জার্মানির যান্ত্রিক খেলা যারা দেখেন, তাদের মন ভরেনা। কিন্তু ভুরি ভুরি গোলের বন্যায় পেট ঠিক ভরে যায়। টমাস মুলারকে কেউ মেসি বা রোনালদোর খেলার সমকক্ষ দাবি করবে না। রোনালদো মেসির মতন খেলোয়াড়রা পায়ে বল পেলেই সবার চোখ টিভির পর্দায় আটকে যায়, এই বুঝি কিছু হল! তারা অনেক জাদু দেখান, দুই তিনজনকে অনায়াসে কাটান, চমৎকার থ্রু পাস দেন, জোরালো ফ্রি-কিক করেন। তবে গোল তেমন করতে পারেন না।
মুলার সাহেব বল পেলে কেউ উত্তেজিত হন না। তারপরও তিনি ঠিক ঠিক সময়মতন গোলপোস্টের সামনে থাকবেন এবং কোন ধরনের শিল্পকলা ছাড়াই মেশিনের মতন বল জালে জড়াবেন। এই পর্তুগালের বিপক্ষে খেলার কথাই ধরা যাক। মুলারের করা তিনটি গোলের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর সম্ভবত ছিল পেনাল্টি থেকে করা গোলটি। শিল্প, জাদু, সর্বকালের সেরা - এইসব নিয়ে ভাবার সময় জার্মানদের নেই। ফুটবল গোলের খেলা। এখানে বল জালে জড়ানো বড় কথা, কিভাবে জালে গেল সেটা নিয়ে তারা মাথা ঘামান না।
২০১০ সালে ফুটবল জাদুকর এবং তৎকালীন আর্জেন্টিনার কোচ ম্যারাডোনা জার্মানির বিপক্ষে খেলার আগে মুলারকে না চিনতে পেরে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, "এই ছেলে সম্ভবত বলবয়, মাঠের পাশ থেকে বল কুড়িয়ে দেয়।" পরদিন কেপ টাউনে সেই মুলারের গোলে ৪-০ তে জার্মানি হারালো আর্জেন্টিনাকে।
ম্যারাডোনা সাহেবের মতন জার্মানির খেলা দেখে আমিও দীর্ঘশ্বাস ফেলছি। পারসি রবিনরা শুন্যে ভেসে চমৎকার বলের নিয়ন্ত্রন আর আগুনের মতন গতি দেখিয়েও তিন গোল করতে পারেন না, কিন্তু মুলার সাহেবকে গত বিশ্বকাপের মতন এইবারও ঠেকানো যাবে বলে মনে হচ্ছে না।
#বিশ্বকাপ_ভাবনা