দেশে শেষ ২০ দিনে ৩-৪ জন মেয়ে রহস্যজনক ভাবে খুন হইসে। খুন এর কোন কুলবড়ই কিনারা পাওয়া যাইতেসেনা। শোনা যাচ্ছে জেমস বন্ড এর নাকি বাংলাদেশ এ আসার কথা। ঠিক এই সময়ে আমি আর খলিল এখন নিলখেত এ। উদ্দেশ্য কিছু বই কিনা। নিলখেত এ আসার কিছু সমস্যা আছে। বলাকার ঐ দিক দিয়ে আসলেই ডাক দেয় “মামা লাগবে নাকি”। না লাগার কারন থাকুক আর নাই থাকুক এইসব ডাকে সাড়া দেওয়ার কোন উপায় নাই। ইমেজ এর ব্যাপার। নিলখেত এর বই কেনার সময় ফুটপাত থেকে খলিল কি জানি একটা বই অবশ্য কিনল। মজার ব্যাপার হল বইটা খলিল যতটা না কিনতে চাইসে হকারটা যেন সাইধা সাইধাই দিল। খলিল দাম জিজ্ঞেস করসে, বলসে ২০০ টাকা, খলিল বলসে ২০ টাকা আর অমনি দিয়ে দিল। হকার এর নাম জসিম বাড়ি নাকি টাঙ্গাইল। বড়ই আজিব। আফসুস বইটা আমাকে দেখতেই দিল না।
বাসায় যাওয়ার পর খলিল ফোন দিল। তাকে জানি একটা মজার কৌতুক বলি। আমি বললাম কারন কি? কৌতুক দিয়ে কি হবে!! তার নাকি কৌতুক শুনতে ইচ্ছা করতেসে। আমি বললাম, হারামি আগে বল কি বই কিনসিস। থলের বেড়াল বের হল। খলিল যেই বই কিনসে তার নাম “ মাইয়া পটানোর কয়েকটি উপায়”। বইয়ের লেখকের নাম আলম আলি রাজি। বইয়ের প্রথম যে উপায় বলে দেওয়া সেটা হল মেয়েরা নাকি বড়ই কৌতুক প্রিয়। আমি খলিল কে বললাম, খলিল এটা ভুল কথা। রসবোধ বেশি দেখাইলে মেয়েরা তেমন একটা পাত্তা দেয়না উলটা ফাজিল মনে করে। আমাকেই দেখ। খলিল নাছোড়বান্দা। আমি বেশ বিরক্ত হইলাম। ঐ শালার পুত রাজিরে পাইলে কাচ্চা খাইয়া ফালাই এই অবস্থা। খলিল কে কৌতুক বললাম, এক ছেলে আর এক মেয়ে ঝগড়ার সময় কোনো কিছুতেই একমত হইতে পারছিল না। তারপর মেয়েটি জিজ্ঞেস করল ছেলেকে এমন কোনো কিছু কি নেই যাতে আমরা একমত হতে পারি? ছেলেটি বলল, হা মনে করেন এক জঙ্গলে একটা বাড়ি। তার দুইটা রুম এর রুম এ সুন্দরি ১৬ বছরের একটা মেয়ে থাকে আরেকরুম এ দাড়োয়ান। আপনি কার সাথে ঘুমাবেন? মেয়েটি বলল, অবশ্যই ১৬ বছরের মেয়ের সাথে। ছেলেটি বলল, আমিও। দেখলেন তো আমরা একমত হয়ে গেলাম।
খলিল এর কৌতুকটা বেশ মনে ধরল। সে এটার প্রয়োগ ক্ষেত্র খুঁজতে লাগল। পরেরদিন এক পার্টিতে সে এভাবে একজন মেয়ে পেয়ে গেল। মেয়ের নাম শারমিন। খলিল চিন্তা করল মেয়েটার সাথে আগে ঝগড়া লাগাইতে হবে। সামনে গিয়ে মেয়েটা যা বলা শুরু করল তার উলটাটা বলা শুরু করল সে। তারপর কৌতুকের মত ক্ষেত্র পেয়ে গেল। মেয়েটা বলল আপনি আর আমি কি কোনভাবে একমত হইতে পারিনা? খলিল বলল, অবশ্যই। খলিল বলা শুরু করল, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে একটা বাড়ি ব্দুইটা রুম এর একটাতে ১৬ বছরের কন্যা আরেকটাতে দাড়োয়ান। আপনি কার সাথে ঘুমাবেন। শারমিন এই জায়গাতে বলল, আমি দাড়োয়ান কে গিয়ে বলব যা বেটা তোর কাজ পাহারা দেওয়া তুই নিচে গিয়ে পাহাড়া দে। এই বলে আমি নিজে এক ঘরে ঘুমাব আর ঐ কন্যা যেখানে ঘুমানোর ঘুমাক। খলিল এর উত্তর আগের থেকে ঠিক করা! সে বলল, আমিও। শারমিন বলল, আমিও মানে? আপনি কার সাথে ঘুমাবেন? খলিল বলল ইয়ে মানে রাজকন্যার সাথে। শারমিন চোখ গরম করল। খলিল আরো ভয় পেয়ে গেল, আর বলল না না রাজকনযার সাথে ঘুমাবোনা, আরেকরুম এ ঘুমাবো। শারমিন খলিল কে একটা থাপ্পর মারল। বলল, কত বড় বেয়াদপ, বলে কিনা আমার সাথে ঘুমাবে!!
