বিশ্বাস বাংলা শব্দ আর ঈমার এর আরবী প্রতিশব্দ।বিশ্বাস মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বিশ্বাস মানুষের কর্মকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে । যেমন বিশ্বাস তেমন কর্ম। বিশ্বাস প্রধাণত দু’প্রকারের হয়ে থাকে:
ক)যথার্থ বিশ্বাস (প্রবন্ধের সম্পূর্ণটা এ প্রকারের বিশ্বাসের ব্যখ্যা)
খ)অন্ধ বিশ্বাস (ধর্মীয় বিশ্বাস,সমাজের বিভিন্ন কু’সংস্কার ইত্যাদ)
এ উভয় প্রকারের বিশ্বাসই নিম্নোক্ত শ্রেনীতে ভাগ করা যেতে পারে:
১. সন্দেহাতীত বিশ্বাস
২. সাধারণ বিশ্বাস
৩. দূর্বল বিশ্বাস
৪. অবিশ্বাস (নেতিবাচক বিশ্বাস)
বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে মানুষের সকল কর্মনীতি নির্ভর করে।একটি উদাহরণ দেয়া যাক। আপনাকে কেউ বললো আজ রাত দুইটার সময় কিছু লোক আপনারা ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় আপনাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিবে।এখানে বিশ্বাসের প্রশ্ন আসে। কেউ আপনাকে এরুপ কথা বললে আপনি বিশ্বাস করলে আপনার মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে আর অবিশ্বাস করলে আরেক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। বিশ্বাস করার পর আপনার প্রতিক্রিয়া ধরন নির্ভর করে আপনার বিশ্বাসের তীব্রতার উপর।
না দেখে কি বিশ্বাস করা যায়?
বিশ্বাস কখনো না দেখে হয় না-হোক সে দেখা বাহ্যিক চোখ দ্বারা বা অন্ত:চক্ষু দ্বারা। প্রত্যেক মানুষের ৪ টি চক্ষু আছে-দুটি বাহ্যিক চক্ষু অপর দুটি অন্ত:চক্ষু।আমকে আম, কাঠালকে কাঠাল বলে আমরা বিশ্বাস করি বাহ্যিক চোখ দ্বারা দেখে।কেউ আপনার কাছে টাকা ধার চাইলে আপনার টাকা তাকে দেয়া না দেয়া নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু বিশ্বাস করেন। এ বিশ্বাস/অবিশ্বাস নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু চেনেন ও তার পূর্বের কার্য্যাবলি পর্যালোচনা করে। আপনি অন্তচক্ষু দ্বারা তার অতীত কার্যাবলী বিশ্লেষণ করে উপরে উল্লেখিত ৪ প্রকারের এক প্রকার বিশ্বাস আপনি করেন।
বিশ্বাস কি কখনো উঠানামা করে?
মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধির সীমাবদ্ধতার কারনে আজ সে যা বিশ্বাস করে কাল তাহা ভূল হিসাবে প্রমাণিত হয়। এ কারনে মানুষের বিশ্বাস শুধু উঠা-নামাই করে না, উহা সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হতে পারে।
বিশ্বাস পরিবর্তন করা কি খারাপ?
আপনি আজকে যা বিশ্বাস করেন তা যদি কেউ ভূল প্রমাণিত করে, তাহলে সে ভূলকে আকড়ে ধরে রাখা তো কোনক্রমেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।বরং যে আপনার চিন্তার ভূল ধরে দিল সে তো আপনার অনেক বড় উপকার করল।জ্ঞান পিপাসুদের বিশ্বাস প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হতে পারে। নতুন নতুন জ্ঞানে পূর্বের অর্জিত ভূল বিশ্বাস পরিবর্তন করে সত্যের দিকে এগিয়ে যায় বুদ্ধিমানেরাই। আর যারা অন্ধত্ব ও গোড়ামিতে লিপ্ত তারাই পূর্ব পুরুষ থেকে পাওয়া বিশ্বাসকে যাচাই বাছাই ছাড়া অন্ধভাবে কঠোরভাবে আকড়ে ধরে থাকে।
বিশ্বাস কি জোর করার বিষয়?
