দয়াকরে ব্লাকআউটে যাবেননা। সরকার বাংলা ব্লগের স্বাধীনতা হরণ করছে, শুধুমাত্র বিরুদ্ধমত প্রকাশের জন্য ব্লগারদের রিমান্ডে নিচ্ছে, এই মুহুর্তে নিজেরাই নিজেদের বন্ধ করে দিলে সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষেই যাওয়া হয়। এটা প্রতিবাদ হয় না।
আমার ব্লগের অ্যাডমিন সুশান্ত দাশগুপ্ত তাঁর স্ট্যাটাসে যুক্তি দেখিয়েছেন, ব্লাক আউটে গিয়ে সরকারকে মেসেজ দেয়া হবে যে ব্লগারদের কাছ থেকে সরকার যে 'সাপোর্ট' পেয়েছে সেটা কেমন গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুঝিয়ে দেয়া। সত্যি বলতে, আমার কাছে মনে হয় না সরকার ব্লগারদের কাছ থেকে বিশেষ কোনও 'সাপোর্ট' পেয়েছে। যদি পেতো তাহলে সুব্রত নিশ্চয়ই আজ রিমান্ডে থাকতো না। তাছাড়া পেলো সাপোর্ট, সেটা পেয়েও কৃতঘ্নের মতো ব্লগারদের এক্সপেন্ডেবল হিসেবে হেফাজতের মনতুষ্টিতে যথেচ্ছা ব্যবহার করা কি সেই সাপোর্টের প্রাপ্তি?
আমি কোনওভাবেই ব্লগ ব্লাকআউট সাপোর্ট করি না। ব্লগাররা মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানিয়েছে এটা খুবই সত্যি, সেটা কি সরকারের আগ্রহে নাকি ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর আগ্রহে? নাকি নিজের বিবেকের তাড়না থেকে? সেটার অভাব সরকার বুঝবে কোনওদিন?
ঐ আশা করার কোনও যৌক্তিক ভিত্তি নেই। যখন ব্লগারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার আগে হেফাজতের সাথে বৈঠক করে (যারা 'হ্যাপেন টু বি' ব্লগ পড়ে না), তখন কিভাবে সরকার ব্লগের অনুপস্থিতি অনুভব করবে?
এই ব্লাক আউট কর্মসূচীর বিরুদ্ধে আমি। এটা অপ্রয়োজনীয়, এটা প্রতিবাদ নয়। প্রতিবাদ করতে হলে ব্লগে আরও গলা ছেড়ে লেখা হোক। ব্লগাররা দরকারে রাস্তায় নেমে আসুক। যেখানে ব্লগেই আমাদের স্বাধীনতার প্রকাশ সেখানে ঐ যায়গাটা বন্ধ করে প্রতিবাদ হতে পারে না।
মুখ খোলা রাখার অধিকার আদায়ের কর্মসূচী হিসেবে মুখ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করতে চাই না, চিৎকার করে প্রতিবাদ করতে চাই। প্রতিবাদ করতে হলে এমন কিছু করতে হবে যেনো সেটা একটা কড়া বক্তব্য উপস্থাপন করে তাই না? ব্লগ-সাইট গুলো অফ করে রেখে যে 'কড়া বক্তব্য' উপস্থাপন করা হবে, তাতে সরকার আর হেফাজত মুচকি মুচকি হাসবে। কাঁধ চাপড়েও দিতে পারে।
বিনীত,
আরন্যক নীলকণ্ঠ

(পূর্বে ফেসবুকে প্রকাশিত)