[ যারা ভূতে বিশ্বাস করেননা বা করতে চান না তাদের জন্য এই সত্য ঘটনাটি তুলে ধরলাম। ]
বিকালে মামাত ভাই খবর পাঠাল ভাট্রা বাজারে যাওয়ার জন্য। একটা সিক্রেট মিটিং আছে। তখন রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। আমি ভাবলাম একটা রিক্সা নিয়ে চলে যায়, আসার সময় এইটাই নিয়ে আসব। বাসা থেকে বাজারে এসে রিক্সা নিব ঠিক এমন সময় একজন বলতেছে চল আমি তুমাকে ভাট্রা বাজারে নামিয়ে দিয়ে যাবনে। আর আসার সময় দেখবা কিছুনা কিছু পেয়ে যাবা। আমি তার মোটর সাইকেলে উঠে গেলাম।
মিটিং চলছে। এইদিকে আমার আবার বাসায় যাওয়ার চিন্তা। সবাই বলছে আ-রে চিন্তা কইরনা একটা কিছু ঠিক করে দিবনে। ১২ টা বেজে গেল। মিটিংয়ের পরিসমাপ্তি ঘটল। কিন্তু বাসায় যাওয়ার মত কোন বাহন পাচ্ছিনা। মামাত ভাই থাকার জন্য অনেক জোরাজুরি করল। কিন্তু আমাকে বাসাতে যেতেই হবে।
আমি বললাম রাস্তাত আর বেশী না। আমি হেটেই চলে যেতে পারব। তখন বলল ঠিক আছে আমরা গিয়ে এগিয়ে দিয়ে আসি। আমি রাজি হলাম না। শেষে একা একাই রওনা হয়ে গেলাম।
প্রচন্ড শীত। চারদিক কুয়াশার চাদরে মোরা। সামান্য দূরেই কিছু দেখা যায়না। ফলে আকাশে চাদ থাকলেও পূর্ণিমার আলো ঐ ভাবে ছড়াতে পারছেনা। আমি হেটেই চলছি। সামনের জঙ্গলটাই যা একটু ভয়। আর তা হলে কোন সমস্যা নাই। আমি বুকে প্রচন্ড সাহস নিয়ে এগিয়ে চলছি। কানের ভিতর টিপ.. টপ.. টিপ.. টপ.. শব্দ ভেসে আসল। আমি পাত্তা দিলামনা। জঙ্গলটার যতকাছে যাচ্ছি টিপ.. টপ.. টিপ.. টপ.. শব্দটা বেড়েই চলছে। আমি যখন জঙ্গলটার কাছে পৌছালাম তখন মনে হলো যেন বৃষ্টি শুরু হলো। গাছের পাতায় জমা সমস্ত শিশির যেন আমার গায়ে ঢেলে দিবে। এমন সময় জঙ্গলের ভিতর কেউ সরে যাবার মতো করে একটা শব্দ হলো। আমি সেদিকে তাকিয়ে দেখি ছোট ছোট গাছের আড়াল থেকে দুই জোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে ভাবলাম নিশ্চয় শেয়াল। কিন্তু মন সে বড় অদ্ভুদ। ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে।
আমি আমার সমস্ত শক্তি নিয়ে জোড়ে জোড়ে হাটার চেষ্টা করছি। ত্রিমুখো রাস্তাটার সামনে এসে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম। কোন রাস্তাটা আমার বাসার দিকে ঠিক ঠাহর করতে পারছিনা। সবগুলো রাস্তায় কেমনজানি এক মনে হচ্ছে। শেষে আমার বাসার রাস্তাটা দিয়ে হাটা শুরু করলাম।
চলছিতো চলছিই এ রাস্তা যেন শেষ হবার নয়। আমি বুঝতে পারছি কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। কিন্তু অজানা এক কারনে পিছনেও যেতে পারছিনা। বারবার মনে হচ্ছে এইতো আরেকটু। একসময় আমার পায়ের নিচে পানির অস্তিত্ব অনুভব করলাম। তাকিয়ে দেখি আমি একটা প্রচন্ড বিলের তীরে দাঁড়িয়ে আছি। তখনি আমার মনে হলো কানাওয়াল ধরেছে আমাকে। অনেকের কাছে শুনেছিলাম রাত্রে কেউ একা দূরে কোথাও গেলে কানাওয়ালা ধরে পানির কাছে নিয়ে যায়। তারপর পানিতে ডুবিয়ে মারে। ভয়ে আমার শরীরের সমস্ত লোম দাড়িয়ে গেল। এক লাফে উপরে চলে আসলাম। গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার শুরু করলাম। শেষে বিলের উপরে কিছু বাড়ি আছে যে সেইখান থেকে চার-পাঁচ জন দৌড়ে এসে আমাকে উদ্ধার করল।
তাদেরকে দেখেতো আমি অবাক। আমি আমার বাসা থেকে আরো চার কি.মি. দূরে চলে এসেছি।
আমার কাছে ঘটনা শুনে তারাও বলল কানাওয়ালা ধরেছিল। তারপর তারা আমাকে বাসায় পৌছে দিল।