খলিল রাজির বইয়ের পরের উপায়টা পড়ল। এত সহজে যেহেতু সে হাল ছাড়বেনা। মেয়েরা নাকি ফুল আর চকলেট পছন্দ করে। খলিল এর আজ রাতেও এক পার্টিতে দাওয়াত। খলিল ফুল কিনতে গেল। অবাক করা ব্যাপার ফুলের দোকানের হকার ও জসিম। সে ফুল বেঁচা শুরু করল কবের থেকে কে জানে!! খলিল ফুল কিনল। শারমিন এর বাসায় গেল, বাসায় গিয়ে জানতে পারল শারমিন নাকি শুটিং করতে এফডিসি গেসে।শারমিন আসলে বাংলা সিনেমার নায়িকা। শাকিব খান এর সাথে তার শুটিং। সিনেমার নাম চাচী আমার চাচী। খলিল এফডিসি গেল শুটিং দেখতে। অবাক করা ব্যাপার। এফডিসির সিনেমার শুটিং এর স্পট বয়ও জসিম। খলিল দূর থেকে শাকিব খানকে দেখিল। দেখে অবলীলায় বলে উঠল “ঐ হাফলেডিস”। খলিল যে কখন এই কথাটা বলল খলিলের নিজেরই মনে নাই! সাথে সাথে লোকজন দৌড়ায় আসল। খলিলকে পুলিশের কাছে দিল। পুলিশ ইনস্পেক্টর নিজেও জানেনা কি কারনে খলিল কে আনা হইসে? সে জিজ্ঞেস করল ও কি করসে? তাকে বলা হইল খলিল শাকিব খান কে হাফ লেডিস বলসে। পুলিশ ইন্সেপক্টর মাথা নাড়ল। নাহ এইটা খুবই অন্যায় হইসে। একজন লেডিস কে হাফ লেডিস বলাটা ভারী অন্যায়। সাথে সাথে সবাই আটকে উঠল, আয়হায় স্যার বলেন কি? শাকিব খান লেডিস না। তিনি সিনেমার সম্মানিত নায়ক। অহ। তাই নাকি। ঠিক তখন ঐ জায়গায় হকার জসিম এসে হাজির। জসিম এসে পরিচয় দিল সে আসলে বন্ড, জেমস বন্ড। খলিল ও বলল, খলিল, আমি খলিল। কাহিনী কি? দেশে বেশ কয়েকটা মেয়ে খুন হইসে সিরিয়ালি। জেমস বন্ড এর সাসপেক্ট এ প্রথমে রসু খা ছিল। যেহেতু রসু খা জেলে যাওয়ার পরেও খুব হইতেসে তাই সাস্পেক্ট এ এখন খলিল ও আছে? কারন কেস তো একই। রসু খা কেও মেয়েরা পাত্তা দিতনা তাই সে খেপে গেসিল। খলিল কেও দিতেসেনা। শারমিন নিজেই নাকি খলিলের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিসে। খলিল খেপিয়া উঠলেন। ওই মিয়া ফাজলামি করেন? আমি খুন করা শুরু করলে দেশে আর মেয়ে থাকত না। আর ভাল কথা জসিম না জেমস বন্ড। তুমি নিজেও কম লুইচ্চা না। তোমার নজের প্রত্যেক সিরিজে তুমি কাহিনি কর। এখন আসছ আমার টাতে ভাগ বসাইতে!! যাও গিয়া তোমার কোয়ান্টাম অফ সোলেস না কি জানি আসে ঐটাতে যাও। জসিম বলল, শুন! আমার সাসপেক্ট এ মাত্র ২ জন আসে। হয় তুমি নাইলে শাকিব খান। এখন তুমি যদি না হও তাহলে চল। আজকে রাতে শাকিব খান এর পেছনে থাকি।
