মুসা ইব্রাহীম- ‘বাংলা ভুতের’ প্রথম স্বাক্ষাতকার!!!
খবরটা হঠাতই এলো...
আজ সকাল দশটায় টেলিফোনে খবর পাই যে, আমাদের বিজয়ী বীর মুসা আজকেই কাঠমান্ডুতে আসছে। আমাদের আগের খবর অনুযায়ী ওর আসার কথা ২৯ তারিখে। তাই হঠাত করে এ খবর পেয়ে আমি এম্বেসির সাথে যোগাযোগ করি। পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে আমরা নেপাল-চায়না বর্ডারের তাতপানির দিকে এগিয়ে যাব। দুটো গাড়ি নিয়ে আমরা রওয়ানা হই। আমাদের দলে ছিলেন, আনিসুল হক, বেঞ্চমার্ক ঢাকা অফিসের সিইও আশরাফ কায়সার, বাংলাদেশ এম্বেসির নাসরীন জাহান লিপি, ডেইলি স্টার এর পিনাকী রায়, চ্যানেল আই এর পান্থ, হিমালয়ান হলিডেজ এর কোমল আরিয়াল, কাঠমান্ডুর বন্ধু প্রকাশ শ্রেষ্ঠা এবং আমি। আমরা কাঠমান্ডু থেকে ৬০ কিমি দূরে দোলাল ঘাটে ওর বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। আমরা প্রায় প্রত্যেকটি বাস দেখলেই হাত উচু করে খোজ নিচ্ছিলাম। অধীর অপেক্ষা। অবশেষে বিকেল ৫ টার দিকে ওর বাস দোলাল ঘাটে আসে। তখন আমরা বাস থামিয়ে তাকে নামিয়ে আনি। বাংলাদেশের পতাকা এবং ফুল দিয়ে তাকে বরণ করা হয়। তার গায়ে বাংলাদেশের পতাকা জড়িয়ে দেয়া হয়। সবার চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। আবাগে আমাদের সবারই বাকরুদ্ধ হয়ে আসছিল।
মুসাকে যাবার সময় যেমন দেখেছিলাম এখন তার চেয়েও অনেক রোগা পাতলা দেখাচ্ছিল। মুখ ভর্তি দাড়ি। লম্বা চুল। তার সাথে আরো ছিল তার অভিযানের তিন সংগি সোম বাহাদুর তামাং, কৈলাশ তামাং এবং কাপিলা। তারাও আমাদের সাথে যোগ দেয়। এর পর আমরা মুসাকে নিয়ে মিস্টিমুখ করাই। লিপি আপা মুসার জন্য পায়েস রান্না করে নিয়ে যান। ৬ টার দিকে আমরা আবার কাঠমান্ডুর দিকে রওয়ানা দেই এবং ৯ টার দিকে কাঠমান্ডুতে পৌছি। কাঠমান্ডুতে হোটেল থামেলে মুসার জন্য আগেই রুম বুক করা ছিল। সেখানে উপস্থিত হন মুসার ঢাকার বন্ধু এবং ডেইলি স্টারের তার সহকর্মি বৃন্দ। সেখানে সবাই মিলে বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্লোগানে মুখরিত করে পুরো হোটেল প্রাংগণ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত ড নিম চন্দ্র ভৌমিক আসেন শুভেচ্ছা জানাতে। পথে কথা হল মুসার সাথে তার অভিযানের অভিজ্ঞতা নিয়ে।
মুসা বর্ননা করল সেই সাহসী অভিযাত্রার কথা। ১৫ তারিখেই তারা এডভান্সড বেইস ক্যাম্প এ পৌছে যায়। কিন্তু এর পর শুরু হয় খারাপ আবহাওয়া। তারপর ১৯ তারিখে তারা আবার রওয়ানা দেয়। ২২ তারিখ রাত ৮ টায় তাদের ক্যাম্প সি থেকে তারা শেষ সামিটে ওঠার জন্য যাত্রা করে এবং সকাল ৯ টায় পৌছে যায় এভারেস্ট এর চুড়ায়। এভারেস্ট এর চুড়া প্রায় ৩০ ফুট লম্বা এবং ৫ ফুট চওড়া। সেখানে মুসা প্রায় ২৫ মিনিট অবস্থান করে। চুড়ায় থাকা বুদ্ধমুর্তির পাশে ছবি তোলা হয়। তারপর ওরা আস্তে আস্তে আবার নামতে থাকে। ২৫ তারিখে ও এডভান্সড বেজক্যাম্প এ নেমে আসে। তারপর আজ সকালে হঠাত ঘুম থেকে তুলে জানানো হয় যে আজি যেতে হবে। আমাদের কথার চুম্বক অংশ তুলে ধরছি----
