কার্জন হল এর সঠিক বানানটা সঠিক ভাবে খুব কম জায়গায় দেখেছি। Kurzon, Karzon, Karjon, Carzon, Carzone এরকম অনেক গুলো বানান দেখা হয়ে গেছে। আমার নিজেরই এক বন্ধু একবার ইয়াহু মেসেঞ্জার এ আমাকে বলল কালকে Kargon এ থাকিস, দেখা হবে। আমি তাকে বললাম এটা কি লিখলি!! সে বলল সে নাকি বাংলায় লিখেছে এটা কোনো ব্যাপার না। মাঝে মাঝে ইংরেজি হরফে বাংলা মনে হয় না লেখাই ভাল।
কার্জন হলের সঠিক বানান CURZON যেহেতু ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় (ভাইরা ভাই টাইপ কোনো সম্পর্ক বলে আমার ধারনা) লর্ড কার্জনের নাম অনুসারেই এর নাম "কার্জন হল"।
কার্জন হল হচ্ছে বাংলাদেশ এ যে কয়টি চমৎকার স্থাপত্য এর কাজ আছে তার মধ্যে অন্যতম। কার্জন হলের সিড়ি থেকে শুরু করে অনেক কিছুই কাঠের। কি কাঠ কে জানে!! ১০০ বছর ধরে টিকে থাকা এই বিল্ডিং আমার ধারনা আরো ১০০ বছরেও তার কিছু হবেনা।
আমাদের মহান মাতৃভাষা আন্দোলন এর সুচনা এখান থেকেই। ১৯৪৮ সালে মুহম্মদ আলি জিন্নাহ উর্দু নামক একটা ভাষা যেটা খুব কম মানুষ এর মুখের ভাষা সেটাকে যখন একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষনা দেন তখন এখানে অনেকেই বলে উঠে "না না না"।
কার্জন হলে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপিত হয় ১৯০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী। এটাকে তখন টাউন হল বলা হত। ১৯১১ সালে এটা ঢাকা কলেজ এর অংশ হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর বিশ্ববিদ্যালয় এর বিজ্ঞান বিভাগ-এর অংশ হয়।
কার্জন হল এ যে অংশটা টাউন হল নামে পরিচিত ছিল সেখানে সাইন্স এর সব পরীক্ষা গুলো অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা হলটি দেখার মত। তার ভেতরের গম্বুজ গুলাও দেখার মত। তার পিছনে পরীক্ষার সিট পড়লে অন্যদের সাথে দেখাদেখি করাটাও দেখার মত। (যেহেতু লেখক নিজেই অনেক পরীক্ষা দিয়েছেন)।
অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বলতে কলাভবন টাকেই বুঝায়। পেপার এ নিউজ এ দেখা যায় খালি কলাভবনের ছবি। কার্জন যে এক অপার বিস্ময় তার গুরুত্ব খুবই কম। ব্রিটিশদের কাছে ব্যাপারটা তা না। নিজেদের বুদ্ধি আর ছল কৌশলে এক সময় দুনিয়া শাসন করা ব্রিটিশরা ঠিকি জানে তাদের কীর্তি কে সম্মান করতে। তাই অনেক সময় ই দেখা যায় বিভিন্ন ফরেইনারদের আগমন ঘটে কার্জন হল এ। ভিনদেশে এসে নিজেদের প্রাচীন কীর্তি দেখার চেস্টা করে।
রাতের কার্জন হল আরেক অপার বিস্ময়। যেন এক ভিন্ন অনুভুতি। ভার্সিটি লাইফ এ বেশ কয়েকবার সারারাত কার্জন হলে কাটিয়েছি (একফোটাও না ঘুমিয়ে শুধু মাত্র আড্ডা মেরে)। রাতের কার্জন হল যেন কথা বলে মানুষের সাথে। যেন প্রকাশ করতে চায় তার মহিমা আর তার ইতিহাস এর কথা। কারন কার্জন হলের সাথে ইতিহাস এর অনেক গর্ব যে জড়িয়ে আছে।
কার্জন হলের এবং তার আশে পাশের যে ছবিগুলো দেওয়া হচ্ছে এখানে, ছবি গুলো আমার তোলা না। এরকম ছবি তোলাটা মোটামুটি যোগ্যতার ব্যাপার। আমার অনুজপ্রতিম রঞ্জু এর তোলা। সেও আমার মত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
শহীদুল্লাহ হলের পুকুর পাড় এর ছবিও আছে। রঞ্জুর পক্ষে ১৯০০ সালের দিকে গিয়ে লর্ডকার্জনের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি দেখে তারটা নেট থেকে নেওয়া (প্রথমে ছিল)।
লাস্ট, বন্ধুদের সাথে কনভোকেশনের দিন ফিজিক্স ডিপার্টমেন্ট এর সামনে টুপি ফিক্কা মারা ছবি।
আমার নিজের সিঙ্গেল কার্জন হল এর সামনে টুপি ফিক্কা মারা ছবি।