এইভাবে জীবনদার দেখা পাবো। কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। কেউই হয়তো কখনও এইরকমভাবে ভাবেনি। তবুও আমি দেখা পেলাম জীবনদার। আমি খুব পছন্দ করতাম জীবনদাকে। সকালবেলা তার হোটেলে রুটি দিয়ে নাস্তা না খেলে সারাদিনই আমার পেট খালি খালি মনে হতো। রুটির সাথে তার ভাজি কি যে স্বাদ ছিলো। জীবনদা আমারে দেখলেই বলতো কি চা খাবা?
জীবনদার যেদিন দেখা পেলাম সেদিন ছিলো অমাবশ্যা। গুটগুটে অন্ধকার। বিছানার এপাশ-ওপাশ করছি। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছেনা। ক্যাসিও ঘড়িটা মাথার কাছেই ছিলো। ২টা বাজে।
কিছুটা বিরক্ত হয়ে বিছানা থেকে উঠে বাজারে চলে আসলাম। হাতে সেই ক্যাসিও ঘড়িটা। অন্ধকারে তেমন কিছুই বুঝা যাচ্ছেনা। বাজারে একটা মানুষও চোখে পড়লোনা। আমি হাটঁতে হাটঁতে কালিমন্দিরের কাছে চলে আসলাম। এই দিকটায় অন্ধকারটা যেনো আরো গভীর। মনে হয় এই অন্ধকারই কাউকে গিলে ফেলতে পারে। হালকা বাতাসে ধূপের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বরাবরই ধূপের গন্ধটা আমার কাছে ভালো লাগে। তাই কালিমন্দিরের একদম সামনে চলে আসলাম। মন্দিরের ভিতরে দীপবাতি জ্বলছে। হঠাৎ করে আমার কালির মূর্ত্তির দিকে চোখ পড়লো। ভয় পেয়ে গেলাম। জ্বিহবা বের করে হাতে বলিদা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে প্রাণ পেলে এখনি বুঝি ঝাপিয়ে পড়বে। তাই এদিকটা থেকে সরে আসতে জোড়ে পা চালালাম।
জীবনদার হোটেলটার সামনে এসে পড়েছি। বাজারের মাঝখানে হোটেলটার চারদিকে খোলা। শুধুমাত্র একটা চালা। বসার জন্য সুন্দর ব্যবস্থা করা আছে। কিছুটা হাফিয়ে পড়েছি ভেবে একটা বেন্চে বসলাম। সুনসান নিরবতা। সারা বাজার ঘুমাচ্ছে। আকাশের পানে মিটিমিটি তারা খুঁজতেছিলাম মনে হয়।
হঠাৎ................ চা খাবা এমন কথায় লাফ দিয়ে উঠলাম। কে কে বলে আমার গলা কেঁপে উঠলো। এই আ-মি তোমার জীবনদা। জী-ব-ন-দা........
সামনে তাকাতেই অন্ধকারে জীবনদার অস্তিত্ব অনুভব করলাম। খুবই অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলে উঠলাম জীবনদা আপনি.....................।
ভূত নিয়ে ভূতানি (আমার ভূতবেলা) - ১
ভূত নিয়ে ভূতানি (আমার ভূতবেলা) - ২