আজ রাতেও ও এসেছিলো এক নতুন ভঙ্গিমায় । এসে প্রথমে একটু আনমনে ছিলো। আসলে এটা কি ওর ভয় ছিলো নাকি লজ্জা? আমি বুঝতে পারি নাই। প্রথমে মনে হয়েছিলো অনুশুচনার চাদর যেন ওকে ঢেকে রেখেছে আপন প্রানে। কিন্তু পরে, পরে মনে হয়েছে আসলে তা না।
আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম অন্য দিকে ঠিক নির্বাক পাহাড়ের মত। পরে দেখি আস্তে আস্তে ও আমার পাশে এসে দাঁড়ালো ঠিক কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামির মতো। মিনিট দুই চুপ । কোন কথা নেই। তারপর আস্তে আস্তে নিষ্পাপ ধোয়া তুলশি পাতার মত ভাব নিয়ে পৌষের কনকনে ঠান্ডা হাওয়া মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠলো- আর একটা সুযোগ দাও আমায়। তুমি দেখো আর কখনো এমনটা করবো না আমি। আর কখনো শিকল ছিড়ে যাবনা তোমার মন পিঞ্জর থেকে। আর কখনো স্বার্থপরতার নখ দিয়ে আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত করবো না তোমার মনের জমিন।
ওর এই কথা গুলো শুনে মনে হয়েছিলো সব বাদ দিয়ে আবার আপন করে নেই।
কিন্তু না, কারণ এর আগেও এমন কথা দিয়েছে বার বার আর ভেঙ্গেছেও শতবার। সত্যি কথা বলতে কি ওর কোন দোষ ছিলো না । দোষ আমারি। আমি ওকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছি। না বুঝে মরীচিকার পেছনে ছুটেছি উত্তপ্ত মরুর বুকে।
যাই হোক, এখন আমি অনেক বেশী কঠোর হয়ে গেছি ঠিক যেন কামারের শতবার পোড়ানো লোহার মত। ও আমার দিকে অপলকে তাকিয়ে ছিলো । ভেবেছিলো প্রতিবারের মতো এবারো আমি ওকে সব ভূলে আপন করে নেব।
কিন্তু,
আমি কী করলাম???
ঠিক বাজ পাখির মতো কপাল আর ভ্রুটা কুচকিয়ে আর চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম তোমার জন্য আমার মনে আর কোন জায়গাই নেই । যা আছে তা হলো-ঘৃণা, শুধুই ঘৃণা, অনেক ঘৃণা ।।
ও ভালো কথা ও কিন্তু স্বপ্নে এসেছিলো। স্বপ্নে আসার কারণও একটাই, আর তা হলো সামনে দাড়ানোর মতো মুখ ও সাহস কোনটাই ওর নেই।।