বিশ্বাস/অবিশ্বাস হয় স্বত:স্ফুর্তভাবে।মানুষ তার ৪ চক্ষু দ্বারা কোন কিছু দেখে তা বিশ্বাস করে। কেউ যদি কোন কিছু অবিশ্বাস করে তার অর্থ হল সে তার ৪ চক্ষু দ্বারা উহাকে দেখতে পাচ্ছে না।
বিষয়টি যদি এমন হয় যে আপনি যা দৃঢ়ভাবে সত্যে ও অকাট্য বলে বিশ্বাস করেন অপর একজন ব্যক্তি তা দৃঢ়ভাবে অবিশ্বাস করে,সেক্ষেত্রে কে সঠিক বিষয়ে বিশ্বাসী?সেক্ষেত্রে হতে পারে উভয়ের যে কোন একজন সঠিক অপরজন বেঠিক অথবা উভয়েই আংশিকভাবে ঠিক অথবা উভয়েই ভূল।যদি উভয়ে গোড়া না হয়, তাহলে তাদের জন্য আশার বিষয় হল কিছুদিন সময় নিলেও তাদের জ্ঞানের বিকাশ হবে এবং সত্যের সন্ধান পাবে।তাদেরকে যে কাজটি করতে হবে তাহল উভয়কে উভয়ের চিন্তা-চেতনাকে পরস্পরের সাথে অত্যান্ত বন্ধুত্বপূর্ণ ভাষায় ও পরিবেশে বিনিময় করতে হবে।উভয়কে স্বীকার করে নিতে হবে যে তারা যত বড় জ্ঞানবানই হোক না কেন তাদের চিন্তা-চেতনাই কিছু ভূল থাকতে পারে।
নিজের বুঝ বা বিশ্বাসকে ১০০% সঠিক বলে সকলের কাছেই প্রতিয়মান হয়।পৃথিবীর মানুষগুলো হাজার হাজার বিশ্বাসে বিভক্ত।তিক্ত সত্যে হল পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ ভূল বিষয়ে বিশ্বাস করে অথচ নিজেদের বিশ্বাসকে ১০০% সঠিক মনে করে।নিজের বিশ্বাস নিজের কাছে ১০০% সঠিক বলে প্রতিয়মান হলেও একথা মনে রাখতে হবে যে মানুষ হিসাবে আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারনে আমার বিশ্বাসে ভূল থাকতে পারে।মানুষ যখন এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করতে পারবে, ঠিক তখন মানবতা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে।
আপনি যখন কোন কিছুকে বেঠিক বলে বিশ্বাস করেন তখন যদি আপনাকে কেউ জোর করে যে আপনি যেটাকে বেঠিক বলছেন সেটাকে আপনাকে ঠিক বলতেই হবে অন্যাথায় আপনি ধর্মত্যাগি হয়ে যাবেন বা আমাদের সমাজ থেকে বের হয়ে যাবেন- এমন কথা বলা মূর্খতা বৈ কি?
সুতরাং ঈমান (বিশ্বাস) জোর করার বিষয় নয়।হতে পারে আপনার বিশ্বাস ঠিক আর আপনার বিশ্বাস প্রত্যাখ্যান কারি বেঠিক,কিন্তু যে প্রত্যাখ্যান করেছে তাকে তো বুঝতে হবে যে যা সে প্রত্যাখ্যান করেছে তা বেঠিক।যখন সে বুঝবে যে সে যা প্রত্যাখ্যান করেছে তা প্রকৃতপক্ষে সঠিক ছিল আর তার বিশ্বাস ভূল ছিল তখন তো আপনি তাকে জোর করলেও সে আগের বিশ্বাসে ফিরে যাবে না।
মানুষ কি যুক্তির উর্ধ্বে উঠতে পারে?
