somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম যার যার, উৎসবও তার তার

১৯ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনেরা, প্লিজ আপনাদের ধর্মীয় উৎসবে কোন মুসলিম বন্ধুকে দাওয়াত দিবেন না! অত্যন্ত দুঃখের সাথে এই আবেদন করছি। জানি, বন্ধুত্বকে আপনি বড় করে দেখেন ধর্মীয় পরিচয়ের চেয়েও। সেটাই মানবিক। কিন্তু দেখুন কী হচ্ছে!

আপনি আহ্লাদ করে বন্ধুকে আনছেন এক সাথে হোলি খেলবেন বলে, নাচ-গান করবেন বলে। অথবা আপনার বন্ধুটি নিজেই আপনাকে অনুরোধ করেছে তাকে সাথে নিতে। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আপনার বন্ধুটির বেলেল্লাপনার শিকার হচ্ছে আপনারই বোন বা বান্ধবীটি। এতে সবদিকে চরম ক্ষতি হচ্ছে।

জানি সবাই একইরকম নয়। কিন্তু বন্ধুটির মুসলিম পরিচয়ের কারণে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোট হচ্ছে। দুষ্কর্মকারী আপনার বন্ধু বলে আপনি আপনার সম্প্রদায়ের কাছে ছোট হচ্ছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে টান পড়ছে। এর কোনটিই কাম্য নয়।

অঘটনটির জন্য আপনার দায় কিন্তু কম হবে না। কারণ বন্ধু নির্বাচনে আপনি সতর্ক হননি। অবশ্যই আপনার অহিন্দু বন্ধু থাকবে, আমার যেমন অনেক অমুসলিম বন্ধু আছে। কিন্তু আপনার বন্ধুটি সচ্চরিত্রের হতে হবে। বন্ধুটি যে ধর্মেরই হোক।

আমার মুসলিম বন্ধুদেরকে বলছি, আপনারা অন্য ধর্মের উৎসবে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। তাদের উৎসব তাদেরকে নির্বিঘ্নে পালন করতে দিন।

আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে কি আমার হিন্দু বন্ধুটিকে ঈদে দাওয়াত দিব না? আমি কিন্তু আপনাকে হিন্দু বন্ধুটির বাসায় যেতে না করিনি। যে কেউ যে কাউকেই তাঁর বাসায় দাওয়াত দিতে পারেন। আপনিও হিন্দু বন্ধুটিকে ঈদে দাওয়াত দিতে পারেন।

নিশ্চয় ভাবছেন, ব্যাপারটা তো তবে দুরকম হয়ে যাচ্ছে! এখানেই আপনাকে একটা বিষয় বুঝতে হবে।

"ধর্ম যার যার, উৎসব সবার" কথাটি সঠিক না। এটি ভোগবাদী তথাকথিত সেক্যুলারদের বানানো একটি মতবাদ যা তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে পপুলারাইজ করতে চাইছে।

আমি বলবো, ধর্ম যার যার, উৎসবও তার তার। কারণ এটি ধর্মীয় উৎসব। কলেজ-ইউনিভারসিটির পিকনিক বা র‍্যাগ ডে না। এই উৎসব পালিত হয় ধর্মীয় আবহে, ধর্মীয় রীতি থেকে। ঈদ কিন্তু রোজার শুরুতে আসে না, ঈদ আসে ত্রিশ দিন সিয়াম সাধনার পরে। তেমনি নাচ-গান পূজার আগে হয় না, হয় পূজার শেষে। এই সব উৎসব উপাসনার পরের ধাপ।

তার মানে হচ্ছে উৎসবের ভিতরেই আছে ধর্ম পালন।

এরপরেও যদি একজন মুসলিম হয়ে আপনি বলেন, না আমি পূজাতে গিয়ে একটু নাচানাচি করতে চাই, একটু পানীয় গিলতে চায়, হোলিতে গিয়ে রং মারামারি করতে চাই, তাহলে আপনি নিজ ধর্মের নিষেধ মানছেন না। আপনি হয়তো অবজার্ভ করতে যেতে পারেন, কিন্তু অংশগ্রহণ করতে পারেন না।

যদি একজন হিন্দুর ক্ষেত্রে, ঈদের দিন মুসলিমের বাড়িতে গিয়ে সেমাই-বিরিয়ানি খেতে তাঁর ধর্মের কোন আপত্তি না থাকে, তবে তিনি যেতেই পারেন। কিন্তু কোরবানের ঈদে আমি একজন হিন্দু বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করবো না, যদি জানা থাকে যে গরুর মাংস খেতে তাঁর ধর্মে নিষেধ আছে। জেনেশুনে আমি তাঁর ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানবো না।

এখন যদি বলেন, কোন হিন্দু বন্ধু যদি নিজে থেকেই গরুর মাংস খেতে আসতে চায়- সে ক্ষেত্রে? সে যদি সজ্ঞানে তাঁর ধর্মের নিষেধ ভাঙতে চায় তার দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। যেহেতু সে আমার ঘরে নাচ-গান বা রং মারামারি করতে আসছে না, এবং তার গো-ভক্ষণ উপলক্ষে আগমনে কোন অনিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সর্বোপরি যেহেতু আমি সচ্চরিত্রের বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক ছিলাম, তাই তাকে আসতে আমি নিষেধ করবো না।

প্রিয় বন্ধুরা, আমরা প্রায় সবাই চাই এই দেশে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান মিলেমিশে থাকুক (যারা চায় না তারাই উগ্রবাদী)। কিন্তু মিলেমিশে থাকার মানে এই না একে অন্যের ধর্মীয় অনুষঙ্গ পালন করা শুরু করে দিব! আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে নিয়মের ব্যত্যয় করা অনেকের কাছে হয়তো বৈপ্লবিক বা আনন্দের মনে হচ্ছে, কিন্তু আমি লিখে দিতে পারি, দীর্ঘমেয়াদে তা তিক্ততা বয়ে আনবে। যার বিস্বাদ আমরা এখনই পাচ্ছি। তাই এখনই সতর্ক না হলে সেই তিক্ততা দাঙ্গা-হাঙ্গামার দিকে চলে যেতে পারে!

সাবধান বাংলাদেশ!

দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে চাইলে, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে চাইলে, আমি মনে করি বলা উচিত: ধর্ম যার যার, উৎসবও তার তার, বন্ধু সবার।
___________
http://facebook.com/saif.samir
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০১
৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×