বুয়েট বুয়েট বুয়েট ...............
গত ১ ডিসেম্বর ছিল আমার মত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্নের বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা।আমিও গেছিলাম এক্সাম দিতে----
ফলাফলঃ ভাবছিলাম দিব কোপ,ফিরে আসলাম রক্তাক্ত হয়ে
এবারের বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা ছিল নিশ্চয় ই অন্য যেকোন বারের থেকে
অন্যরকম।যে পরীক্ষা হওয়ার কথা অক্টোবরে গড়াতে গড়াতে তা এল ডিসেম্বরে অন্যান্য সময় প্রথমদিকে এক্সাম হওয়ায় আমার মত অনেক স্টুডেন্টের মধ্যেই একধরনের বুয়েট ভীতি/চান্স পাব কি পাব না এরূপ এক মনোভাব কাজ করে।অথচ এবার সবাই মোটামুটি কোথাও না কোথাও চান্স পেয়ে রিলাক্স মুডে পরীক্ষা দিতে এসেছেঅনেক রে দেখে মনে হচ্ছিল নৈশভ্রমণে বের হয়েছে।
অনেকের মতে এবারের প্রশ্ন ছিল বুয়েট ইতিহাসের সবচেয়ে সহজ এক্সাম কোয়েশ্চেন।যেখানে ৩২০ পেলে চান্স ধরে নেয়া যায় এবার সেখানে ৩৭০ পেয়ে ও কারো কোন লাভ হবে কি না বুঝতে পারতেছিনা।
এবার আমার কথা বলিঃ কোচিং এর প্রথম থেকেই আমার অবস্থা ছিল শোচনীয়।কনফিডেন্স লেভেল ও পরম শূন্য তাপমাত্রার কাছাকাছি পৌছে গেছিলএমতাবস্থায় IUT তে ৯ অক্টোবরের পরীক্ষায় চান্স পাওয়ার পর আমাকে আর পায় কেকোনকালে যে ছাত্র ছিলাম তাই ভুলতে বসেছিলামপ্রায় ২ মাস পর বুয়েট পরীক্ষা আসতে আসতে এসে গিয়েছিল জড়তা।আর আমার দোস্তরা একের পর এক পরীক্ষা দিয়ে হাত পাকা করে ফেলছিল আর আমি DU ছাড়া আর কোন এক্সাম ই দিলাম নাতো যাই হোক গেলাম বুয়েটে এক্সাম দিতে।ভাবছিলাম,এমন কঠিন প্রশ্ন হইব যে আমি তো পারুম ই না,অন্যরা ও পারব না।বুয়েট আমার আশার আগুনে দিল পানি ঢেলেপ্রশ্ন করল ইন্টার পরীক্ষার মত ইজি।ফলাফলঃআমি পারলাম না ঠিক ই কিন্তু অন্যরা দিল কোপের ওপর কোপআমার কাছে পুরা পরীক্ষা টা এক গভীর বাশবাগানে রূপ নিলতো যাই হোক,৮৩ টার মত MCQ দাগালাম(মাইনাস মার্কিং এ না জানি সব ই যায়রিটেন ও দিলাম বেশ কিছু কিন্তু প্রশ্ন এমন ইজি হইছে যে অনেক নাম্বার উঠবে।তাই স্বপ্নের বুয়েট রয়ে গেল স্বপ্নেইইনসাল্লাহ একদিন msc করমু বুয়েট থেকে।
এবার বেশ কয়েকটা জিনিন্স বলিঃ
১,আমার পাশের সিটে যেই মেয়ে এক্সাম দিছে সে MCQ দাগাতে দাগাতে খাতা অন্ধকার করে ফেলছে।
২,আর্কিটেকচারের পরীক্ষার সময় আশে পাশের ছবির দিকে তাকিয়ে এমন লজ্জা লাগছে যে অর্ধেক এক্সামদিয়ে ই এসে পরছি।কে যায় ২ ঘন্টা ধরে কাপড়ের দোকানের ছবি আকতে।
৩,বুয়েটের স্যার রা অনেক ভাল।আমাদের মত বাচ্চাকাচ্চাদের কে সবকিছু বুঝিয়ে দিছেন ভালোভাবে :> :> ।
৪,আমার কলেজের পোলাপান গোল্ডেন বেশি পায়এক্সাম হলে তাই তাদের আনাগোনা ও বেশি।রেসাল্টের পর সব ফক্কা।
৫,বুয়েট আমার অনেক পছন্দ হইছে বাট বুয়েটের মনে হয় আমারে পছন্দ হইল না।
৬,আমার বাবা-মা এখন ও আশায় আছেন যে তাদের ছেলে চান্স পেয়ে ও যেতে পারে।কিছুতেই তাদের হতাশ করতে পারছি না।
অনেক আগে থেকেই মনে হয়েছিল ১ ডিসেম্বর জীবনের একটা স্বরণীয় দিন হয়ে থাকবে।হয়েছে ও তাই যদিও কেন জানি এবার সিচুয়েশন ভিন্ন,এক্সাম দিয়ে মনে হয় কেও তেমন একটা টেস্ট পায় নায়যাই হোক,আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে বুয়েট নামের একটি দীর্ঘশ্বাস কেআসলে, কোন কিছু ইচ্ছা করলে মন থেকে চাইতে হয়,সেই সাথে সেই ইচ্ছা পূরনের জন্য পরিশ্রম ও করতে হয়।তাহলেই এটাকে একটা স্বপ্ন বলা যায়,নতুবা সেটা দিবাস্বপ্ন হয়ে ওঠে------------------
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৯