কে বলেছে বাংলাদেশে সব কিছুর দাম বাড়ে?? বাংলাদেশে একটা জিনিষ খুব সস্তা। মানুষের জীবন।
পেপার পড়া বলতে আমি একটা জিনিসই বুঝি। শেষের পাতার আগের পাতা মানে খেলার পাতা। কারন প্রথম পাতার বেশির ভাগ খবরই আমাকে টানেনা, আর বাদ বাকি খবর পড়লে মনটা মানেনা। প্রথমআলো আর ডেইলি স্টার এর খেলার পাতায় চোখ বুলালাম। সবুরা নামক এক জলকন্যা জাতীয় রেকর্ড টেকর্ড ভেঙ্গে গোল্ড জিতেছে। সাউথ আফ্রিকা পাকিস্তান কে হারিয়েছে। ব্রাজিল আর পর্তুগাল এর সাবেক কোচ স্কোলারি কেন জানি তার কুলনেস রাখতে পারছেনা। মাইকেল ওয়েন বলে দিয়েছেন ম্যান ইউ তাকে না ডাকলে তিনি অবসরে চলে যাবেন।
আজ কি জানি মনে হল একটু প্রথম পাতা গুলাও নজরে আনলাম। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার আর নয়া দিগন্ত। কোনটা আওয়ামী কোনটা বিএনপি আর কোনটা জামাতী এগুলাতে আমার খুব বেশি নজর নেই। তাই রাজনৈতিক খবর পড়িনা। সাধারন জনগনের খবর পড়ি।
ইভটিজিং এর কারনে স্কুলের এক টিচার মারা গিয়েছেন। তার উপর মটর সাইকেল তুলে দিয়েছেন ইভটিজাররা। যাদের কে ইংরেজিতে বলে Stalker. আরেক জায়গায় মেয়েদের মাকেই মেরে ফেলা হয়েছে। একই কায়দায়। মটর সাইকেল তুলে দেওয়া হয়েছে। একটা জাতি ততটাই সমৃদ্ধ হবে যতটা তারা তাদের মা-বোনদের শ্রদ্ধা করবে। পৃথিবীতে মেয়েদের অপমান করে কোন জাতি টিকে থাকতে পারেনি। আমরা সম্ভবত সেই জায়গায় চলে আসছি। ইভটিজিং নতুন কিছুনা। ধর্ষন এর ঘটনাও নতুন কিছুনা। ভয়াবহ ব্যাপার এটাই যে এগুলা কারা করছে সেটা জানার পরেও যখন কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয় না।
বরিশাল না পটুয়াখালি কোন জায়গার একটা খবর পড়েছিলাম। ছাত্রলীগের এক নেত্রী। তার রুমমেট মেয়ের নগ্ন ছবি ধারন করেছে নিজের ক্যামেরায়। তারপর বলেছে ৩০০০০ টাকা দিতে না হলে সেগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে।মেয়েটা কোনরকমে ৩০০০ টাকা দিতে পেরেছিল। লাভ হয়নায়। ছবিগুলা ঐ মেয়ে ছাত্রলীগের ছেলে কর্মীদের হাতে দিয়ে দেয়। ছাত্রলীগ শব্দটা নেওয়া হয়ত ঠিক হচ্ছেনা। তাদের সবার এইরকম বিকৃত রুচি সবার হবে কিনা সন্দেহ। মানে এইখানে ছাত্রলীগ এর নাম নেওয়া মানে এইও না যে ছাত্রদল খুব ভাল।
কোন জায়গায় জানি পড়লাম ৪-৫ জন মিলে এক বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী মেয়েকে রেপ করার পর সেইটার ভিডিও করেছে। আর পরিবারের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে নাহলে বাজারে সিডি ছেড়ে দেওয়া হবে। কালো পোষাক ধারী RAB ভাইয়েরা। তারা এত মানুষকে ক্রসফায়ার করে কিন্তু আসলে কাদের করতে হবে সেটা মনে হয়না এখনো বুঝতে পেরেছে।
মেয়েদের বিরক্ত করার মজা অনেক। কোথেকে এর উৎপত্তি জানিনা কিন্তু ছেলেদের ইগো এর সব থেকে বড় পার্ট এটাই। একটা ছেলে আমার থেকে লেখাপড়ায় ভাল একটা ছেলে আমার থেকে ইংরেজিতে ভাল এটা আমাদের খুব বেশি গায়ে লাগবেনা। কিন্তু একটা মেয়ে আমার থেকে অন্য ছেলেদের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে এটা অনেক ছেলেদেরি সহ্য হয়না। সবাই হিরোভাবটা একটু বেশি দেখাতে চায়। এই ফালতু ইগো থেকেই সব কিছুর উৎপত্তি।
চিটাগাং এর যেই মেয়েটাকে ছেলেটা খুন করল। তাদের প্রেম ছিল সাত বছরের। মেয়েটা এখন বিবিএ পড়ে ছেলেটা ২-৩ বারেও এইচএসসি পাশ করতে পারেনায়। ছেলেটা খুব সুন্দর ভাবে গিয়ে চাকুটা মেরে দিল। কেন প্রেম কর দেখে কি লেখা পড়া ছেড়ে দিতে বলসে কেউ? রেসপনসিবলিটি না থাকলে কোন মেয়ে আর সাথে থাকবে!! খুব বাহাদুরির কাজ হইসে!! মেয়েটাকে চাকু মেরে।
