খলিল সিরিজ একটা আজাইরা কাল্পনিক সিরিজ। কাউকে সিরিয়াসলি না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হল।
এবার ঘটনার সাথে খলিলের কোন দোষই ছিলনা। আজাইরাই মাইর খাইল। আফসুস মার্কা ঘটনা। খলিল বিশাল এক উদ্যানের পাশ দিয়ে গান গাইতে গাইতে যাচ্ছিল। শরফুদ্দিনের গান “বোরখা পরা মেয়ে পাগল করেছে” গাচ্ছিল আর যাচ্ছিল ঠিক তখন দূরে এক পেটিস ওয়ালা এই হট পেটিস এই হট পেটিস বলতে বলতে যাচ্ছিল। খলিলের বেশ পেটিস খেতে ইচ্ছে করল। সে তাই ডাক দিল আই হট……… (একটুথেমে)………. পেটিস। ঝামেলাটা এখানেই লাগল। পেটিস ওয়ালাকে পেটিস খাওয়ার জন্য ডাকাটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু ঐযে যখনি হট বলল তখনি কোথেকে পেটিস ওয়ালার সামনে একটা মেয়ে চলে আসল। আর পেছনে থাকা তার বয়ফ্রেন্ড যে আসলে বাগদত্তা সে খালি হট টাই শুনল পেটিসটা না। সাথে সাথে দৌড়ায় এসে খলিলকে দে মাইর। আমার বউরে হট কইসস। তোরে আমি …………….
তবে ওই মেয়ে মনে হয় হট বলাতে খুশিই হইসিল।
কয়েকদিন পরের কথা। ঐ মেয়ের বাগদত্তার নাম শাহজালাল। সে বিরাট ব্যবসায়ী।
সদরঘাট টার্মিনাল এর সামনে খলিল কার্ড খেলতেসিলো। বাকি তিনজন এর সাথে কার্ড খেলায় তার জিতার কথা না। কিছু মানুষের ভাগ্য বাস্তবে ভাল না হলেও গল্প সিনেমাতে ভাল হয়। খলিলেরটা গল্পেও ভাল হয় না। খলিল হেরে গেল। কিন্তু আচাঁনক ব্যাপার পরে হল। খলিল টাকা গুলা সব গুছায় দৌড় দিল। এক দৌড়ে শাইশানিকে উঠে গেল। শাইশানিক তখন মাত্র ছাড়ল।
খলিল শাইশানিকে উঠার আগের থেকে আরেকটা ঘটনা-
লঞ্চের নাম শাইশানিক- বরিশাল যাওয়ার সব থেকে বড় লঞ্চ। লঞ্চের ফার্স্টক্লাস এর কেবিনের যাত্রী শাহজালাল আর তার বাগদত্তা রেখা। তারা লঞ্চে উঠল। লঞ্চের লোকজন স্যার স্যার করে উঠাল।
শাহজালাল সবাইকে বখশিষ দিল। তার মন মেজাজ বেশ ভাল। কয়েকদিন পর রেখার সাথে তার বিবাহ। রেখার জন্য আলাদা খানদানী ব্যবস্থা করা হয়েছে। লঞ্চের মালিক শাহজালালের বিশেষ আপনা লোক।
শাহজালাল রেখাকে রেখে একটু বারান্দার দিকে আসল। লঞ্চ দেখলেই তার টাইটানিক এর কথা মনে পড়ে। এখানেও টাইটানিক এর মতই অবস্থা। বিশাল লঞ্চ। টাইটানিক এর ভিলেনও এভাবে বাগদত্তা নিয়ে আসছিল। সেটার কথা চিন্তা করে শাহজালাল একটু চিন্তায় পড়ে গেল।এই লঞ্চের নাম আবার শাইশানিক। লঞ্চ ডুবার চিন্তা শাহজালালকে পেয়ে বসল। সে লাইফ জ্যাকেট এর সন্ধানে গেল। এর বাদে লঞ্চে একটা নৌকা থাকার কথা। বড়সড়। শাহজালাল নৌকাটা দেখতে গেল। নৌকা ভর্তি পানি। বাথটাব বানায় সেখানে কেউ একজন দিগম্বড় অবস্থায় একটা মুকুট হাতে নিয়ে বসে আছে। শাহজালাল বলল, এই তুই কে রে? লোকটা তাকাল এবং বলল, লোহার জিনিসটা কিভাবে ভাসে তাই জানার চেস্টা করতেসি। ডিস্টার্ব দিবিনা। শাহজালাল বলল, তোর নাম কি? মুকুট নিয়ে কি করিস? লোকটা বলল, এখানে কতখানি সোনা আছে তাই দেখতেসি।