কোন কাজ আপনি কেন করছেন/বলছেন/বিশ্বাস করছেন তার গ্রহণযোগ্য ব্যখ্যাই হল যুক্তি।গ্রহণযোগ্য শব্দটি আপেক্ষিক।আপনার কাছে যা গ্রহণযোগ্য আরেকজনের কাছে তা অগ্রহণযোগ্য হতে পারে, আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য হলেই তা আপনার কাছে যৌক্তিক আর যার কাছে ব্যখ্যাটি গ্রহণযোগ্য নয় তার কাছে অযৌক্তিক।তবে মনে রাখতে হবে যে একই জিনিস যৌক্তিক ও অযৌক্তিক উভয় হতে পারে না।যে বিষয়টি একজনের কাছে যৌক্তিক আর আরেকজনের কাছে অযৌক্তিক, সে বিষয়টি একজন ভাল করে বুঝেছে আর অপরজন বুঝতে পারেনি।
এবার আসি মূল বিষয়ে। মানুষ কি যুক্তির উর্ধ্বে উঠতে পারে?কোন বিবেকবান বুদ্ধিমান মানুষ কখনো যুক্তির বাইরে যেতে পারে না।পাগল ও অবুঝ শিশু ছাড়া কেউ যুক্তির উর্ধ্বে উঠতে পারে না।’কেন?’ প্রশ্নের উত্তরে যুক্তি আসে। আপনি যদি বলেন এ মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছে তাহলে আপনাকে বলতে হবে কেন আপনি বিশ্বাস করেন এ মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছে, আর যদি আপনি বলেন এর কোন স্রষ্টা নেই তাহলেও আপনাকে বলতে হবে আপনি কেন বিশ্বাস করেন এর কোন স্রষ্টা নেই।এ ’কেন?’ প্রশ্নের জবাবই যুক্তি।
কিছু লোক বলে থাকেন যে যুক্তি খোজা ভাল, তবে সব কিছুর যুক্তি খোজা ভাল নয়।আপনি যদি এ বক্তব্য দেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই পরিস্কার করে বলতে হবে যে কোন কোন জিনিসের যুক্তি খোজা ভাল নয় এবং কেন? আপনার এ প্রশ্নের উত্তরটিই হবে যুক্তি। আপনার যুক্তি সঠিক কিনা বেঠিক সেটা আলাদ বিষয়। তবে আপনি যুক্তির বাইরে যেতে পারলেন না।
যুক্তির বিরোধীতা কারা, কেন করে?
কিছু মানুষকে যদি যুক্তি খোজা বন্ধ করানো যায়, তাহলে অনেক সুবিধা।যেমন আমি যদি কোন ধর্মীয় গুরু হয় হই, আর উক্ত ধর্মের নামে যদি আমার রুজি-রোজগার ও যশ-খ্যাতির কোন সুবিধা থাকে অথচ উক্ত ধর্ম সঠিক নয় বা উক্ত ধর্মের এমন কিছু বাণী আছে যাহা সঠিক নয় তবে আমার যশ-খ্যতি ও রুটি-রুজির পক্ষে, সেক্ষেত্রে উক্ত বেঠিক বক্তব্যগুলোর পক্ষে যথার্থ কোন উত্তর আমার কাছে নেই তখন মানুষকে (বিশেষত অনুসারিদেরকে) যুক্তি খোজা বন্ধ করতে পারাটাই সর্বশ্রেষ্ঠ পদ্ধতি।যদি লোকদের ’কেন?’ প্রশ্ন করা থামাতে পারি তাহলে তো বহু কিছু করেই পার পাওয়া যায়।
অতএব, কেউ যদি আপনাকে যুক্তি খুজতে নিষেধ করে তাহলে নিঃসন্দেহে সে বুঝে/না বুঝে আপনাকে চরম বোক/হাদারাম বানাতে চাইছে।
স্রষ্টায় বিশ্বাস: কারা সঠিক?
যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে তাদের কাছে প্রমান বলতে একমাত্র যুক্তি আছে।অপরদিকে যারা স্রষ্টায় অবিশ্বাসী (নাস্তিক) তাদের কাছেও তাদের কথার স্বপক্ষে যুক্তি আছে। কাদের যুক্তি কি ও তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা আলোচনার পূর্বে স্রষ্টার পরিচয় সম্পর্কে আলোচনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
স্রষ্টা ও সৃষ্টি:
১. স্রষ্টা: স্রষ্টার কোন শুরু নেই, শুরু থাকলে তিনি স্রষ্টা নন। কিন্তু শুরু নেই বলা যত সহজ কথাটি বাস্তবে কল্পনা করা বহুগুন কঠিন।যত বিলিয় বছর আগের কথাই বলুন না কেন একটি শুরু তো থাকা মানবীয় জ্ঞান দাবি করে। সুতরাং বিষয়টি বোধগম্য নয়। তবে স্রষ্টা যদি থেকে থাকেন তাহলে তার শুরু আছে কথা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।
সকল সৃষ্টির শুরু আছে এবং থাকতেই হবে। শুরু থাকাটাই সৃষ্টির গুণ।
২. যদি বলা হয় স্রষ্টার জীবন আছে-এ কথাটিও গ্রহণযোগ্য নয়।প্রশ্ন আসে স্রষ্টার জীবন বা জান কে সৃষ্টি করেছে?
