেন, বাহ!
ব্যাপার না, আপনারা ৮ বছরের বাচ্চার ইজ্জত কিনতে পারেন ১ হাজার টাকায়! সে হিসাবে ঠিকই আছে। আপনারা পারেনও! পারবেনই না বা কেন! আপনার তো অনেক ক্ষমতা!
তবে মনে রাইখেন, আপনার আমার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাধর একজন চুপচাপ দেখতাছেন সব। হিসাব নিকাশ ঠিকঠাক মত মিলায়া রাইখেন। তিনি যখন হিসাব চাইবেন তখন কিন্তু সময় আর থাকবোনা।
জাকারিয়া মুবিন
14/07/16
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৬