জসিম অরফে জেমস বন্ড শাকিব খান এর বাড়ি গেল। শাকিব খান বাসা থেকে বের হল তারা পেছন পেছন গেল। খলিল যাওয়ার পথে বলতে লাগল, জেমস ভাই, দেশে বিদেশ সব সুপার ক্যারেক্টার এর মাইয়া থাকে, আমার নাই আফসুস, মনে বড় দুঃখ। আমাগো হিমুরে দেখেন। সারাদিন খালি পায়ে থাকে, পকেট এ কোন টাকা থাকেনা। তারপরেও পারমানেন্ট রুপা বাসে টেম্পোরারি কত কিছু আসে। আর আমার। জেমস বন্ড বলল, কোন দুঃখ কইরোনা। এবারের পর্বের শারমিন তোমার। আরে মিয়া রাখেন। এই কথা স্পাইডারমযান আমারে খলিল-৫ এ বলসিল। পরে মৌমাছির কামড়ে এক মাস মুখ ফুইলা ছিল। খলিল-৬ এ জ্যাক সুলি হারামির জন্য শরবত এক্সপায়ার হয়ে গেসিল। এখন চল। (দূরে শাকিব খান এর গাড়ী ফ্লো করে)।ঐ শাকিব খান হারামী দেখি শারমিন এর বাসায় যায়। শুয়োর। জেমস বন্ড আর খলিল বাইরে দারিয়ে আছে। শালিন খান শারমিন এর বাসার ভিতরে গেছে। জেমস বন্ড বলতে লাগল, যা বুঝসি তাই। শাকিব খান ই সিরিয়াল কিলার। এই বলে জেমস বন্ড কে মশা কামড়াইতে লাগল। জেমস বন্ড বলল, তোমাদের দেশে এক সমস্যা। বড্ড মশা। খলিল বলল মশা আমাকে কামড়ায় না। জেমস বন্ড বলল, তোমাকে কামড়াবেনা ক্যান?! কি আজব কথা। খলিল বলল, আরে বাল মেয়ের মশারা কামড়ায় ছেলে মশারা না। আর মেয়ে জাতি সেটা মসহা হোক আর মানদ জাতি হোল সবাই খলিল থেকে দূড়ে থাকে। ওহ আই সি, জেমস বন্ড বলল। খলিল বলল, জেমস বন্ড, আমরা কি শাকিব খানকে খুন করার আগে ধরব না পড়ে? জেমস বলল, চল ভিতরে যাওয়া যাক। ভিতরে গয়ে দেখা গেল শাকিব খান আর শারমিন তারা ড্রইং রুম এ বসে সিনেমার আলাপ করতেসে। জেমস বন্ড খলিল কে নিয়ে শারমিন এর বেড্রুম এর খাট এ গেল। খলিল চিন্তা করতে লাগল কিভাবে শারমিন কে ইম্প্রেস করা যায়। ঐদিকে জেমস বন্ড শারমিন এর টেবিল এ কি জানি একটা ফাইল দেখতে লাগল। খলিলেজেমস বন্ড এর পিস্তল নিয়ে দৌড়ায় ড্রইয়ং রুম এ চলে গেল। জেমস বন্ড বাদশা দেওয়ার চেস্টা করতে চাইসিল কিন্তু খলিল বলল, মর শালা জেমস বন্ড, তুই ধরবি আর শারমিন তোর উপর ইম্প্রেস হবে এমন হইতে দিমুনা। খলিল ড্রিইং রুম এ গিয়ে শাকিব খান কে বলল, পারভার্ট, ইউ আর আন্ডার এরেস্ট। শাকিব খান কি করবে কিছুই বুঝলনা। আমি শাকিব খান নাম্বার ওয়ান। আর তুই আমারে এরেস্ট করবি এইটা বলে শাকিব খান চুল ঠিক করতে লাগল যেভাবে তেরে নাম সিনেমায় সালমান খান করত। খলিল শারমিন কে বলল, শারমিন ওর থেকে দূরে যাও। আমি তোমাকে বাচাইতে আসছি। বাংলার নায়ক শাকিব খান একজন খুনি। সে অনেক মেয়েকে খুন করেছে। আমাদের কাছে প্রমান আছে। শারমিন থতমত খেয়ে গেল। তারপর বলতে লাগল ছিঃ শাকিব ছিঃ। তুমি এরকম। শাকিব খান আবার চুল ঠিক করতে লাগল, বলল, আমি শাকিব খান নম্বর ওয়ান। আমি গরীবের বন্ধু অসহায়ের সহায়। বিশ্বাস কর আমি খুনি নই। ঠিক আছে শাকিব খান তুমি খনি নও, জেমস বন্ড রুম এ ঢুকল।। আমারই ভুল হইসে। ব্যাপারটা যে এমন হবে বুঝিনাই। আমাদের দেশে এরকম হয় বাংলাদেশ এ এমন ব্যাপার দেখিনাই। খলিল বলল, খবরদার কেউ শারমিনের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা ও আমার। শারমিন ও বলল হা আমি খলিল এর। জেমস বলল, তার আর দকার নাই শারমিন। খলিল, শারমিনকে নিয়ে তোমার লাভ নাই। খলিল বলল, মানে কি? শাকিব খান বলল, আমি শাকিব খান নম্বর ওয়ান, আমাকে বল হোক মানে কি? জেমস বন্ড বলল মানেটা পরেই পরিষ্কার হবে। এখন না।
