ফেন্সিডিল ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ভোলার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জাবেদ ইমামকে কোন আইনে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে তার জবানবন্দি নেয়া হয়েছে পুলিশের কাছে সেটির ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ সালাম সোমবার লিখিত আকারে এ আদেশ দেন।
আগামি ৬ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা অঞ্চলের উপ-কমিশনার নুরুল ইসলাম, নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম, জব্দ তালিকার কর্মকর্তা এস আই নূর হোসেন, রেকর্ডিং কর্মকর্তা শাফিয়ার রহমানকে আদালতে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, যেভাবে গণমাধ্যমের সামনে বিচারক জাবেদ ইমামকে হাজির করা হয়েছে তা আইনের পরিপন্থী। পুলিশ বিচার বিভাগকে জনগণের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বিচারককে নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করেছে। যা গুরুতর অন্যায়। পুলিশ একজন আসামিকে নিয়ে এভাবে মিডিয়া ট্রায়াল করতে পারে না। বিচারের আগে কাউকেই এভাবে হাজির করার বিধান নেই। তাই ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
আদেশে আরও বলা হয়, যদি কোনও আসামি দোষ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে চান, তাকে অবশ্যই নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করতে হবে। তা না করে পুলিশ জোরপূর্বক আসামিকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে, যা ফৌজদারি অপরাধ আইনের পরিপন্থী।
আদেশে বলা হয়, একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির না করে পুলিশ গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে কোন আইনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছেন এবং তা গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে- এ বিষয়ে আইনগত ব্যাখ্যা চেয়ে ওই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেছে আদালত।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, আসামি পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার আদালতে তার মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। শুনানিকালে আদালতকে তিনি বলেন, “বিচারক জাবেদ ইমামকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়, যা আইনের পরিপন্থী। তাছাড়া, মামলার এজহার ত্রুটিপূর্ণ এবং আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো আবেদন পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়নি। আইন অনুযায়ী গণমান্য স্থানীয় ব্যক্তির উপস্থিতিতে মামলার আলামত জব্দ করা হয়নি। আসামি পরিস্থিতির শিকার।”
উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যায় একটি মাইক্রোবাসে করে বিচারক জাবেদ ইমাম নীলক্ষেত মোড় দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে দায়িত্বরত নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান তার গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করেন। পরে জাবেদের গাড়ি থেকে দুই কার্টন ফেন্সিডিল এবং একটি রিভলবার উদ্ধার করেন মিজানুর রহমান। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে থানায় একটি মামলা হয়।
রোববার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জাবেদ ইমামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। View this link