“ওরা সবাই আমাকে বাংলা ভুত ডাকত। কারন আমি অনেক দিন ধরে দাড়ি কাটছিনা। (হা হা হা)। প্রথম যখন চূড়ায় উঠি, তখন ভোরের আলো ফুটছে। এভারেস্ট এর চূড়া ৩০ ফুট লম্বা আর ৫ ফুটের মত চওড়া। একটা বুদ্ধমুর্তি আছে। আমার ক্যামেরা বের করতেই লেগে যায় ৫ মিনিট। পরে ছবি তুলে নেই।“
“যাবার সময় আমার অক্সিজেনের পাইপ ফুটো হয়ে যায়। আমি নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। ভাগ্যিস, একজন শেরপা সেটা দেখতে পায়। পরে ও সেটা ঠিক করে নেয়”
“সকালে আমাদের খেতে হত পরিজ। অত্যন্ত বিস্বাদ একটা জিনিস। আমি চিনি বা মধু মাখিয়ে খেতাম”
“পথে আসার সময় দেখি এক হাঙ্গেরিয়ান অভিযাত্রির লাশ। খুব মায়া হল। এবছর এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬ জন মারা গেছে এ পথে”
“আমি কর্পোরেট অফিসের কেরানী হয়ে বাচতে চাইনি। এভারেস্ট জয় আমার জীবনের শেষ নয়, বরং শুরু। আমার অনেক স্বপ্ন আছে। সে স্বপ্নগুলো পুরনে এই জয় আমাকে সাহায্য করবে। তরুনদের বলতে চাই যে, কর্পোরেট কেরানী না হয়েও জীবনকে অনেকভাবে উপভোগ করা সম্ভব। সামনে আমি এডুকেশন নিয়ে কাজ করতে চাই”
“যারা সন্দেহ ছড়িয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন ক্ষোভ নেই। এমন তো হতেই পারে। আজকে আমি তাদের বুকে জড়িয়ে নিতে চাই, বলতে চাই যে আমাদের সবাই মিলেমিশে এখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার সময়।“
“আমার যাত্রা ছিল ডু অর ডাই সিশুয়েশন। আমাকে পারতেই হবে। আমার কোন বড় স্পন্সর ছিলনা। পরিবারের টাকা না বলে আমি নিয়ে এসেছি। প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা আমার খরচ হয়েছে। কাজেই আমাকে এটা পারতেই হত”
“হাই অল্টিচিউড এ একটা প্রব্লেম হয়। মেজাজ খিট খিটে হয়ে যায়। কিন্তু আমার মেজাজ এবার খুব ঠান্ডা ছিল। আর আমার দলের শেরপারা খুবই সাহায্য করেছে। তারা অত্যন্ত দক্ষ এবং খুবই হেল্পফুল। আমি সবসময়ে তাদের পরামর্শ মেনে চলতাম। যত কিছুই হোক, তারা আমাদের চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ। আমি প্রথমেই শুকরিয়া জানাই আল্লাহ কে, তারপর আমার শেরপা সহযোদ্ধাদের”
আশরাফ কায়সার বললেন, এখন তো অনেকেই তোমার সাফল্যের ভাগীদার হতে চাবে। কে যেন দেখলাম পত্রিকায় বলেছে যে, মুসার বউতো আমার ছাত্রী ছিল। এখন হয়ত তোমাদের বাসায় যে বুয়া সাপ্লাই দেয় সেও বলবে আমার সাপ্লাই করা বুয়ার হাতে চা খেয়ে মুসা যাত্রা শুরু করেছিল।
এ পর্যায়ে আনিসুল হক একটা কৌতুক বলেন ফেসবুক থেকে নেয়া-----
প্রভুঃ তুমি কি বিশ্বাস কর যে মুসা এভারেস্ট এ উঠিয়াছে?
আমিঃ হা, প্রভু আমি বিশ্বাস করি। কারন সেখানে আর কোন বাঙ্গালি ছিলনা যে তাহাকে পা টানিয়া নামাইয়া দিবে। কাজেই সে এভারেস্টের চুড়ায় উঠিয়াছে।
প্রভুঃ সত্য, বাংগালি একা একা চেষ্টা করিলে চাদেও যাইতে পারিবে। তবে একাধিক বাংগালি হইলে আমিও রক্ষা করিতে পারিব কিনা সন্দেহ।
----চলবে----
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন