বিনোদন- মানব জীবনের জন্য একটি অপরিহার্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ বিনোদনের বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করে নিয়েছে যার কিছু ধাঁরা আজও অব্যাহত রয়েছে। যাত্রা, পালা গান, মঞ্চ নাটক, গল্প বলা, গান- বাজনা একসময় এসব ছিলো বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম।
১৮৯০ এর দিকে আবিষ্কার হলো এমন একটি যন্ত্রের- যার হাত ধরে বদলে গেলো সমগ্র মানব জাতির বিনোদনের মাধ্যম।
সূচীত হলো বিনোদনের নতুন এক ইতিহাস। আবিষ্কার করা হলো মোশন পিকচার ক্যামেরা। এই ক্যামেরাকে পুঁজি করে একে একে প্রতিষ্ঠা হতে লাগলো প্রোডাকশন হাউজের। প্রোডাকশন কোম্পানিগুলোর বুঝতে বাকি রইলো না- এবার সূচনা হতে যাচ্ছে নতুন এক ইতিহাসের…
ক্যামেরা আবিষ্কার তো হলো, কিন্তু এর দ্বারা মানুষকে বিনোদন দেয়া যায় কিভাবে? কি এমন করা যায় যা মানুষকে আনন্দ দেবে, বিনোদন দেবে? অহেতুক নড়াচড়া, আর মিনিংলেস কর্মকাণ্ড বিনোদনের বদলে বিরক্তির উদ্রেক ঘটাবে বৈকি। এ সময় আগমন ঘটে বেশ কিছু ‘মাষ্টার অফ পাপেট’স এর। সেই পুতুল নাচের কনসেপ্ট। এখানে শুধু তারা প্রাণহীন পুতুলের বদলে ব্যাবহার করবে জীবন্ত মানুষ, সুতার বদলে ব্যবহার করবে- ভয়েজ কমান্ড…
যারা পর্দার পেছন থেকে ডিরেকশন দিবে। মিনিংলেস কর্মকাণ্ডগুলোর মধ্যে প্রান সঞ্চার করবে যেনো সেগুলোর মাঝে মানুষ অর্থ খুঁজে পায়, মূল্যবোধ খুঁজে পায়, খুঁজে পায় তাদের নিত্য নৈমিত্তিক জীবন যাপনের প্রতিফলন…
বিনোদন জগতে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সূচনাটা হয় এভাবেই। এরপর বাকিটা ইতিহাস… এই ইতিহাসের পাতায় পাতায় রয়েছে অসংখ্য গুনি ব্যাক্তিদের নাম যাদেরকে আমি উপরে নাম দিয়েছি ‘মাষ্টার অফ পাপেট’স, অন্যভাবে বললে- ম্যাজিশিয়ান; যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে স্বীয় দক্ষতা আর সৃজনশীলতা দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন বিশ্বের অগনিত সিনেমাপ্রেমিকদের।
আজকের গল্প এমনই একজন ম্যাজিশিয়ানের যিনি চলমান চিত্রের মধ্য দিয়ে বাস্তবতাকে তুলে ধরার অসাধারন ক্ষমতাকে জয় করেছিলেন- তিনি সত্যজিৎ রায়। ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতায় যার জন্ম।
তার সম্পর্কে নতুন করে কিছুই আজ বলার নেই। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সত্যজিৎ রায় ছিলেন একাধারে একজন সফল ডিরেক্টর, প্রোডিউসার, স্ক্রিনরাইটার, লিরিসিস্ট, মিউজিক কম্পোজার, ক্যালিগ্রাফার, প্রচ্ছদশিল্পী এবং অবশ্যই সাহিত্য জগতের অন্যতম একজন সেরা লেখক। রায় পরিবারের আরও যে দুজন বিখ্যাত ব্যাক্তির নাম উল্লেখ না করলেই নয় তারা হলেন সত্যজিতের পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায় এবং পিতা সুকুমার রায়।
সত্যজিৎ রায়ের বাল্যকাল, কৈশোর, যৌবন, বার্ধক্য নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। সবার প্রায় মুখস্থ সেসব কথা…
আজ কথা বলা যাক তার সেরা কিছু কাজ নিয়ে।
ছোটবেলা থেকেই শিল্পের প্রতি গভীর টান ছিলো রায় সাহেবের। সেটা অবশ্য তার রক্তেই বইছিলো।
১৯৪৩ এর দিকে ব্রিটিশদের অধীনে একটি অ্যাড কোম্পানিতে (D.J Keymer) জুনিয়র ভিজুয়ালাইজার হিসেবে কাজ শুরু করেন সত্যজিৎ রায়। পরে সেখান থেকে যোগ দেন Signet Press নামক কলকাতার একটি প্রসিদ্ধ পাবলিশিং কোম্পানিতে। সেখানে তিনি অনেক বিখ্যাত বইয়ের প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে ছিলেন (জীবনানন্দ দাসের- বনলতা সেন, বিভুতিভুষনের চাঁদের পাহাড়, পথের পাঁচালীর প্রচ্ছদ- সত্যজিৎ রায়ের করা) পথের পাঁচালীর প্রচ্ছদ করতে যেয়ে তিনি উপন্যাসটি পড়ে ফেলেন। প্রচণ্ডভাবে নাড়া দেয় তাকে বিভুতিভুষনের কালজয়ী এই উপন্যাসটি। মনে মনে তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন কখনও সিনেমা তৈরি করলে এটিই হবে তার প্রথম কাজ।
