(লেখাটা গত বছরের এই দিনে লিখেছিলাম। প্রাসংগিক মনে হওয়ায় রিপোস্ট করলাম)
শ্রদ্ধেয় নেত্রী,
আমি আপনার দলের কর্মী বা সমর্থক নই। তাই ‘প্রাণপ্রিয়’ নেত্রী কথাটা বললাম না। বস্তত, প্রাণ বিষয়টি আপনার মত রাজনৈতিকদলগুলোর প্রিয় বিষয়। তাই যখন তখন প্রাণ ত্যাগ বা প্রাণ সংহার করতে সবাই প্রাণপাত করছে প্রাণান্তকর প্রক্রিয়ায়।
যাই হোক, মূল বিষয়ে আসি। আপনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নানা রকম প্রচারণা এবং প্ররোচনা চলছে এবং চলবে। আপনিও আপনার বিরুদ্ধদলের বিরুদ্ধে একইভাবে তৎপর। প্রচারণা যতই থাক, মাননীয় দেশনেত্রী, একথা তো সত্যি যে, আপনিও এদেশের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় মানুষ। কিছু ক্ষেত্রে আমি আপনাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও সফল বলবো। ব্যখ্যা করি—
মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বপ্রদানকারী দল হিসাবে, এদেশের আপামর জনসাধারণের আবেগ আওয়ামী রাজনীতির দিকেই থাকা স্বাভাবিক ছিল যেহেতু মুক্তিযুদ্ধই এখন পর্যন্ত এ জাতীর শ্রেষ্ঠ অর্জন। অথচ সেই মুক্তযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামাত শিবিরের সাথে একজোটে থেকেও আপনি এদেশের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা, এটা অবশ্যই একটি বিশাল যোগ্যতার ব্যপার।
তাছাড়া, আপনার সেনা অফিসার-কাম রাজনীতিক স্বামী যখন খুন হলেন আপনি এক নিতান্ত কূলবধু হয়েও কুল হারান নি বরঙ প্রচন্ড “কুল” থেকেছেন। হাল ধরেছেন দলের। আপনার দলের মত একটি দলের এদেশে প্রয়োজন ছিল। কারন তা না হলে গণতন্ত্র একপেশে হয়ে স্বৈরতন্ত্রের দিকে মোড় নিতে পারে।
যাই হোক, আপনি গণমানুষের নেতা। অন্ততপক্ষে এদেশে দক্ষিণপন্থী ধারাটির মূল নেতা তো বটেই। যে দক্ষিনপন্থী ধারাটি সক্রিয় সেই পাকিস্তান আন্দোলনের সময় থেকে।
আপনাকে আজ আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি কারণ আজকে আপনার জন্মদিন। আপনার হয়ত মনে নাও থাকতে পারে, আপনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেবার পরে সরকারী গেজেটে এই দিনটিকেই (১৯ আগস্ট, ১৯৪৭) আপনার জন্মদিন হিসাবে লেখা হয়েছিল। বিশ্বাস না হলে আপনি সেই সময়ের গেজেট টি আজ রাতেই খুলে একবার দেখে নিন। আমি এই গেজেটটিকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে চাই। কারন তখন আপনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, সত্যি কথাটাকেই তখন বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে ধরে নিচ্ছি। আপনি প্রথমবারের মত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কাজেই আজকে আপনার এই শুভ জন্মদিনে আমার মত একজন অভাজনের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। তাছাড়া আপনার আরেকটি যে জন্মদিন রয়েছে (১৫ আগস্ট) সেদিন আপনি দেশে ছিলেন না (২০১২ সালের কথা)। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আজকেও আপনার আরেকটি জন্মদিন। ফলে আপনাকে শুভেচ্ছা জানানোর কয়েকটি অপশন আমাদের হাতে রয়েছে।
আমার মত নগন্য ব্যক্তির উপহার আপনার কাছে কিভাবে পৌছাব বুঝতে পারছিনা। আপনার আজকের জন্মদিনের উপহার স্বরুপ আমি বংগবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি কিনেছিলাম। কিন্তু আপনার কাছে পৌছানো দুষ্কর। আমি যদি বইটি ফালু ভাইয়ের অফিসে পৌছে দেই তাহলে রাতের মধ্যেই আপনার হাতে সেটি পৌছবে কিনা জানিয়ে বাধিত করবেন।
আরজ গুজার,