আসুন, মাইনাস দিয়ে যান। সত্যি বলছি, কিছু মনে করব না।
বাংলার বুকে বর্গী নেমেছে। বাংলার শান্ত ছেলেদের শান্ত আর রাখা যাচ্ছেনা। কারন শত্রু এসেছে তাই অস্ত্র হাতে লড়তে হবে। আমি যার কাহিনী লিখছি তার সত্যিকারের নাম দিলাম না। মনে করেন তার নাম সামাদ। তিনিও ঘরে বসে থাকলেননা। বাংলাদেশ নামক একটা দেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ৭ মার্চ শেখ সাহেবের ভাষনের পর থেকেই তিনি প্রস্তুত। চুড়ান্ত আঘাত আসল ২৫ শে মার্চ। প্রতিটি ক্রিয়ার বিপরীত ক্রিয়া থাকে। পাকিস্তানীদের ক্রিয়ার বিপরীতে আমাদের প্রতিক্রিয়ার সময় এখন।
৮ নম্বর রেজিমেন্টে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন তিনি। কয়েকবার সম্মুক যুদ্ধ করেছেন। কয়েকবার জীবন বিপন্ন হয়েছিল। তার সাথে অনেকেই মারা যান। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পঙ্গুত্ব বরণ করেন। তিনি থেমে থাকেননি। তিনি তো আর ঘাস কাটতে আসেননি। তিনি দেশকে বাঁচাতে এসেছেন। দেশ কবে শত্রুমুক্ত হবে কেউ জানেনা। কিন্তু পরাধীন দেশে তিনি জীবিত থাকতে চাননা। কারন, স্বাধীন রাষ্ট্র জীবিত গেরিলা চায় না। স্বাধীন রাষ্ট্র চায় রক্ত। নিজের দেহের শেষ বিন্দু রক্ত থাকতে পাকিস্তানীদের রক্ত ঝরিয়ে যাব। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠাতা করে যাব।
খাওয়া দাওয়ার অনিয়মের কারনে অসহ্য বুকে ব্যাথাও সহ্য করেছেন তিনি। কোনো কোনো দিন দুটো রুটি খেয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন। এটা তো আর পিকনিকে যাননি। এটা হল যুদ্ধ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।
আমরা অপমান সইবোনা, ভীরুর মত ঘরের কোনে রইবনা, আমরা আকাশ থেকে বজ্র হয়ে ঝরতে জানি, তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি ............
মাটি আমাদের মা। সেই মায়ের অপমান কোনভাবেই সহ্য করা হবেনা। তিনি যুদ্ধ করে গেলেন। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামক দেশের সৃষ্টি হল।
সেই বাংলাদেশে একদিন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হওয়া শুরু হল। দেশের শীর্ষ সন্তানদের তালিকা। গভীর শ্রদ্ধায় যাদের নাম চিরকাল স্মরন করা হবে। সেই তালিকায় অবশ্য তার নাম নেই। তার ছেলে গিয়েছিলেন সামাদের নাম তালিকায় তোলাতে। কিন্তু ৮ নম্বর রেজিমেন্টে জিয়াউর রহমানের অধীনে যুদ্ধ করার জন্য তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কাজেই দুঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে যে তার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নেই। এইরকম নির্দেশ কখনোই উপর থেকে আসবেনা। এটা হল ছোট লেভেলের অফিসারদের তৈল বানিজ্যের ফল।
স্বাধীনতার এত বছর পরেও যে যুদ্ধ অপরাধীর বিচার হয়না তাতে আর অবাক হওয়ার কি আছে? যুদ্ধ অপরাধীর বিচার হবে এটা মনে করা মানে বোকার স্বর্গে বাস করা।
জামায়াতনেতা আজহারুল ইসলাম যে বলেছেন "আমরাও মুক্তিযোদ্ধা"- এটাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই, আপনারা তাদের ছেড়ে দিবেন আর তারা ডালা-পালা ছড়াবেনা তা কি আর হয়!!