সৃষ্টির জীবন আছে যা স্রষ্টা সৃষ্টি করেছে। একটি প্রাণীর মাঝে যতক্ষন তার জান থাকে ততক্ষন জীবন স্পন্দন থাকে। সুতরাং সৃষ্টি জীবনের মুখাপেক্ষি।
৩. স্রষ্টা সর্বশক্তিমান- এ কথাটিও গ্রহণযোগ্য নয়। সর্বোশক্তি বলতে সকল শক্তি বুঝায়। ’সর্ব’ বা ’সকল’ শব্দটি সীমিত কোন কিছুর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি বলেন অসীম শক্তির অধিকারী তাও যৌক্তিক নয়। কারন স্রষ্টাকে কোন শক্তির অধিকারি হতে হয় না। তিনি তো ‘শক্তি’রই স্রষ্টা কর্তা। ’শক্তি’ নিজেই একটি সৃষ্টি। স্রষ্টা তো উহার মুখাপেক্ষি হতে পারেন না।
৪. স্রষ্টা বিনা উদ্দেশ্য কিছুন করেন কি?
স্রষ্টা বিনা উদ্দেশ্য কিছু করেন না এ কথাও যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, আবার উদ্দেশ্য ছাড়া কিছু করেন তাও গ্রহণযোগ্য নয়। সৃষ্টি ’উদ্দেশ্য’র মুখাপেক্ষি, স্রষ্টা নয়। উদ্দেশ্য বলতে কোন লক্ষ্য অর্জন বোঝায়। স্রষ্টার কোন লক্ষ থাকতে পারে না, লক্ষ থাকে সৃষ্টির। যার কোন কিছু প্রয়োজন আছে সেই কিছু অর্জনের জন্য লক্ষ্য নির্ধারন করেন। স্রষ্টা সকল প্রয়োজনের উর্ধ্বে। স্র
আবার স্রষ্টা খেলাচ্ছলে কিছু করেন বললে প্রশ্ন আসে- স্রষ্টা কি বিনোদনের মুখাপেক্ষি?
৫. যদি বলা হয় স্রষ্টার ইচ্ছা হলে অমুক কাজ করেন-প্রশ্ন হল স্রষ্টার কি মন আছে? স্রষ্টার কি ইচ্ছা জাগরিত হয় যেভাবে মানুষের মনে বিভিন্ন ইচ্ছা জাগরিত হয়ে থাকে?মানুষের মনে যখন কোন ইচ্ছা জাগে তখন বলা হয় স্রষ্টা সে ইচ্ছা জাগিয়েছে, কিন্তু স্রষ্টার মনে কে ইচ্ছা জাগায়।যদি বলা হয় স্রষ্টার মনে ইচ্ছা এমনিতেই জাগে কেউ জাগায় না, তাহলে তো এ কথা মানা হবে সৃষ্টিও এমনিতেই হয় কেউ সৃষ্টি করে না।বস্তুত: স্রষ্টার মনে ইচ্ছা জাগে কথাটি স্রষ্টার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
মানুষ নাস্তিক কেন হয়?