শাহজালাল বুঝল এখানে পাগল টাইপ কেউ উঠেছে। সে আর ঘাটাল না। রুমে এসে দেখে রেখাও নেই। সে নাকি লঞ্চে ঘুরতে গেছে।
রেখা ডেকের দিকে ছিল। ডেকে থেকে নদী দেখতে ভাল লাগছে। সে একটু নিচু হল ভালমত দেখার জন্য। খলিল কোথেকে এসে বলল নাআআআআআ, সুইসাইড করেন নাআআআআআআ এটা বলতে গিয়ে দুইজনে ধাক্কা খেয়ে পেচাঁয় গেল। গড়াগড়ি খাইতে লাগল। এবং তারা গড়াগড়ি করতে করতে পানিতেই পড়ে গেল। পড়লে না হয় রেখা একাই পড়ত এখন খলিল সহই পানিতে।
ঠিক সেই সময় শাহজালাল লোকজন নিয়ে আসল। দড়ি টড়ি মারা হল। টায়ার দেওয়া হল। লঞ্চেই উঠেই রেখা খলিলকে বলল, বেটা গাধা কোথাকার? এই পঁচা পানিতে কেউ সুইসাইড খায় নাকি!! শাহজালাল খলিলকে দেখেই চিনল তবে খুব ঢং করে রেখা কে প্রিয় প্রিয় করে বলল, এই ছাগল তোমাকে পানিতে ফেলসে? ওরে আমি। শালার পুত তো বহু আগের থেকেই তোমার পিছন পিছিন ঘুরে। আই কে আছিস এইটারে পানিতে ফালা। রেখা বলল, দাড়াও দাঁড়াও, সে আসলে আমাকে বাঁচাইতেই এখানে আসছিল। ব্যাপারটা তোমারা কেউ বুঝতে পারনি। শাহজালাল কে বলল, প্রিয় শাল্লু। তাকে ছেড়ে দাও। শাহজালাল রেখা যখন শাল্লু বলে সেটা শাহজালালের খুব ই ভাল লাগে। শাহজালাল খলিলকে বলল ঠিক আছে। রাতে ডিনারটা আমাদের সাথে কর। এই লঞ্চ জাহাজের মত। ফার্স্ট ক্লাসে এসে ডিনার কর।
খলিলের বেশ ভাল লাগল। তার এখন নিজেকে টাইটানিকের জ্যাক এর মত মনে হত লাগল। রাতের ডিনারে কি পড়ে যাবে তাই ঠিক করতে লাগল। সে নিজে একটা কেবিন পেয়েছে। সেই কেবিনে বসে পায়ের উপর পা তুলে বসে ছিল ঠিক তখনি কে জানি তার দরজাতে নক করল। লোকটা একটা তোয়ালে জড়ানো আর শার্ট গায়ে। প্যান্ট কেন পড়েনায় কে জানে!! সব থেকে অবাক করা ব্যাপার লোকটার হাতে মুকুট। খলিল কে দেখেই বলল, এই মুকুটে কতখানি সোনা আছে জান নাকি? খলিল বলে, সেটা দিয়া আমি কি করমু?লোকটা বলল, জানা জরুরি। রাজা মশাই জানতে চেয়েছেন। ভাল কথা লোহার জাহাজটা পানিতে কেন ভাসতেসে? খলিল মহা বিরক্ত হয়ে বলল, শুন রোজ এর সাথে আমার ডিনার আসে। তোর কাছে যদি লুঙ্গি বাদে ভাল কোন প্যান্ট থাকে সেটা দিয়ে যা। এখন ডিস্টার্ব দিস না। এই কথা শুনে লোকটা খেপে গেল। ইতিহাস স্বাক্ষী আছে আর্কিমিডিস কখনো কোনো দিন আন্ডার ওয়ারও পড়েনায় খলিল সিরিজে আসার জন্য তাকে এখন তোয়ালে পড়তে হইসে। আর আমার সাথে ফাজলামী করিস! আমার কাছে প্যান্ট চাস!! হারামজাদা খলিল, এটা বলে মুকুট দিয়ে খলিলের মাথায় বাড়ি দিল। খলিল চিত হয়ে পড়ে গেল।
