প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে
সময়ের বিবর্তনে বিধাতার অপূর্ব খেলায়
আমার আবাস আজ এ ধরায়।
রক্তাক্ত আমি,
না কোথাও কাটেনি আমার
আরে এতো আমার আশীর্বাদ।
পৃথিবীর আলো এখনো পাইনি আমি
তবে পেয়ে গেছি একটি স্বাধীন ভাষা,
একটি স্বাধীন দেশ।
হয়নি দিতে আমায় এক ফোঁটা রক্ত,
আমি সংগ্রাম করিনি, আমি আন্দোলন করিনি
তবুও সব পেয়েছি আমি, সকলই।
আমি বলতে পারিনি,
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলাম
পবিত্র সেই মুখটির দিকে
"দেখতে একবারে বাবার মতো"
"লক্ষি সোনা কাদেনা"
আমি আর অর্থ বুঝি নি
বা বোঝার ক্ষমতা আমার ছিল না।
তবে প্রতিটি শব্দ কড়া নেড়েছিল আমার হৃদপিণ্ডে
যার কম্পন আঘাত হেনেছিল প্রতিটি ধমনীতে,
প্রতিটি শিরায় শিরায়।
আমিও জবাব দিয়েছিলাম নিজের ভাষায়
পেয়েছিলাম সান্ত্বনার বাণী
সেই ভাষা সকলের নিকট বোধগম্য ছিলনা
তবে তার কাছে ছিল ধরণীর
সবচেয়ে শ্রুতিমধুর আওয়াজ
"নবজাতকটির জন্ম যার গর্ভে"
আমি ভাগ্যবান নই, নই সৌভাগ্যবান
আমি তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু,
আমি পাইনি সেই আমতলা
পাইনি ১৪৪ ধারা
তবে পেয়েছি তার ফসল।
"মা" বলে ডাকতে
এখন কেউ আমায় বাঁধা দেয় না
আমি পারিনা,
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গনে জড়ো হতে
পারিনা,
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে হলে ফেস্টুন হাতে ছুটে বেড়াতে
পারিনা,
ইডেনের মেয়েদের সাথে শহীদ মিনার গড়ার কাজে হাত দিতে
আমি অনুভব করতে পারি হয়তো।
কিছুটা অনুভুতি আলোড়ন তোলে আমার ভিতর
দেহের প্রতিটা পশম দাড়িয়ে যায়,
প্রতি ফোঁটা রক্ত টগবগ ফুটতে থাকে,
যখন আমি কল্পনায় সমবেত হই ঐ মিছিলে।
আমি চাইনি, তবুও পেয়েছি অনেক বেশি
অপূর্ণতা আজ বিরাজমান আমার পদতলে
আমি পেয়েছি আমার মা, আমার বাংলা
আমি পেয়েছি আমার অহংকার।
তাই এখন আমি,
কণ্ঠ বাগিয়ে, দম্ভ করে
আলাউদ্দিন আল-আজাদের সাথে বলতে পারি-
ইটের মিনার,
ভেঙেছে ভাঙুক
ভয় কি বন্ধু, দেখ একবার
আমরা জাগরী, সাড়ে ষোল কোটি পরিবার