গল্প শুরু হল
আইন্সটাইন এর নিঃসংগ চিন্তর ফসল হল ১৯০৫ সালে প্রকাশিত অসাধারন ৩ টা প্রবন্ধ যার যে কোন একটার কারনেই তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকতেন। প্রথমটি ছিল প্ল্যাঙ্কের শক্তির কোয়ান্টাম এর ধারনা সম্প্রসারন আলোক ধারনা সৃষ্টি যেখানে ফটো ইলেকট্রিক ক্রিয়া এর সঠিক ব্যাখ্যাটা পাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি ছিল ব্রাউনীয় গতির উপর। ভাসমান বস্তুকনার গতি থেকে গ্যাস অনুর আকৃতি সম্পর্কে ধারনা। তৃতীয়টা আপেক্ষিকতার উপর যা আমাদের দেশ কাল সম্পর্কে ধারনাটাই পালটে দেয়।
চলুন দেখা যাক খলিল কিভাবে আইন্সটাইন কে ভুল প্রমান করল।
খলিল এখন স্বর্গ নরকের দুয়ারে আছে। পাপ পূণ্য বিচার করে নির্ধারন করা হবে খলিল এর অবস্থা কই? স্বর্গ? নাকি নরক? মৃত্যুর পরের জগতে খলিল কিভাবে আসল সে সম্পর্কে সম্যক ধারনা আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না। খলিল এর পাপ পূন্য বিচার করে তাকে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট যে দেওয়ার কথা তিনি বিরষ মনোভাব নিয়ে খলিলের সামনে এসে বললেন,
- ভাইজান আপনার নামে দেখি রেপ কেস আসে। আপনি স্বর্গ পাইবেন না।
খলিল বলল, ঐ মিয়া ফাইজলামি করেন!! আজ পর্যন্ত ইহকালে কোনো মেয়ে জিএফ হইতে রাজি হইল না তাহলে এইসব কিভাবে আমি করমু?
- আরে রাজি না হইলে যেটা করে সেটাই তো রেপ। নাহ বেহেশত যাইতে পারবেননা।
পরকালের বিচার ব্যবস্থায় ততক্ষনে গ্যাঞ্জাম শুরু হয়ে গেছে। খলিলের চেচামেচি তে আরো লোকজন এসে হাজির। খলিল বলে, আমি যদি রেপ করি তাইলে সেটার প্রমান লাগবে। প্রমান কই? আরো অনেকক্ষন ঝামেলার পর বোঝা গেল প্রমান ছাড়া তাকে অভিযুক্ত করা যায় না। "খলিল" লিখে সার্চ দেওয়ার সাথে সাথে পরকালের অপারেটিং সিস্টেম এ ঝামেলা হওয়ায় খলিলের ইহকালের সব রেকর্ড যোগাড় করতে নাকি এখন ৭ দিন লাগবে। তাহলে এই ৭ দিন খলিল কই থাকবে? ঠিক আছে স্বর্গ আর নরকের মাঝখানের গেস্ট হাউজ এ খলিলকে রাখার ব্যবস্থা করা হল। খলিল ওইখানে থেকেও চেচামেচি শুরু করল। আমার হুরপরী কই।? কিন্তু স্বর্গে প্রবেশ না করলে নাকি হুরপরী এর সুবিধা ভোগ করা যাবেনা। আর খলিল রেপ কেস এ অভিযুক্ত। কাজেই কোনোই আশা নাই।
দুইদিন খলিল স্বর্গ এর গেস্ট হাউসে খাইয়া দাইয়া কাটায় তৃতীয়দিন একটু দোযখে উকি মারল। স্বর্গ আর নরকের মাঝখানের দেওয়াল আছে। অনেকেই নরক থেকে স্বর্গে যাওয়ার চেস্টা করে। তাই স্পেশাল পাহারার ব্যবস্থা। হটাত খলিল দেখল কিছু বাংলাদেশি একদিকে। ওইদিকে আবার পাহারা নাই!! খলিল একজন কে জিজ্ঞেস করল ঐখানে পাহারা নাই কেন? জবাব আসল বাংলাদেশিরা একজন যাইতে পারলে আরেকজন টাইনা তাকে নামায় দেয়, স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য। তাই ঐখানে নাকি পাহারা লাগেনা। অটো সিস্টেম।
স্বর্গের পিসি এর অপারেটিং সিস্টেম ঠিক হওয়ার পর খলিল কে আনা হল। রেপ কেস এর ফাইল খোলা হল। নাহ খলিল জীবনে কোলবালিশ ছাড়া আর কোনো কিছুকেই রেপ করেনাই। কোলবালিশ রেপ এর জন্য স্বর্গ মিস হবে না। কিন্তু তার থেকে অবাক করা ব্যাপার হল খলিল এর নাকি এখন মারা যাওয়ারই কথা না। যমদূত ভুল করে ফেলসে। মারা যাওয়ার কথা জলিল এর। যমদূত চোখে কম দেখে তাই খলিল কে নিয়ে আসছে।