সিনেমার প্রতি ভালোবাসা থেকেই ১৯৪৭ সালে তিনি কয়েকজন পৃষ্ঠপোষকের সাথে মিলিত হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি’। এখানে বিভিন্ন দেশের সেরা সব সিনেমা প্রদর্শন করা হতো।
১৯৫০, ব্রিটিশ কোম্পানি D.J Keymer তাকে লন্ডনে ডেকে পাঠায় হেড অফিসে কাজ করার জন্য। তিন মাস তিনি সেখানে থেকে কাজ করেন এবং এই তিন মাসে তিনি প্রায় ৯৯ টা সিনেমা দেখেন। তাকে সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করে ইটালিয়ান নব্য বাস্তববাদী সিনেমা ‘বাইসাইকেল থিফ’।
এই সিনেমাটি দেখে হল থেকে বের হবার সময়ই রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন- তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন।
পথের পাঁচালি তৈরি করতে অসংখ্য কাঠখর পোড়াতে হয়েছিলো। সে ব্যাপারে অল্পবিস্তর সবারই জানা আছে। অনেক পরিশ্রমের ফল- পথের পাঁচালি, তার প্রথম কাজ হলেও সিনেমাটি তাকে একজন প্রতিষ্ঠিত চলচ্চিত্রকার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপর তাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। তাঁর সৃষ্ট ৩৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিকভাবে প্রচারিত হয়েছে অনেক দেশে। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী’ ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছিল, এদের মধ্যে অন্যতম ছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে পাওয়া “শ্রেষ্ঠ মানব দলিল” (Best Human Document) পুরস্কারটি। পথের পাঁচালি, অপরাজিত ও অপুর সংসার – এই তিনটি চলচ্চিত্রকে একত্রে ‘অপু-ত্রয়ী’ বলা হয়, এর জন্য তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ বা ম্যাগনাম ওপাস হিসেবে স্বীকৃত।
সত্যজিৎ রায়ের সেরা সিনেমা কোনগুলো- এই ব্যাপারে শর্টলিস্ট তৈরি করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তার প্রতিটা চলচ্চিত্রই একটি অপরটিকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। তাই শর্টলিস্ট না বলে এখানে যেটা বলা যেতে পারে তা হলো, সবচাইতে ভালো লাগা ৫টি সিনেমার নাম-
ব্যাক্তিগতভাবে তার নির্মিত সকল সিনেমা, শর্টফিল্ম, ডকুমেন্টারি দেখেছি। এর মধ্যে কোনটা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে বলতে গেলে বেশ কয়েকটা নাম অকপটে চলে আসবে। সেগুলোর ব্যাপারেই অল্প বিস্তর বলার চেষ্টা করবো-
পথের পাঁচালী (১৯৫৫)–
বিভূতিভূষণের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত রায়ের প্রথম চলচ্চিত্র যা বদলে দিয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম সেরা সিনেমা তথা ব্যাবসাসফল চলচ্চিত্র বললেও ভুল হবে না। ১৯৫৫ সালের ১৯ আগষ্ট পথের পাঁচালী মুক্তি পায়। যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পথের পাঁচালীর জন্য সত্তর হাজার টাকা দিতে গিয়ে বলেছিল, টাকাটা জলে যাচ্ছে, সেই সরকারের কোষাগারে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকা জমা হয়। পথের পাঁচালী একমাত্র ছবি যেটা সেই সুদূর ১৯৫৫ সাল থেকে এখনো ব্যবসা করে যাচ্ছে, যার জন্য বিনিয়োগ ছিল মাত্র সত্তর হাজার টাকা।
জলসাঘর (১৯৫৮)-
তারাশঙ্করের কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত। সত্যজিৎ রায়ের যে চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে বোদ্ধাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়, জলসাঘর তাদের মধ্যে অন্যতম। এটি ছিলো তার নির্মিত চতুর্থ চলচ্চিত্র যা সেসময়ের অন্যতম একটি ব্যাবসা-সফল চলচ্চিত্রও বটে। দেশ- বিদেশের অসংখ্য বোদ্ধাদের নজর, অনায়াসেই কেরে নেয় ‘জলসাঘর’। নিউইয়র্ক টাইমস, দ্যা গার্ডিয়ান- সহ বেশ কিছু বিশ্বনন্দিত ম্যাগাজিনের পাতায় উঠে আসে চমৎকার এই মুভিটির ব্যাপারে বোদ্ধাদের প্রতিক্রিয়া।
অনেকেই একমত হন- এটি সত্যজিতের জীবনের অন্যতম সেরা একটি সিনেমা। মুভিগুরু ‘রজার এবার্ট’ তার সেরা মুভির তালিকায় রেখেছেন ‘জলসাঘর’কে… বলেছেন, “The Music Room” (1958) has one of the most evocative opening scenes ever filmed….