রাতের ডিনার এর আগে শাহজালাল গোপনে তার লোকের সাথে কথা বলছিল। লোকটার নাম রাজু। শাহজালাল বলল, এই বেয়াক্কেল খলিল এইখানে কি করতেসে? সে এই জাহাজে ক্যামনে? রাজু বলল, স্যার কি আর কমু। খলিল আমাদের সাথে তাস খেলতেসিল। তারপর আমাদের তিনজনরে একলা পাইয়া সে খেলায় হারার পর টাকা নিয়া দৌড় দিসে। শাহজালাল বিরক্ত হইল? গাধার মত কথা বল ক্যান। একজন খলিল সে আবার তিনজনকে একলা পাইল ক্যামনে? রাজু বলল, সেটা বুঝবেননা স্যার। খলিল তো খলিল ই। স্যার রেখা ভাবীর সাথে আপনার মুল বিবাহ কবে হবে? শাহজালালবলল, সামনের মাসেই হবে? ক্যান সেটা দিয়ে তোমার কি? না কিছুনা স্যার। আমার উপর কোন নির্দেশ? সোলায়মান বলল, গাধা খলিলের দিকে নজর রাখবা। রেখার মতিগতি ভাল দেখতেসিনা। শাইশানিক কে মোটেও টাইটানিক হতে দেওয়া যাবেনা।
রাতে খাবার সময় তেমন কোন নাটকীয়তা হলঅনা। খলিল কাটা চামচ দিয়ে খাইতে গিয়ে নিশানা না হওয়াতে তার রোস্টটা রেখার চোখে গিয়ে লাগল তারপর গালি খেল। রেখা বলল, আল্লাহ যখন প্রানী বানানো শুরু করে তুই কি গাধাদের লাইনে ছিলি? খলিল টাইটানিকের জ্যাক এর মত কিছু একটা বলতে চাইল। আরে এটা কোন খাওয়া হল!! খাওয়া হল আমারদের জায়গায়। নিচে যেটা হয়। সোলায়মান বলল, নিচে কিছু হয় না। যা খাবা এখানেই খাও। সোলায়মান খাওয়া শেষে হাত ধুতে গেল। এসে দেখে রেখার হাতে চিরকুট। হারামজাদা খলিল তাইলে জ্যাক এর মত ঐ কাজটাও করে ফেলসে। শাহজালাল রাজু কে খুঁজতে গেল।
খলিলের আবার মন খারাপ। রেখা তেমন একটা পাত্তা দেয়নায়। সে নিজের কেবিনে আশা শুরু করল তখন আর্কিমিডিস আবার আসল। আর্কিমিডিস খলিলকে দেখেই বলল, বস্তু দ্বারা অপসারিত পানির ওজন আর বস্তুর ওজনের বিয়োগফল সম্পর্কে তোমার ধারনা কি? খলিল বলল, শোন আর্কি। ফাজলামী করবিনা। আমার মন খারাপ। রেখাকে চিরকুট দিতে গেলাম কিন্তু পারলাম না। আর্কি বেশ অবাক হল, চিরকুট দিতে পারিস নাই ক্যান। যাই হোক সেটা আমার সমস্যা না। আমার সমস্যা দুটা। মুকুটটা খাটি সোনার কিনা আর জাহাজটা কেন ভাসতেসে। ভাল কথা আমাকে একটা আয়না দে। জাহাজটাকে ডুবিয়ে দেই। খলিল আরো বিমর্ষ হয়ে বলল, আমার কাছে আয়না নেই। আর ভাল কথা জাহাজ কিভাবে ডুববে? আর্কিমিডিস বলল, রাতের বেল হবেনা। দিনের বেলা লাগবে।