শারমিন একজন সিরিয়াল কিলার। ৪-৫ টা মেয়ে সে খুন করেছে। সে একজন বাই-সেক্সুয়াল। সে লেসবিয়ান।। জেমস বন্ড মনে করেছিল শারমিন ভিক্টিম হবে কিন্তু শারমিন ই আসলে খুনি। খলিল এর মন আবার ভেঙ্গে গেল। এই প্রথম একজন মেয়ে (সন্দেহ আছে) বলল, আমি খলিলের সেটাও দেখা গেল লেসবিয়ান। খলিল বেশ মনে কষ্ট পেল। তবে ব্যাপার না খলিল তো খলিল ই। এখন কথা হল শাকিব খান এইখানে কিভাবে জড়ালো।
জেমস বন্ড আরেকটা সফল মিশন শেষ করার পর এয়ারপোর্ট এ নম্বর অয়ান শাকিব খান আর খলিল বিদায় দিতে আসল। জেমস বন্ড ওরফে জসিম খলিলকে বলল তুমি বাংলাদেশ এ অনেক লাক ট্রাই করস, এরপর থেকে আমার মিশনে থাইক। দেখ যদি কিছহু হয়। খলিল বলল, মর গিয়া। তোর সাথে থাক্মুনা, তুই বেইমান। শাকিব খান জেমস বন্ড কে বলল, আমি শাকিব খান নম্বর ওয়ান, আচ্ছা শারমিন ঐদিন রাতে আমাকে বলেছিল স্ক্রিপ্ট এর ব্যাপারে কথা বলতে, বাসায় গিয়ে দেখি সে ছাড়া আর কেউ নাই, ও তো মেয়েদের খুন করে!! আমাকে ডাকল ক্যান। জেমস বন্ড বলল, শাকিব খান নম্বর ওয়ান, আপনার মনের সব থেকে বড় দুঃখ তো এই না যে অনেকে আপনাকে গে মনে করে? শাকিব খান আমতা আমতা করে বলল, তারপরেও আমি নম্বর ওয়ান। কিছু মনে করবেননা শারমিন আপনাকে লেসবিয়ান মনে করেছিল। আমি গেলাম। জেমস বন্ড চলে গেল। শাকিব খান খলিল কে বলল, খলিল চল তোমাকে আমি নামিয়ে দেই। খলিল বলল গাড়িতে কে আসে? আসলে ড্রাইভার তো আনি নাই খালি আমি আর তুমি। শালার পুত দূরে যা। শালা হাফ লেডিস। শাকিব খান বলল, আরে এমন কর ক্যান!! খলিল এক দৌড় দিয়ে সেখান থেকে পালাতে লাগল। শাকিব খান নম্বর ওয়ান সেখান থেকে দেখল, খলিল পালাচ্ছে। খলিল তো খলিল ই।
আগের গুলার লিঙ্ক
খলিল ও তার গার্লফ্রেন্ড উইশ (খলিল সিরিজ- ১)
খলিল ও তার ম্যাজিক আপেল (খলিল সিরিজ- ২)
খলিল ও তার লিমা দেব (খলিল সিরিজ-৩)
খলিল গেল ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল ও কলেজ (খলিল সিরিজ-৫)
খলিলের হইতে হইতেও হইলনা (খলিল সিরিজ-৬)
খলিল ও লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার (খলিল সিরিজ -৭)
খলিল আইডেন্টিটি (খলিল সিরিজ -৮)
খলিল সুপ্রিমাসি (খলিল সিরিজ -৯)
খলিল আল্টিমেটাম (খলিল সিরিজ-১০)
খলিল ও আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল (খলিল সিরিজ-১১)
খলিল প্রমান করিল আইন্সটাইন ভুল বলেছিলেন। (খলিল সিরিজ-১২)
খলিল সিরিজ এর আগে ভাল লেগে থাকলে ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ এ একটা লাইক দিয়েন