কষ্ট এটাই লাগে আমাদের প্রধান মন্ত্রী একজন মহিলা। কষ্ট এটাই লাগে যে দেশে অনেক নারী মানবাধিকার সংস্থা আছে। ইভটিজিং এর কারনে আমি কম করে হলেও ৫-৬ জন মেয়ের আত্মহত্যার কাহিনী পড়েছি। কিন্তু এটা বিরুদ্ধে কেউ সোচ্চার নয়। প্রধানমন্ত্রী নারী শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছে। মেয়েরা স্কুলে স্কুলে গিয়ে বিদ্যাবতী হবে। হা অনেক মেয়েদেরি চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই। কিন্তু পথে ঘাটে নিরাপত্তা না দিলে সেটা কিভাবে হবে!! একজন মেয়েকে যদি যাইতে আসতে ইভটিজিং এর স্বীকার হওয়া লাগে সে লেখাপড়া করবে কিভাবে?? অনেকে বলে মেয়েদের বাইরে যাওয়ার দরকার কি!! আরে আজব ব্যাপার। এটা কোন কথা হল নাকি!! ২০০৬ সালে আমি এক মেয়েকে পড়াতাম। মেয়েটা তখন ক্লাস সিক্স এ পড়ত। এবার পয়লা বৈশাখে সে বের হতে পারেনি। তার বাবা-মার কড়া শাসনের জন্য। পেপার এ এসেছিল ঘটনাটা। ক্লাস টেন এ পড়া এক মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনা। (দু’জন ছিল)। হা বোকামী করেছে মেয়েটা। কিন্তু মেয়ে হয়েছে দেখে পয়লা বৈশাখ এর দিন তাকে ঘরে বসে থাকতে হবে! কারন কোথাও কোন নিরাপত্তা নাই।
যারা ইভটিজিং করে তাদের ব্যাপারটাও বোঝা যায়। আমি নিজে ছেলে। মেয়েদের হাতে কোন কোন জায়গায় অপমানিত হলে কেমন লাগে আমি জানি। তবে আমার ধারনা এই অভিজ্ঞতা সব ছেলেরই থাকে। তার মানে এটা না যে মেয়েকে এসিড মারতে হবে তাকে চাকু মেরে দিয়ে হবে। বদলা নেওয়ার অনেক ভাল উপায় আছে। আমার এক বন্ধুর কাহিনী বলি। তার নাম প্রকাশ করছিনা। এক মেয়ের সাথে প্রেমের পর মেয়ে তাকে ছেড়ে চলে যায় (স্বীকার করতেই হবে মাঝে মাঝে মেয়েদেরও দোষ থাকে)। আরেক ছেলেকে বিয়ে করে। বন্ধু মনে কষ্ট পায়। ধর্মপ্রান বন্ধু নিয়মিত নামাজ পড়ে। সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদেই হোক আর অন্য কোন কারনেই হোক- এরপর অনেক পরিশ্রম আর একাগ্রতার চেস্টার ফল হল সে বর্তমানে ঢাবি এর লেকচারার হিসেবে জয়েন করেছে। মাঝে মাঝে আমি তার ঐ পুরান প্রেমিকার কথা ভাবি আর বেশ তৃপ্তি অনুভব করি। জবাব দেওয়ার এর থেকে ভাল উপায় আর কি ছিল। কোন মেয়ে যদি কোন ছেলেকে দুঃখ দিয়ে যায়। তাহলে সব সময় রসু খা অথবা ইভটিজার দের মত চিন্তা না করলেও চলবে। মেয়েদের জবাব দেওয়ার অনেক ভাল উপায় আছে।
কয়টা মেয়েকে ঘুরানো গিয়েছে কয়জনকে টিজ করা গিয়েছে এটা কখনই কোন ক্রেডিট এর ব্যাপার না। কিন্তু নিজের কোয়ালিটি কতটা উন্নত করা যায় এটা অনেক বড় ব্যাপার। এটা যারা জানে- তাদের আর মেয়েদের উপর এত ক্ষ্যাপা লাগবেনা। মেয়েরাই তাদের কাছে আসবে।
এই পোস্ট লেখার একটা কারন হচ্ছে অনেক টিনএজ ছেলেরা আমার লেখা পড়ে। তাদের অনেকের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখেই বোঝা যায় নারী জাতির তাদের প্রতি অনাগ্রহতায় তারা মানসিক কষ্টে ভুগছে। নিজেদের কোয়ালিটি ইম্প্রুভ কর। মনে রেখ শ্রদ্ধা অর্জনের এটাই সব থেকে বড় উপায়। আর পৃথিবীর কোন সম্পর্কই শ্রদ্ধা ছাড়া টিকে থাকেনা।
কাউকে উপদেশ দেওয়ার মত কেউ অবশ্য আমি না।
১১০ বছরের এক বুড়ির সম্পত্তি সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে এটাও আজকের পেপার এর খবর!!
কেন জানি এখন কোন কিছুতেই অবাক হই না। থাক আর কাজ নেই প্রথম পাতার খবর গুলা দেখার। ডেইলি স্টার এর খেলার পাতায় ফিরে যাই। KP hits back at critics। সামনেই অ্যাসেজ। অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া ক্ষেপে আছে। ইংল্যান্ড, ইন্ডিয়া দুইজায়গায় হেরে বসে আছে। কেভিন পিটারসন কি বলেছে ভিতরে পড়া শুরু করি। আজকে আবার জুম্মা আছে। কাফের হইতে না চাইলে আজকের জুম্মা পড়তেই হবে। অনেক দিন ধরেই নামাজ পড়া নিয়মিত করার চেস্টা করছি। দোয়া করবেন যাতে পারি।
* (লাস্ট খবর পড়লাম। ধর্ষন করার অপরাধে ৬ জনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা। কোরবানির খাসির দামও দেখি মেয়েদের ইজ্জতের থেকে বেশি!!!)