বাংলাদেশটাতো কোন একক ধর্মলম্বিদের একার দেশ না। দেশটাতো আমাদের সবার। ৭১-এ যখন বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রসব বেদনার তিব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল, তখন তো এরাই সেই নরপশু পাকিস্তানের হেফাজতের নামে অমানুষিক নির্যাতন করেছিল সেই প্রসব যন্ত্রণা কাতর বাংলা মায়ের সন্তানদের উপর। সেই অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর আমার বাংলা মা কি নিদারুণ কষ্টে তাকিয়ে দেখেছিল তাঁর বীর সন্তানদের হাসিমুখের আত্মত্যাগ। সেই বীর সন্তানদের আত্মত্যাগে আমরা যে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়াছি, যে পতাকা পেয়াছি তাঁর মূল্য এই সত্যিকারের নাস্তিকরা (জামায়েত ইসলাম, হেফাজাতে ইসলাম, আনসারুল্লাহ বাংলা, ইত্যাদি) কি বোঝে? ৩০ লাখ শহীদের বাংলাদেশ ওরা গুটিকয়েক ধর্মান্ধ Fascist-রা দখল নেবে, তা কি করে হয়?
আমাদের এত চমৎকার একটা দেশ, যে দেশে এতগুলো বছর আমরা সবাই যার যার ধর্ম নিশ্চিন্তে পালন করে সকলকে কে নিয়ে একটা সম অধিকারের সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছি, প্রতিষ্ঠা করেছি এক সামাজিক সাংস্কৃতি-এর বৈষম্যহীন বলয়। বিশ্ব শান্তিতে নোবেল, জাতিসংঘে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসানীয় অবস্থান, ক্রিকেট, কারো কাছে হাত না পেতে নিজের প্রযুক্তি এবং নিজস্ব লোকবল ব্যবহার করে নিজের দেশের খনিজ আরোহণ, কান চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের ছায়াছবি, গার্মেন্টস শিল্পে অনাবদ্দ ১ম অবস্থান, প্রবাসী বাংলাদেশীদের ঈর্ষানীয় সাফল্য, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো, কতো, কতো সাফল্য নিয়ে আমরা যখন প্রস্তুত পৃথিবীর বুকে নিজেদের অবস্থান কে আরও সুদৃঢ় করার জন্য, ঠিক তখনি হায়েনার দলও প্রস্তুত আমাদের মনবল ভেঙ্গে আমদেরকে পাকিস্তানের মতো, আফগানিস্তানের মতো একটা বার্থ রাষ্ট্রে পরিনত করার অসম প্রচেষ্টায়। বাংলার আপমর সাধারন জনতা যখন ঐক্যবদ্ধ ৪২ বছরের পুরনো জঞ্জালগুলোকে বিচারের মাধ্যমে আস্তাকুরে ছুঁড়ে ফেলার জন্য ঠিক তখনি পাকিস্তানের প্রেতাত্মাগুলো তাদের রক্ষায় শেষ অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার শুরু করেছে শান্তির ধর্ম ইসলামকে। পবিত্র ধর্ম ইসলামের সমস্ত পবিত্রতা ভূলুণ্ঠিত করে তারা হঠাৎ করে ইসলামের নতুন কাব্য রচনা করা শুরু করলেন। মহানবি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর বুকের কষ্ট, চোখের পানিতে লেখা “হিজরত” শব্দটিকে পালটিয়ে বানিয়ে দিলেন “লংমার্চ” (Click This Link)। হঠাৎ করেই ভেবে নিলেন বাংলার সব মুসলমান/মানুষ অশিক্ষিত। কুরআন তারা যেভাবে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিবেন বাংলার মানুষ সেইভাবেই ব্যাখ্যাটা মেনে নিবেন। বিক্রি হয়ে গেলেন টাকার কাছে। পবিত্র কোরআন কে পাশ কাটিয়ে পরম মমতায় আপন করে নিলেন কোটি কোটি টাকাকে।