নাস্তিকেরা দু’টি প্রধান যুক্তির কারনে নাস্তিক হয়। যুক্তি দু’টি হল:
ক)তারা পৃথিবীতে বিদ্যমান কোন ধর্মেই স্রষ্টা, সৃষ্টির কারন ও মহাবিশ্ব ইত্যাদি সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য,বিজ্ঞোচিত ও যৌক্তিক জবাব ও নির্দেশনা পায়নি
খ)আর স্রষ্টা সম্পর্কে উল্লেখিত প্রশ্নের মত বহু প্রশ্নের কারনে।
আস্কিক,বিশেষত:মুসলমানদের যুক্তি:
ক)আল কুরআনেই স্রষ্টা, সৃষ্টির কারন ও মানুষের পরিণতি সহ মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে।
খ) স্রষ্টা সম্পর্কে উপরোক্ত প্রশ্ন উত্থাপন করলে তাদের জবাব স্রষ্টা সম্পর্কে এত প্রশ্ন করা ঠিক নয়।
বিশ্লেষণ:
মুসলমানগন কুরআনের পক্ষে কথা বলে এর প্রধান কারন তারা মুসলিম বংশে জন্মগ্রহণ করেছে।কুরআন আসলে স্রষ্টার বিধান হওয়ার যোগ্য কিনা তা কোন মুসলমান মাথায়ও আনে না। তারা শুধু পক্ষের লোকদের থেকে কুরআনের পক্ষের গুনগান শুনতে পছন্দ করে, কেউ সমালোচনা করলে তাকে অপছন্দ করে। নিজের ভূল তো সমালোচক তথা যিনি বা যারা ভূলকে খুজে পেয়েছে তাদের থেকে জানার কথা, তাদেরকে শত্রু মনে করলে সত্যে কখনো জানা যায় না।
এবার আসি স্রষ্টার ব্যপারে। আপনি যখন স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তির আশ্রয় নেন যে সবকিছু এমনে এমনে সৃষ্টি হতে পারে না, এত সুশৃঙ্খল সৃষ্টি অটোমেটিক হয়েছে তা বিশ্বাস করা অযৌক্তিক ঠিক তদ্রুপ আপনাকে স্রষ্টা সম্পর্কে বাকি প্রশ্নগুলোরও যৌক্তিক উত্তর দিতে হবে। আপনি প্রশ্ন করা থামিয়ে দিতে পারেন না। তাহলে নাস্তিকেরা আপনার প্রশ্ন- এতসুন্দর সুশৃঙ্খল সৃষ্টি স্রষ্টা ছাড়া অটোমেটিক কিভাবে হতে পারে? থামিয়ে দিতে পারে এ বলে যে এ বিশাল সৃষ্টির কাছে আমরা কিছুই নই; সুতরাং এ প্রশ্ন করা ঠিক নয়।আপনি একটি প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর খুজবেন আর অপর প্রশ্নগুলো যেগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে আপনি বেকায়দায় পড়ে যান সেগুলোর ব্যপারে প্রশ্ন করা থামিয়ে দেয়ার জন্য বলবেন যে ওসব প্রশ্ন করা ঠিক নয় সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
আমার বিশ্বাস:
যেহেতু স্রষ্টা আছে বললে তারও কোন প্রমাণ নেই, আবার নাই বললে তারও কোন ভিত্তি নেই; সুতরাং যে বিষয়ে কোন প্রমান নেই সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ সহকারে কোন কথা বলা গোড়ামিত্ব ও বোকামি ছাড়া কিছু নয়। যে বিষয়ে আপনার প্রমান নেই সে বিষয়ে আপনি আপনার অনুমানের ভিত্তিতে বড়জোর মতামত দিতে পারেন। এ কারনে কেউ যদি আমাকে বলে সে স্রষ্টায় বিশ্বাস করে না তাহলে সেটাকে আমি শুধুমাত্র তার মত হিসাবে গ্রহণ করি। আমার ব্যক্তিগত মত হল- স্রষ্টা বলে কেউ আছেন। তবে স্রষ্টাকে বোঝা সৃষ্টির পক্ষে সম্ভব নয়। আর পৃথিবীর সকল ধর্ম মানব রচিত। সামাজিক কল্যানের কথা বিবেচনা করে কিছু ভাল মানুষ কর্তৃক ধর্মগুলো সৃষ্টি। যেহেতু মানব মস্তিস্ক থেকে ধর্মগুলো তৈরি তাই ভাল উদ্দেশ্য থাকলেও প্রত্যেক ধর্মেই এমন কিছু বিধান রয়েছে যা মানবতার জন্য ক্ষতিকর। যারা ধর্ম বানিয়েছেন তাদের দূরদর্শিতায় ঐ সকল ক্ষতিকর দিকগুলো ধরা পড়েনি। তাদের উদ্দেশ্য ভাল ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:২৬