মুভিটাতে এমন কিছু সিম্বলিক শট রয়েছে যা প্রকাশ করার মতো ভাষা অন্তত আমার জ্ঞানে নেই… জীবনে অনেক কম মুভিতেই দেখা পেয়েছি এরকম কিছু অসাধারন শট এর যা একমাত্র সত্যজিৎ রায়ের পক্ষেই সম্ভব…
মহানগর (১৯৬৩)-
৬০ এর দশকের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প মহানগর। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে সুব্রত’র উপার্জনে চলছে সংসার। নানান ঝামেলায় জর্জরিত পরিবারটির আর্থিক চাহিদা পুরনে স্বামীর সঙ্গ দিতে এগিয়ে আসতে চায় স্ত্রী আরতি। সেই সময়টায় ঘরের স্ত্রীদের জায়গা ছিলো শুধুমাত্র ঘরে। বাইরে বের হওয়াটা পরিবারের জন্য রীতিমত অসম্মানের ব্যাপার। ওদিকে সুব্রত’র চাকরী যাওয়ার পথে… কি করবে আরতি, কি করবে সুব্রত, কিই বা করবে তার অসহায় পরিবারটি…
৬০ এর দশকের সেই রক্ষণশীল পরিবারে মেয়েদের স্থান, তাদের মর্যাদা নিয়ে রীতিমত চ্যালেঞ্জমূলক একটি সিনেমা ‘মহানগর’ যা সেই সময়ের তথাকথিত পুরুষশাসিত সমাজের মুখে একটি সামাজিক চপেটাঘাতও ছিলো বটে। আধুনিক সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারী ক্ষমতায়ন যে একে অন্যের পরিপূরক- এই ব্যাপারটিই মূলত রায় সাহেব তুলে ধরেছেন ‘মহানগর’ সিনেমার মাধ্যমে।
চারুলতা (১৯৬৪)-
রবীন্দ্রনাথের ‘নষ্টনীর’ অবলম্বনে রচিত। ৮০’ র দশকের প্রেক্ষাপটে নির্মিত চারুলতা- অনেক সিনেমা বোদ্ধাদের মতে রায়ের অন্যতম সেরা একটি কাজ এবং বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক অনবদ্য মাস্টারপিস এই চারুলতা। প্রচণ্ড প্রতিপত্তির মালিক ভূপতি সাহেব, তার নিঃসঙ্গ স্ত্রী চারুলতা। কোন সন্তান নেই তাদের। ভূপতি সাহেব সর্বদা ব্যাস্ত তার কাজ নিয়ে। এদিকে তার অপরুপা স্ত্রী চারুলতার সার্বক্ষণিক নিঃসঙ্গতা তার জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। এমনি একসময় সেই বিশাল প্রাণহীন বাংলোতে ঝড়ের মতো আগমন ঘটে ভূপতি সাহেবের খালাতো ভাই অমলের। অমল সদা হাস্যোজ্জল, রসিক, দূরদর্শী।
রেশমের মতো গুটিয়ে যাওয়া চারুলতা হঠাৎ যেন প্রজাপতির মতো ডানা মেলতে শুরু করে। কিন্তু এ ডানা মেলা যে নিরর্থক!!!
