ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। কাজের জন্য তো বটেই, নিছক বেড়াতেও এ দেশ-ও দেশ করছে মানুষজন। সেসঙ্গে বাড়ছে বিদেশী ভাষা জানা লোকের চাহিদা। নতুন পেশা হিসেবেও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে দোভাষীর কাজ। এ কাজে জাপানি, চীনা, কোরীয়, ফরাসি, জার্মান, সুইডিশ, স্প্যানিশ, ইতালীয়, গ্রিক, আরবি ও হিন্দি ভাষার প্রচুর চাহিদা।
‘আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, তাই বিদেশী ভাষায় দক্ষতা কম। যেসব বিদেশী ভাষার চাহিদা বেশি তার যেকোনো একটি শিখে অনুবাদক, দোভাষী এবং ট্যুরিস্ট গাইড ছাড়াও হোটেল ম্যানেজার, বিক্রয়কর্মী, শিক্ষক, ভাষা প্রশিক্ষক, ভাষ্যকার ও প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।’ কাজের ক্ষেত্র সম্পর্কে বলছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত ন্যাশনাল হোটেল এন্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ এ বি এম আশরাফুল হক।
দোভাষী ও অনুবাদক
অলিয়ঁস ফ্রঁসেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মার্গারেট সুজান সরকার জানান, দোভাষী হিসেবে বিদেশী দূতাবাস, এক্সপার্ট ওরিয়েন্টেড কোম্পানি, বিদেশী অতিথি অভ্যর্থনা, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, মার্চেন্ডাইজার, আন্তর্জাতিক সম্মেলন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিয়োগ পাবেন। দোভাষী হিসেবে বেতনও ভালো পাওয়া যায়। তবে এটি পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে। ভাষা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান একুশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে চায়নিজ ভাষার ব্যাপক চাহিদা। এ ভাষা শিখে ভালো আয়ের সুযোগ আছে। বর্তমানে দেশে বেশ কিছু চীনা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, এসব প্রতিষ্ঠানে দোভাষী হিসেবে কাজ পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে চায়নিজ ভাষার পাঠ্যবই, গল্প, উপন্যাস, কবিতা ও প্রবন্ধ অনুবাদ করার কাজ পেতে পারেন।
ট্যুরিস্ট গাইড
ইংলিশ, জাপানিজ ও ফ্রেঞ্চ ভাষার দোভাষী এবং ঢাকা ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ এ খান জানান, বর্তমানে ভাষা শিখে কাজ করার মতো পেশার মধ্যে ট্যুরিস্ট গাইড অন্যতম।
বাংলাদেশের প্রকৃতি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শনে পর্যটকদের সহায়তা করাই ট্যুরিস্ট গাইডদের কাজ। সা¤প্রতিককালে প্রাচ্য দেশ থেকে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ করা যায়। তাই চায়নিজ, জাপানিজ ও কোরিয়ান ভাষা শিখলে ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ পাওয়া যায়। ফার্মগেটের গ্লোবাল একাডেমির ব্যবস্থাপক নাজমুল হক ভুঁইয়া জানান, কোরিয়ায় যেতে হলে অবশ্যই কোরিয়ান ভাষা কোর্সে উত্তীর্ণ হতে হবে। আর স্টুডেন্টস ভিসায় যারা বিদেশে পড়ালেখা করতে যায় তাদের ক্ষেত্রে ওই দেশের ভাষা জানা থাকলে খ-কালীন চাকরি পেতে সহজ হয়।
আয় কেমন
সাধারণত অনুবাদক ও দোভাষী হয়ে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। ট্যুরিস্ট গাইডদের মাসিক আয় ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।
শারীরিক যোগ্যতা
অলিয়ঁস ফ্রঁসেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মার্গারেট সুজান সরকার জানান, এ পেশায় আসতে হলে শারীরিক যোগ্যতা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে এখানে চৌকস এবং বিচক্ষণ ব্যক্তিদের সুযোগ দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, এ পেশায় পোশাক-পরিচ্ছদ ফরমাল হলেই ভালো হয়।
দোভাষী হিসেবে মেয়েদের সম্ভাবনা
মেয়েদের সম্ভাবনা সম্পর্কে সুজান সরকার আরো জানান, এ পেশায় মেয়েদের ভালো সম্ভাবনা আছে। দূতাবাসে অনুবাদক, দোভাষী, বিমানবালা, রিসেপশনিস্ট, হাসপাতালের সিস্টার ও এনজিওকর্মী হিসেবে কাজের সুযোগ আছে। View this link
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১৪