কত রকম মানুষ ঘোরে
এই না পৃথিবীতে,
কারো কথা মিষ্টি লাগে
কারোর কথা তিতে।
কেউবা বলেন বেশী কথা
কেউ কথা কন অল্প,
কারো মুখে জ্ঞানের কথা
কেউবা করেন গল্প।
কেউ কথা কোন উচ্চস্বরে
কেউ কথা কোন আস্তে,
কারো কারো মজার কথায়
ইচ্ছে করে নাচতে।
কারো কথায় বুকটা জুড়ায়
শিতল করে মনটা,
কেউবা আবার কথায় পটু
কাজের বেলায় ঘণ্টা।
কেউবা বলে মিথ্যে কথা
কেউবা বলেন সত্য,
কারো মুখের মধুর কথায়
ভরে উঠে চিত্ত।
কয় কথা কেউ মন গলানো
হাসিল করতে কাজটা,
‘পল্টনে’ কেউ করে গলাবাজি
পেতে ক্ষমতার তাজটা।
কেউবা বলে গরম কথা
গরম করে চোখ,
কেউ কথা কয় মন যুগিয়ে
কেউবা করে Joke।
অনেকে বলেন দুঃখের কথা
মুখটা করে চুন,
আবার কারো মজার কথায়
মানুষ হেসেই খুন।
অনেকে আবার কথা দিয়ে
রাখেনা সেই কথা,
আপন কারো কটু কথায়
মনে লাগে ব্যাথা।
কেউ কথা কয় বড় গলায়
করে কেউ গলাবাজি,
অবসরে কেউ পাজী ভীষণ
কাজের বেলায় কাজী।
অনেকে কয় গরম কথা
ভয়ে কাঁপে সবাই,
“আমার উপর বললে কথা
করব তারে জবাই”।
কারো কারো কথায় মানুষ
বলে, “জলদি পালা”,
কারো কথা মনের মধ্যে
ধরায় ভীষণ জ্বালা।
বলতে গিয়ে সহজ কথা
অনেকে কথা প্যাচান,
অনেকে আবার ছন্দ কথায়
হৃদয়টাকে নাচান।
কেউবা আবার উপদেশ দেন
কথা কম বলতে,
কেউ কথা কোন মেপে মেপে
উঠতে, বসতে, চলতে।
মুখ থাকলেই যায় না বলা
কথার ফুলঝুড়ি,
বোবারা তাই কথার রাজ্যে
ওড়ায় ধুসর ঘুড়ি।
ছোট্ট শিশুর প্রথম কথায়
ডাকে সে তার ‘মা’কে,
সন্তানকে মা কোলে নিয়ে
চাঁদ মামাকে ডাকে।
আপন কভু পর হয়ে যায়
মন্দ কথা শুনে,
পর হয়ে যায় আপন কভু
মধুর কথার গুনে।
মা এসে তার ছেলেকে বুঝান
“মুখ সামলে কথা বলবে,
একান্তই তা না পারো তো
মুখ বন্ধ রেখে চলবে”।
ভাল কথা বলতে গেলেও
লাগে বুকের পাটা,
মন্দ লোকের বড় কথায়
জ্বলে উঠে গা’টা।
কথার পিঠে কথা বলা
মোটেও সহজ নয়,
কথার বানে মানুষ হত্যা
রুপকথাতেই হয়।
কোন কোন গানের কথা
মন কেড়ে নেয় সবার,
কারো আবার কথা থেমে যায়
পেলে মজার খাবার।
ব্যবসায়ী কয় টাকার কথা
শিক্ষকরা জ্ঞানের,
খেলাপির মুখে ঋণের কথা
জ্যোতিষী কয় মনের।
কথার কথা বলতে গিয়ে
অনেকে খায় ধরা,
ছাত্ররা কয় পড়ার কথা
কবি বলেন ছড়া।
কথার উপর চলছে এ দেশ
কথায় চলে বিশ্ব,
কারো মুখের একটি কথায়
কেউ হয়ে যায় নিঃস্ব।
কথায় কথায় অনেক কথা
হয়ে গেল বলা,
মৃত্যুর আগে থামবে না এই
কথার পথ চলা.........
(১০০ লাইনের কবিতা ০৩)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৮