খলিল আবারো চেচামেচি শুরু করে দিল। এত বড় অন্যায়!! সবাই মিলে মিশে খলিল কে বোঝানো শুরু করল, ঠিক আছে!! তোমাকে আবার ইহকালে পাঠানো হবে। কিন্তু তাতেও খলিলের সমস্যা। খলিল বলতে লাগল আমার জিএফ টা কই? জোড়ায় জোড়ায় না সবাইকে বানানো হয়!! আমার সাথে কাকে বানানো হইসে? খলিল এর ফাইল আবার চেক করা হল। খলিল এর জোড়া সার্চ করতে গিয়ে অপারেটিং সিস্টেমটা আবার ফেইল মারল। এত মহা মুসিব্বতের ব্যাপার। খলিল ও কান্নাকাটি শুরু করে দিল তার একটাই কথা- তার জোড়া কে!! এটা না জেনে সে ইহকালে যাবেনা। আবার পরকালেও খলিল কে রাখা যায় না পরকালের গেস্ট হাইজে ৭ দিনের বেশি থাকার নিয়ম নাই। তখন উপর থেকে নির্দেশ আসল। ঠিক আছে খলিল কে তার জোড়া বানায় দেওয়া হবে। সমস্যা হল ২০১০ সালের দিকে যত মেয়ে আছে তাদের সবার অন্যের সাথে জোড়া। খলিল বলল ঠিক আছে। তাইলে আমাকে আরো আগে পাঠান। কিন্তু আমার জিএফ চাই। যেভাবেই হোক। অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করা হল খলিলকে কালের আগে ফেরত পাঠানো হবে। তবে সেখানে নিশ্চিন্ত খলিল এর পরকালের স্মৃতি থাকবেনা।
খলিল ইহকালের কোনো এক কালে আছে। রান্না করার জন্য তার এখন লাকড়ি দরকার। তাই কাঠ কাটতে কুড়াল নিয়ে সে বের হয়ে গেল।
আইন্সটাইন তখন আমেরিকা তে। নাতসি বাহিনীর এর ভয়ে সেখানে তার অবস্থান। তিনি হাটছেন। দূরে দেখলেন এক কিশোরী। ১৫-১৬ বছর বয়স হবে। কিশোরী আপেল গাছ এর নিচ থেকে আপেল কুড়াচ্ছে। সেই কিশোরিকে গাছের উপর থেকে অবলোকন করছে বেকুব দর্শন এক বালক। আইন্সটাইন কিশোরীকে জিজ্ঞেস করলেন তার নাম কি? কিশোরী বলল, মেরিলিন মনরো। আইন্সটাইন এর আপেল গাছ দেখে নিউটন এর কথা মনে পড়ল। এই আপেল পড়ার কারনেই গ্রাভিটেশন এর আবিষ্কার। পড়ে আইন্সটাইন কয়েক দিন আগেই গ্রাভিটেশন নিয়ে সবাইকে একটা কথা বলেছিলেন।
খলিল কে বলা হয়েছিল একটা গাছের ডাল কেটে নিয়ে আসতে গাধাটা যেই ডাল এর উপর বসছে সেই ডালটাই কাটছিল। তারপর যা হওয়ার তাই হল। ডাল সমেত ভুপাতিত। খলিল "আউ মাউ" করা শুরু করল। মনরো তাকে ধরতে দৌড়িয়ে গেল। আইন্সটাইন এর প্রথম বারের মত মনে হল তার এর আগে বলা একটা কথা হয়ত ভুল ছিল।
সেই দিন আইন্সটাইন তার ব্যাক্তিগত ডায়েরি তে লিখল, আমি এর আগে বলেছিলাম, “Gravitation can not be held responsible for people falling in love." (এই কথাটা আইন্সটাইন সত্যি বলেছিলেন) ব্যাপারটার সাথে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারলাম না। আমার এখন ধারনা ক্ষেত্র বিশেষে অভিকর্ষ বলের কারনে ফলিং ইন লাভ হলেও হতে পারে।
বস্তুত, আপেল গাছ থকে আপেল যদি গ্র্যাভিটেশন এর কারনে পড়ে তাহলে খলিল ও গ্র্যাভিটেশন এর কারনেই আপেল গাছ থেকে মাটিতে পড়বে।
খলিল এর কারনে আইন্সটাইন এর একটা কথা প্রায় ভুল প্রমানিত হল। তবে খলিল এর সাথে মনরোর প্রেম হয়েছিল কিনা সেটা ইতিহাস এর আড়ালেই ঢাকা পড়ে গিয়েছি। আমরা কেউ ব্যাপারটা জানিনা। শুধু মাত্র খলিলের কারনেই সন্দেহটা থেকেই যায়। কারন, খলিল তো খলিল ই।
আগের গুলার লিঙ্ক
খলিল ও তার গার্লফ্রেন্ড উইশ (খলিল সিরিজ- ১)
খলিল ও তার ম্যাজিক আপেল (খলিল সিরিজ-২)
খলিল ও তার লিমা দেব (খলিল সিরিজ-৩)
খলিল গেল ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল ও কলেজ (খলিল সিরিজ-৫)
খলিলের হইতে হইতেও হইলনা (খলিল সিরিজ-৬)
খলিল ও লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার (খলিল সিরিজ -৭)
খলিল আইডেন্টিটি (খলিল সিরিজ -৮)
খলিল সুপ্রিমাসি (খলিল সিরিজ -৯)
খলিল আল্টিমেটাম (খলিল সিরিজ-১০)
খলিল ও আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল (খলিল সিরিজ-১১)
খলিল সিরিজ এর আগে ভাল লেগে থাকলে ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ এ একটা লাইক দিয়েন