আমাদের ক্লাস শুরু হয়েছিল রোজার মধ্যে। ভুল হওয়ার কোনো কারণ নেই। ইফতারের পরে বড় ভাইদের রুমে রুমে গিয়ে তাদেরকে সঙ্গ দিতে হতো। অনেক আমোদ-আহলাদ করে একবারে সেহরী খেয়ে ঘুমাতাম। আমি উঠেছিলাম ফজলে রাব্বী হলের ১২৩ নম্বর রুমে। দোতলায় মসজিদ। তার উত্তর পাশে রুমটা ছিল ১২৩ নম্বর। রুমটি ছিল অনেক স্মৃতি বিজড়িত। শিবিরের এক সময়কার কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ ছাগদুল্লাহ কাফের এই রুমে থাকতেন। ঢামেকসুর তিনি জিএস ছিলেন। আমার গেলমান পারদর্শীতায় সন্তুষ্ট হয়ে তিনি আমাতে অ্যাডিক্টেড হয়ে গেলেন। আমাকে চোখের আড়াল করতে চাইতেন না। এজন্যই আমাকে নিজের রুমে স্থায়ীভাবে উঠতে দিলেন।
আশেপাশের রুমগুলোতেও আমার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তারা চাইলেও ছাগদুল্লাহ ভাইয়া আমাকে আকড়ে ধরতেন। তাই তিনি অনেকর শত্রু হয়ে গেলেন। এই রুমের সামনে নাজায়েজ কাজের অভিযোগে তাকে কিছু সন্ত্রাসী আক্রমণ করেছিল। তিনি মারাত্মক আহত হয়েছিলেন।
তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুমিল্লার একটি গ্রাম থেকে থার্ড মেম্বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৫ এ তার সাথে একদিন সচিবালয়ে দেখা হয়েছিল। কি একটা কাজ করানোর জন্য ঘুর ঘুর করছিলেন। হঠাৎ আমার সাথে দেখা। তখন আমি কৃষি মন্ত্রণালয়ে হেড পিয়নের অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করতাম। অনেকদিন পরেও আমাকে দেখে তার চোখে সেই তৃষ্ঞা ফুটে ওঠে। আমি তাকে চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করি। মেসে এই সময়টায় কেউ থাকে না। হেড পিয়ন বসকে বলে ২ ঘন্টার ছুটি নেই।
কয়েকদিন পর ছাত্র ইউনিয়নের নেতা আমাকে ছাগদুল্লাহ ভায়ের কাহিনী বলে হুমকী দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, 'ঐ রুমের সামনে তোমার পেয়ারের নাগরের রক্ত ঝরিয়েছি। আমার কিছু দোস্ত আছে চাঁটগাইয়া পোয়া, সময় থাকতে তাদের রুমেও সার্ভিস দাও।' মেডিকেলের শেষ দিন পর্যন্ত আমাকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাদেরকে সার্ভিস দিতে হয়েছে।
আমাদের ব্যাচে শিবিরের অনেক কর্মী ভর্তি হয়েছিল। ১৮-২০ জনের মত। প্রথম ক্লাসে আমরা শিবিরের কর্মীদের মধ্যে কিছু গিফট দিলাম। এক কার্টুন কনডম আর একটা ডেস্ক ক্যালেন্ডার। যেহারে এইডস ছড়িয়ে পড়ছে, সাবধানের মার নাই। আর ডেস্ক ক্যালেন্ডারে কার রুমে কবে সার্ভিস দিতে হবে তার বিস্তারিত শিডিউল। বিতরণ করেছিলাম আমি আর আবিদ। প্রথম দিনেই কর্মঠ শিবির কর্মী হিসাবে পরিচিত হয়ে গেলাম।
চলবে ..
(হোসেইন নতুন শ্বশুর বাড়িতে ঈদের দাওয়াতে, সুতরাং এই পর্ব আমাকেই লিখতে হল)