সকাল ১১.৩০ টা বাজে , মানে এখন আমার দ্বিতীয় ধাপ ঘুমের সময় । কম্বল এর নিচে যেই না ঢুকতে যাব তখনই পর্দার ভিতর দিয়ে মাথা ঢুকিয়ে পাশের বাসার পিচ্চি মেয়েটা ফিস ফিস করে বলল
জিহাদ ভাইয়া ।
এই পিচ্চি আসা মানে দুনিয়ার সব ঝামেলা সাথে নিয়ে আসা । তাই একে উপেক্ষা করেই কম্বল এর নিচে ঢুকলাম ।
কিন্তু পিচ্চি গুলো কি আর ক্ষান্ত হয় । অনবরত ডাকতেই লাগল ,
-জিহাদ ভাইয়া , জিহাদ ভাইয়া ।
-ঐ পিচ্চি তোমাকে না বলছি ঘুমের সময় dstrb করবা না?
-এখন কি ঘুমের সময়?
-হ্যাঁ ঘুমের সময় । বড় মানুষরা এখন ঘুমায় , যাও ।
-ভাইয়া শোনেন না ।
-উফফ ... বল কি হইছে ?
-হুমায়রা আপু কই?
-স্কুলে গেছে ।
-আপনার আম্মু কই?
-আমার আম্মুকেই রান্নাঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস কর যে উনি কই ।
-ভাইয়া বলেন না
-আরে বাবা রান্নাঘরে , কেন ? কি হয়েছে ?
পরে বলব , আন্টি গেলে ।
-হায়রে অবস্থা , যাও ।
একটু পর আম্মু ছাদে যাচ্ছিল , আম্মু যাওয়ার ১ মিনিটের মধ্যে আবার দৌড়ায়ে আসছে ।
-ভাইয়া , ভাইয়া
-কি হইল আবার ?
এইটা নেন ।
এই বলে আমাকে একটা চিঠি ধরায়ে দৌড় দিল । আমি হা করে তাকায়ে রইলাম চিঠির দিকে । এই পিচ্চি ক্লাস ওয়ানই পার করল না আর এখনই চিঠি দেয় , তাও আবার লুকায়ে । আমি থতমত খেয়ে চিঠি খুললাম । চিঠির শিরোনাম ছিল “কথা বলা ” । শিরোনাম দেখে তো আরো টাস্কি ।নানা চিন্তার ঘুরপাক পেরিয়ে চিঠি পড়তে লাগলাম –
“কি করেন,
ভাল থাকেন ,হ্যালো হাই বাই বাই ।
খোদাহাফেশ ।
চকলেক চাই , ঐ যে শিলেট থেকে আনছেন ।
৫টা ভাল দেখে , পিলিশ ।
কুছু মনে করবেন না, আমার আম্মুকে বলবেন না ,পিলিশ ।
হ্যালো , হাই বাই বাই । ”
আমি চিঠি পড়ে হাসতে হাসতে শেষ । আম্মু এসে বলে কি হইছে ?
আমি বললাম , আগে ঐ পিচ্চিরে চকলেট দিয়ে আস নাইলে হাসাতে হাসাতে মেরে ফেলবে sure ।
এই পিচ্চিগুলোই আমাদের শত ব্যস্ততার মাঝে একটু আনন্দের স্পর্শ এনে দেয় । কখন যে কি করবে বুঝে উঠতে পারি না, কিন্তু সব শেষে হাসাবে ঠিকই । পাথরের বুক চিরে পানি বের করতেও এদের বিন্দুমাত্র বিলম্ব হবে না ।আল্লাহ তুমি সত্যিই মহান যে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন একটি সময় দিয়েছ , তোমাকে ধন্যবাদ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৪