হটাৎ করে বাংলাদেশের জাতীয় দিবসে এটা আবার কি লেখা?
এটা হুট করে কোনো লেখা না, এটা আমার জীবনের কথা
বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় প্রায়ই দেখি দেশের স্কুলের ছাত্রদের পিটিয়ে হাসপাতাল, ভূ-পাতালে, নরকে, স্বর্গে পাঠানো হয়, বাংলা সমাজে অতি সম্মানিত করা শিক্ষক নামের এক দল মানুষ নামধারী জীবিত বিষয়ের মাধ্যমে।
স্কুলের ছেলেদের চুল ধরে কাটা, পেটানো হয় বেয়াদবি, বোকা, অ-মেধাবী বলে। অপমান করা হয় কারণে অকারণে। স্কেলের বাড়ি, বেতের বাড়ি - এসব তো কোনো ব্যাপারই নয়। (১৯৮০, ১৯৯০, ২০০০, ২০১২ সাল)। কিন্তু আমরা যারা বড় হয়ে গিয়েছি, বাংলা ব্লগ লিখি, আমরা কেন বাস্তবে কিছু করছি না?
আরও অনেক রকমের বিষয় যা কিনা বাংলা ভাষার পাঠক মাত্রই অবগত। অনেক বছর কেটে গেছে। বাংলার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এসব শিক্ষককে দোষ দেয়া যায় না, কারণ এরা অ-শিক্ষিত, অ-সভ্য। সভ্যতা আলো এদের মাঝে পৌছেনি। এদেরকে সভ্য করতে হবে। আমার এ জন্মে পারবো কিনা, জানি না। জ্বি, এটা আমার স্বপ্ন।
দেশে থাকাকালীন সময় জানতাম, বাচ্চাদের আদর করতে হয় ছেলে মানুষী বিষয় নিয়ে। এই যেমন, এই বাবু (এটা বলেই গালে একটা চিমটি নরম মারা), শিশু সুলভ আচরন করা শিশুদের সাথে। তাদেরকে খাইয়ে দেয়া, তাদেরকে পোষাক পরিয়ে দেয়া - ইত্যাদি।
আমার জানা মতে, দেশে কমপক্ষে ঢাকায় গার্হস্হ্য বিজ্গান (!) কলেজ আছে, এরা কি করে জানি না।
বানসাই হলো গাছকে বড় হতে না দেয়া। গাছের সাইজকে ছোট করে রাখা।
[link|এখানে দেখুন কি সুন্দর
সৌভাগ্য না দূর্ভাগ্য - জানি না, এলাম বিভূইয়ে। বাংলা শব্দ বিভূয়ে হয়ে গেলো বেখাপ্পা। বিভূয়ে হয়ে গেলো স্ব-ভূয়ে। বিজন হলো স্বজন, আর স্বজন হলো বিজন। এটা আমার লেখা 'মানুষ কেনো দেশ ছাড়ে' লেখাটা পড়লেই বুঝতে পারবেন।
প্রথম সন্তানের পিতা হবার পর, বংগ সন্তান তার চির সত্য 'বানসাই' চর্চা করতে গিয়েই খেলাম ধরা এ বিভূইয়ে, ভিনদেশীদের কাছে। সেই কি ধরা! তাতে আমার হলো সরা।
আমার চার পাশ থেকে এ (বিভূয়ে) সমাজ ঘিরে ফেললো এই বলে যে, তুমি এমন ব্যবহার কেন করছো তার সাথে? এ' শিশু হলেও তিনি একজন মানুষ। {আমি ভাবি এ কি লেকচার রে বাবা! আমার পোলা, যেমনে খুশি তেমনে কথা কমু, কার বাপের কি!}
পুত মোর ৩ বৎসর। কি ট্রেনিং, জানেন? সকাল বেলা নিজে নিজে ঘুম থেকে উঠে, নিজে পটিতে বসে কাজ সেরে ধোয়া মোছা করে পটি ধুয়ে, ঘুমের কাপড় পরিবর্তন করে, রান্না ঘরে যেয়ে শুকনো খাবার খায়। নিজের বিছানা নিজে খুলে, সকাল বেলায় নিজে নিজে তুলে। বাইরে বেড়াতে যাবার সময় নিজে নিজে কাপড় পরে, আর নিজের কাপড় নিজে খুলে। কাপড় ময়লা হলে জমিয়ে নিজে নিজে ওয়াশিং মেশিনে ভরে সুইচ টিপে। আমার মনে হয় এ লেখা পড়ে, আপনি ভাবছেন, আমি গাল গপ্প করছি?
না।
এখানকার (বিভূইয়ে) ২য় , ৩য় শ্রেনীর বালক বালিকারা নিজেরাই পোষাক পড়ে, ফ্লাটের চাবি নিয়ে স্কুলে যায়। পাঠ শেষে নিজেরাই বাড়ী ফেরে। কারণ পিতা মাতা দাদা দাদী -সবাই কর্মরত। এটা নিশ্চয়ই অবিশষ্য , তাই না?
ব্লগে, আমাদের এই জাতীয় দিবসে, এই বিষয়ে লিখছি বিশেষ কারণে। আমরা বাংলাদেশে
১। বাবার কাধে সারা পরিবার বসে বসে খাই, আর এ সপ্তাহের নাটক দেখি।
২। ১০ বছরের বাবুকে (!) হাতে করে তুলে খাওয়ানো হয়।
৩। অর্ধেক মহিলা জনগন ঘরে বসে থাকে।
৪। মানসিক ভাবে ১০০% প্রতিবন্ধি, কারণ, ছেলেরা মেয়েদের সাথে মিশতে পারে না।(ভয়- তারা যৌন কাজে লিপ্ত হবে।) দেশের অর্ধেক মানুষ বাকী অর্ধেক মানুষের খবর জানে না। ইভ-টিজিং জিনিসটা খুব একটা বুঝি না, (তবে এটা অশ্লীল উত্তাক্ত বিপরিত লিংগের প্রতি - এটকুই বুঝি) -এসবের উৎসই হলো, ছেলেমেয়েদের কে বোঝাতে হবে, বাংলাদেশে সবাই মানুষ। মেয়েরাও ভাত খায়, মেয়েরাও সাইকেল চালাতে পারে, কসমসে রকেটে করে যেতে পারে।
৫। বাংলাদেশের মানুষ ভাবে না কবে তাদের অর্থনৈতিক মুক্তি হবে, তারা দুই বেটি আর কে হবে পরবর্তী রাজ (ফেইসবুকে ভোট চলে!!) পুত। {জয় তারেক হ য ব র ল }{দেশে বিনোদনের অভাব, তাই এসব নিয়েই আমাদের দিন রাত্রি।
৬। বানসাই রাষ্ট্রের লিলিপুটি মনোভাব গড়ে উঠে ছোট বেলা থেকেই, যা কিনা আমরা একটা কারখানার মধ্যে রিসাইকেল হচ্ছি অনবরত।
তাই, দয়া করে, বাচ্চাদের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করুন, শিশু সুলভ আচরণ করে তাদের (এবং আমাদের গোটা বাংলাদেশের) ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না।
ইউরোপে তাই সবাই স্বাবলম্বী। নিজের বিষয় নিজেই সমাধান করতে পারে। আমি এখন বুঝতে পারি বলেই, আপনাদের বলছি।
আমার ছেলের নাম প্রহর। মেয়ের না বেলা।
ওদের জন্যে দোয়া করবেন।
ওরাই আমার বাংলাদেশ।
http://www.banglarussia.narod.ru
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ২:১৩