শাহজালাল আর রাজু তাদের নিজ রুমে। তারা একটা পেইন্টিং এর দিকে তাকিয়ে আছে। টাইটানিকের রোজ এর মত ন্যুড পোজের পেইন্টিং অবশ্য না। কাপড় চোপড় পড়া এক মেয়ের ছবি তবে বলা বাহুল্য সেটা রেখারই হবে। শাহজালাল রাজুকে বলল, রাজু। ঘটনা তো গুরুতর। খলিল দেখি ছবিও আঁইকা ফালাইসে। তার মানে সব কিছু দেখি টাইটানিকের মতই আগাইতেসে, তার মানে জাহাজটাও ডুবে যাবে!! রাজু বলল, স্যার সে সম্ভাবনা বিদ্যমান। রাজু তুমি দেখ তো তোমার রেখা ম্যাডাম কই আছে। আর লোকজন পাঠাও খলিলকেও ধরে আনুক। খলিল যে চোর সেটা প্রমান করা দরকার। বোরখা পড়া ছবিটা দেখো তো রেখা কোন লকেট পরেছে কিনা। গত মাসেই তাকে একটা দিয়েছিলাম। রাজু খলিলকে দেখতে গেল।
ভোর পাঁচটা বেজে ৩০ মিনিট। রেখার হাতে যে চিরকুট ছিল সেটা খলিল দেয়নায় সেটা বোঝাই যাচ্ছে। সেটা আসলে রাজুই দিয়েছিল, বলা ছিল ভোরের দিকে শাইশানিক প্রায় বরিশাল পৌছায় যাবে। তখন তারা নেমে পালিয়ে যাবে। লঞ্চ প্রায় তীরে এল বলে। শাহজালাল খবর পেয়ে গেছে এটা রাজুর কাজ। সে তার অন্যান্যদের নিয়ে লঞ্চেই রাজু আর রেখার খোঁজ করছে। শাইশানিক প্রায় তীরে এল বলে। রাজু আর রেখা সবার আগেই নামবে। ঠিক এমন সময় আর্কিমিডিস সেই ওই কাজটা করল যেটা সে ২০০০ বছরেরও আগে একবার করেছিল। সে “ইউরেখা ইউরেখা” বলতে বলতে রেখার দিকে আসতে লাগল। তার হাতে তখনও মুকুট। শাইশানিক তীরে এসে বাড়ি খেল। খলিল মনে কেবিনে বসে ধাক্কা অনুভব করল। তার মনে হল আর্কি মনে হয় শাইশানিক ডুবিয়ে দিচ্ছে। ২০০০ এরও বছর আগে নাকি ম্যাগ্নিফ্লায়িং গ্লাস দিয়ে সে এটা করেছিল। খলিল শাইশানিক থেকে পানিতে লাফ দিল। সবাই দেখল খলিল পানিতে। তাকে টায়ার লাইফ জ্যাকেট এগুলো ছুড়ে মারা হচ্ছে। শাইশানিক তীরে। রেখা আর রাজু হাত ধরে পালাচ্ছে। পেছনে পেছনে শাহজালাল চিল্লাচ্ছে ,আরে আমার লকেটটা তো দিয়ে যা। আর্কিমিডিস তখন বলে যাচ্ছে “ ইউরেখা ইউরেখা”। সম্ভবত লোহার জাহাজ কিভাবে পানিতে ভাসে জানা হয়ে গেছে।
আগের গুলার লিঙ্ক
খলিল ও তার গার্লফ্রেন্ড উইশ (খলিল সিরিজ- ১)
খলিল ও তার ম্যাজিক আপেল (খলিল সিরিজ- ২)
খলিল ও তার লিমা দেব (খলিল সিরিজ-৩)
খলিল গেল ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল ও কলেজ (খলিল সিরিজ-৫)
খলিলের হইতে হইতেও হইলনা (খলিল সিরিজ-৬)
খলিল ও লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার (খলিল সিরিজ -৭)
খলিল আইডেন্টিটি (খলিল সিরিজ -৮)
খলিল সুপ্রিমাসি (খলিল সিরিজ -৯)
খলিল আল্টিমেটাম (খলিল সিরিজ-১০)
খলিল ও আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল (খলিল সিরিজ-১১)
খলিল প্রমান করিল আইন্সটাইন ভুল বলেছিলেন। (খলিল সিরিজ-১২)
খলিল ও সিরিয়াল কিলার (খলিল সিরিজ -১৩)
খলিল সিরিজ এর আগে ভাল লেগে থাকলে ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ এ একটা লাইক দিয়েন