নির্বোধ। পিছনে ফিরুন। স্বয়ং আল্লাহতালার রাহমতে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন। আল্লাহতায়ালা চাইলেই আমরা আজ থাকতাম পাকিস্তান নাম নিয়েই। আল্লাহতায়ালা চাননি। অন্তত ১৯৭১ থেকে এখন পর্যন্ত সময় তাই বলে। কই পাকিস্তানের মতো আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রতিদিন তো বাংলাদেশে শয়ে শয়ে নিরাপরাধ, নিষ্পাপ মানুষ মারা যাচ্ছেনা। কয়েক বছর পর পর তো আমার গর্বের সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখল করছেনা। আল্পকিছু অর্থলোভী হায়েনার দুরভিসন্ধিতে তারপরেও আপনারা রক্তে রঞ্জিত করছেন বাংলার পবিত্র মাটিকে। একের পর এক বেপরওায়া চাপাতির কোপে হারাচ্ছে তাজা প্রান। আমার শিক্ষকের ঋণ শোধ করছি তারই রক্তে। সমকামী বলে মেরে ফেলছি কারো সন্তানকে। ব্যক্তিগতভাবে আমি সমকামিতাকে প্রশ্রয় দেয়ার ঘোর বিপক্ষে। কিন্তু তার মানেতো আমি চাপাতির পক্ষে দাড়াতে পারিনা, মুক্তচিন্তার বিপক্ষে দাড়াতে পারিনা, দাড়াতে পারিনা কারো ব্যক্তিগত, একান্ত ব্যক্তিগত মতামত বা জীবনধারণ পদ্ধতির বিপক্ষে। কই ইসলাম, পবিত্র কোরানের বিপক্ষে যারা শক্ত অবস্থান নিয়ে কখনো নিজেকে দাবি করছেন মহানবি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর মেয়ে জামাতা (মহানবি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মেয়ে সবার শ্রদ্ধেয় মা ফাতিমা-র স্বামী), তো কখনো স্বয়ং আল্লাহ (https://www.youtube.com/watch?v=OGRo-97r1n0) তাদেরতো কিচ্ছু হচ্ছেনা। ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কার ইসলামবিরোধী কথা বলে তারা বহাল তবীয়তে ইমাম হিসেবে নামাজ পড়াচ্ছেন। অন্যদিকে সমকামিতার অভিযোগে পত্রিকায় ছবি আসছে মাদ্রাসা শিক্ষকদের (http://ctvnews24.com/?p=81906)। সত্যিই সেলুকাস...কি বিচিত্র আমাদের ধর্ম প্রেম।
আর কতো???
ছোটবেলা থেকে মুরব্বিদের মুখে শুনে আসছি যে, আল্লাহতালার উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস থাকলে, ওনার প্রেরিত কিতাব আল কোরআনের উপর বিশ্বাস থাকলে এবং আল্লাহতালার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর বিশ্বাস থাকলে যে কোন মুসীবত হতে আল্লাহ ওনার বান্দাকে রক্ষা করেন। আপনারা একটা বাজে মুসীবত ছাড়া আর কিছুইনা এবং আমাদের আল্লাহতালা, আল কোরআন এবং হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে। সুতরাং ইনশাল্লাহ আল্লাহতালা আপনাদেরকে সঠিক পথটা দেখাবেন অথবা আপনারা এই সোনার বাংলা থেকে অচিরেই আস্তাকুরে নিক্ষিপ্ত হবেন।
আবারো বলছি, বারবার বলব...এই দেশ, এই মাটির সাথে আজ পর্যন্ত কোন বেঈমান বেঈমানি করে পার পায়নি। সেই চেষ্টা কেউ ভুলেও করবেননা। যারা এই বাংলাদেশে থেকে এখনও পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য একটুও মায়া দেখাবেনা এই মাটি, এই পতাকা।
“পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানে ফেরত যা”...এটা আমার একার কথা না। বাংলাদেশ এর কথা।
আর আমার মায়ের জন্য শেষ কথা... “মা তোমার খুব প্রিয় গানটার কথা মনে আছে? সেই গানটা? যে গানটা গেয়ে গেয়ে ৭১-এ তোমার দামাল ছেলেরা তোমাকে সাহস দিত। যে গানটা শুনলেই তুমি বুঝতে পারতে যে, ওই পাকিস্তানি হানাদাররা তোমার সম্ভ্রম নিয়ে কখনই খেলতে পারবেনা, কারন তোমার ছেলেরা তোমার পাশেই আছে অতন্দ্র প্রহরীর মতো। মা...মাগো আমরা তোমার নতুন প্রজন্ম শিখে নিয়েছি সেই গান...
আমারা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে
তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি,
তোমার ভয় নেই মা আমারা
প্রতিবাদ করতে জানি...।।।