মহানগর সিনেমার মতো এই সিনেমাটিতেও রায় তুলে ধরেছেন পুরুষ শাসিত সমাজে অসহায়ত্বের শেকলে বাঁধা এক নারীর অপ্রকাশিত অনুভূতির কথা, তার ব্যাক্তিগত আকাঙ্ক্ষার কথা। যে কথা শোনার কেই নেই, বা কেউ শুনতে চাইবে না। সিনেমার দৃশ্যপট এতো নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যার ব্যপারে অসংখ্য লেখালেখি হয়েছে দেশি বিদেশী পত্রিকায়। সত্যজিৎ রায় তার নিজের ছবিগুলোর মধ্যে চারুলতাকে সবসময় আলাদা গুরম্নত্ব দিতেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি পরিস্কার বলেছেন ‘এটিই একমাত্র ছবি যা আজও বানালে ঠিক এভাবেই বানাতাম’…
অরণ্যের দিনরাত্রি (১৯৭০)-
এমন কিছু সিনেমা আছে যার ভেতর একবার ঢুকে গেলে আপনি আর বের হতে চাইবেন না, ভয়ানকভাবে আঁটকে যাবেন গল্পের গাঁথুনির সাথে, প্রেক্ষাপটের সাথে, চরিত্রের সাথে। অরণ্যের দিনরাত্রি এমুনি একটি সিনেমা। মূল উপন্যাসটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের। এই সিনেমাটি মূলত সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ নির্মাতা ‘Jean Renoir’ (যাকে তিনি মেন্টর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন) তার প্রতি একটি ট্রিবিউট ছিলো।
শহুরে পরিবেশে হাঁপিয়ে ওঠা চার বন্ধু সিদ্ধান্ত নেয় ছুটি কাঁটাতে যাবে শহরের বাইরে, একেবারে জঙ্গুলে পরিবেশে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় কোন শেভ হবে না। যতদিন তারা এখানে আছে, সম্পূর্ণ হিপ্পি স্টাইলে থাকবে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার জন্য। যেদিন তারা দেখলো তাদের পাশের ‘লজ’টিতে রয়েছে দুজন সুন্দরী রমণী, ভাঁটা পরে গেল তাদের হিপ্পি হবার অদম্য বাসনায়। পুরুষোচিত সেই আদিম আকর্ষণের খেলায় মেতে উঠলো সকলে। এগিয়ে যেতে লাগলো চার বন্ধুর কাহিনী, সাথে সেই দুই রমণী। খুব সাদামাটা ছিমছাম ঘটনা, তরুন মনের আকাঙ্ক্ষা, আসক্তি, উত্তেজনা সাথে আদিবাসীদের মোহাচ্ছন্ন ঢোলের শব্দ, কখন আপনার মনটাকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেবে- বুঝতেই পারবেন না।
এগুলো ছিলো মানিকবাবুর বিশাল রত্ন- ভাণ্ডারের কয়েকটা মনি- মাণিক্য। যারা রায় সাহেবের পাড় ভক্ত তারা জানেন রায়ের সকল কাজই একটি আরেকটির চেয়ে বেশি জাজ্বল্যমান।
প্রতিদ্বন্দ্বী, জন অরণ্য, অপু ট্রিলজি, তিন কন্যা, দেবী, কাঞ্চনজঙ্ঘা, নায়ক, চিরিয়াখানা, অভিযান, কাপুরুষ মহাপুরুষ, গুপি গাইন বাঘা বাইন সিরিজ, সীমাবদ্ধ, ঘরে- বাইরে, অশনি সংকেত, শাখা প্রশাখা, গন শত্রু, শতরঞ্জ কি খিলাড়ি, জয় বাবা ফেলুনাথ, সোনার কেল্লা, আগন্তুক, কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবেন- সিনেমা জগতের মূল ধারার সকল Genre এ অত্যান্ত দাপটের সাথে কাজ করে গেছেন সত্যজিৎ রায়। নিজের সিনেমার জন্য অসাধারন চিত্রনাট্য আর রোমহর্ষক মিউজিকের সমন্বয় সাধন- হাতে গোনা কয়েকজন নির্মাতাই এ অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন আমাদেরকে; যার মধ্যে সত্যজিৎ রায় নিঃসন্দেহে অন্যতম।
সিনেমা জগতে মাষ্টার অফ পাপেট’স/ ম্যাজিশিয়ান অনেক আছে, অতীতেও ছিলো, ভবিষ্যতেও থাকবে। একেকজনের ম্যাজিকের ধরন একেক রকম। আর এখানেই তাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য তাদেরকে বাকি সকলের থেকে আলাদা করে রাখে। ধন্যবাদ Vittorio De Sica, যার বাইসাইকেল থিফ সত্যজিৎ রায়কে সিনেমা বানাতে উদ্বুদ্ধ করেছিলো এবং যার উদ্বুদ্ধতা বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে যোগ করেছে নতুন মাত্রা… শুভ জন্মদিন ‘গুরুমশাই’ ওরফে মানিকবাবু ওরফে সত্যজিৎ রায়…